বেশ কিছু কঠোর নিয়মের মধ্য দিয়ে পর্দা ওঠে কাতার বিশ্বকাপের। এর মধ্যে অন্যতম ছিল পোশাক ও মদ্যপান সংক্রান্ত বিধিনিষেধ। কর্তৃপক্ষের ঘোষণা ছিল নির্দেশনা অমান্য করলে কাতারের আইন অনুযায়ী কারাদণ্ড হতে পারে আইন ভঙ্গকারীদের।
এসব বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না নিজের মতো পোশাকে কাতার স্টেডিয়ামে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন মিস ক্রোয়েশিয়া ইভানা নোল। তার ট্রেডমার্ক ক্রপ টপ ও মিনি স্কার্টে মুগ্ধ করছেন স্টেডিয়ামের দর্শকদের।
আল জানুব স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ৯ টায় জাপানের বিপক্ষে মাঠে নামে ক্রোয়েশিয়া। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইভানা নোল।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বকাপে তার দেশের জার্সির নকশায় তৈরি বিশেষ পোশাকের জন্য সবার দৃষ্টি ছিল তার দিকে।
কাতার স্টেডিয়াম ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ চলাকালীন ইভানা নোল। ছবি: ইনস্টাগ্রামমিস ক্রোয়েশিয়াকে এদিন লাল-সাদা চেকের ক্রপ টপ ও ডেনিম মিনি স্কার্টে দেখা যায় স্টেডিয়াম। তিনি আসন গ্রহণের আগে ভক্তদের সঙ্গে পোজ দিয়েছেন।
জাপানের ভক্তদের সঙ্গেও সেলফি তোলেন ইভানা নোল। ছবি: সংগৃহীতআল জানুব স্টেডিয়ামের বাইরে নোল নিজ দেশের প্রতি তার সমর্থন জানিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।
এ ছাড়া নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া জার্সির আদলে পোশাক পরে কাতারে অবস্থানের বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন নোল।
ডেইলি মেইল বলছে, বিশ্বকাপের সবচেয়ে সেক্সি ফ্যান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে নোলকে। এর আগে তিনি জি-স্ট্রিং পরে কাতারের সৈকতে ঘুরেছেন।
বিশ্বকাপে পোশাকের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম ছিল কাতার কর্তৃপক্ষের। দর্শকদের কাঁধ ঢেকে রাখার ও ছোট স্কার্ট না পড়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
যারা এই নির্দেশ অমান্য করবে তাদের মোটা অংকের জরিমানা এমনকি জেলের সাজাও রয়েছে। কাতার সরকার চাইছে, সমর্থকরাও তাদের দেশের সংস্কৃতি এবং নিয়মকে সম্মান জানাবে।
স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে ইভানা। ছবি: সংগৃহীততাদের সংস্কৃতির সঙ্গে নিজের পোশাকের সংঘর্ষের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে নোল বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম বিশ্বকাপ যদি সেখানে (কাতার) হয়, নিশ্চিতভাবে তারা আমাদের সব কিছুর অনুমতি দেবে, যাতে কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই সব ভক্তদের জন্য এটি আরামদায়ক হয়।
‘আমি নিয়মের কথা শুনে চমকে গিয়েছিলাম। তাদের নিয়মে কাঁধ, হাঁটু, পেট দেখাতে নিষেধ করে। আমার অনুভূতি ছিল, ওহ ঈশ্বর, আমার কাছে এই সমস্ত কিছু ঢেকে রাখার মতো কাপড়ও নেই।’
স্টেডিয়ামের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ইভানা। ছবি: সংগৃহীততিনি আরও বলেন, ‘আমি খুব মেজাজ খারাপ লাগছিল। আমি যদি একজন মুসলিম না হয়েও ইউরোপে হিজাব ও নেকাবকে সম্মান করি, আমি মনে করি তাদেরও আমাদের জীবনযাপন পদ্ধতি, আমাদের ধর্মকে সম্মান করা উচিত এবং আমাকে পোশাক, বিকিনি পরতে দেয়া উচিত।’
‘এখানে পৌঁছানোর পর যখন দেখলাম তারা পোশাক নিয়ে কোনো সমস্যা করছে না তখন আমি অবাক হয়েছি। শুধু সরকারি ভবন ছাড়া কোথাও পোশাক নিয়ে সমস্যা নেই।’
কাতার স্টেডিয়ামে ইভানা। ছবি: সংগৃহীতগ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিয়ে ইভানাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কখনই এমন কিছুতে ভয় পাই না।’