বেশ কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা চলছে এক বিউটি কনটেস্টে অভিনেতা মীর সাব্বিরের করা একটি উক্তি নিয়ে।
এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। বিষয়টি নিয়ে আর বিতর্ক না বাড়ানোর আহ্বান জানালেন তিনি।
এ নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় মীর সাব্বিরকে ট্যাগ করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে সুবর্ণা মুস্তাফা লেখেন, ‘মীর সাব্বির ভুল বলেছেন… একমত। উপস্থাপক এটি পছন্দ করেননি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলেছেন, তার বিশেষাধিকার।
‘মীর সাব্বির তার পেজে ক্ষমা চেয়েছেন, ভালো। আমার এখন প্রশ্ন, মানুষ কেন, বিশেষ করে সহকর্মীরা, এখনও এই সমস্যাটিকে জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছে? যথেষ্ট হয়েছে, দয়া করে এটা শেষ করুন এবং সাব্বির পরের বার সাবধানে শব্দ চয়ন করুন।’
বিবাহিত নারীদের নিয়ে বিউটি কনটেস্ট ‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২২’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে ছিল ১১ নভেম্বর।
সেই আয়োজনের মঞ্চে মীর সাব্বিরের আঞ্চলিক ভাষায় দেয়া একটি উক্তিকে ‘বুলিং’ হিসেবে অভিযোগ তুলেন অনুষ্ঠানের নারী উপস্থাপক ইশরাত পায়েল।
তবে সাব্বিরের দাবি, ছোট একটি বিষয়কে বড় করে দেখা হচ্ছে। বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য থেকে তিনি উক্তিটি করেননি।
ওই বিউটি কনটেস্টের গ্র্যান্ড ফিনালের একটি অংশের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে অনলাইনে। তাতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে মীর সাব্বিরকে মঞ্চে ডেকে নেন উপস্থাপক ইশরাত পায়েল। সেখানে মীর সাব্বিরের সঙ্গে রসিকতাও করেন তিনি।
মীর সাব্বির মঞ্চ ছাড়ার সময় তাকে বরিশালের ভাষায় নাটকের সংলাপ বলতে অনুরোধ করা হয়। সাব্বির বলেন, ‘আমি সংলাপ মুখস্থ রাখতে পারি না।’
এরপর আবারও অনুরোধ করলে মীর সাব্বির বরিশালের ভাষায় উপস্থাপকের উদ্দেশে বলেন, ‘এই মাতারি তুমি এরম উদ্লা গায় দাঁড়াই আছ কিল্লাই?’
বরিশালের ভাষায় মীর সাব্বিরের সংলাপ শুনে হেসে ফেটে পড়েন উপস্থাপকসহ দর্শকরা। মীর সাব্বিরের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘ওহ মাই গড। অনেক ধন্যবাদ।’
এর কদিন পর সেই সংলাপ নিয়েই বুলিংয়ের অভিযোগ তোলেন উপস্থাপক ইশরাত পায়েল।
বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার বিকেলে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসও দেন মীর সাব্বির।
‘এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি’ শিরোনামের দীর্ঘ সেই স্ট্যাটাসের একাংশে মীর সাব্বির লেখেন, ‘উপস্থাপিকা মজার ছলে আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা শুনতে চেয়েছেন। যেহেতু আমি বরিশালের ছেলে। আমি যে কথাটা বলেছিলাম, সেটা উপস্থাপিকা চমৎকার হেসে রিসিভ করেছেন এবং দর্শকরা তখন মজা পেয়েছেন। আমি যেটা বলেছি সেটা তাৎক্ষণিক এবং এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’
এর আগে বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলার প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন মীর সাব্বির। ‘মাতারি’ ও ‘উদ্লা’ শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘মাতারি শব্দের অর্থ নারী। আমাদের অঞ্চলে (বরিশাল) এই শব্দ দিয়ে বিবাহিত/অবিবাহিত সব নারীকেই বোঝায়। এটি একটি প্রচলিত মৌখিক শব্দ, এতে নারীকে হেয় বা তাচ্ছিল্য করার কিছু নেই।
‘আর উদ্লা আমরা নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার করি। অনেকে একে খালি গা বা খোলামেলা অবস্থা হিসেবে মনে করেছেন। তবে আমাদের অঞ্চলে নানান অর্থে উদ্লা শব্দটির ব্যবহার আছে। আমি সেদিন আকর্ষণীয় অর্থে শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমার ইনার ফিলিংস থেকে শব্দটি বলেছি।’