বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘মাতারি’ ও ‘উদ্‌লা’র পক্ষে যে যুক্তি মীর সাব্বিরের

  •    
  • ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:৫১

বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মীর সাব্বির। ‘মাতারি’ ও ‘উদ্‌লা’ শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘মাতারি শব্দের অর্থ নারী। আমাদের অঞ্চলে (বরিশাল) এই শব্দ দিয়ে বিবাহিত/অবিবাহিত সব নারীকেই বোঝায়। এতে নারীকে হেয় বা তাচ্ছিল্য করার কিছু নেই। আর সেদিন আকর্ষণীয় অর্থে উদ্‌লা শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমার ইনার ফিলিংস থেকে শব্দটি বলেছি।’

বিবাহিত নারীদের নিয়ে বিউটি কনটেস্ট ‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২২’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে ছিল গত শুক্রবার। সেই আয়োজনের মঞ্চে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা মীর সাব্বিরের আঞ্চলিক ভাষায় দেয়া একটি উক্তিকে ‘বুলিং’ হিসেবে অভিযোগ তুলেছেন অনুষ্ঠানের নারী উপস্থাপক ইশরাত পায়েল।

তবে সাব্বিরের দাবি, ছোট একটি বিষয়কে বড় করে দেখা হচ্ছে। বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য থেকে তিনি উক্তিটি করেননি।

ওই বিউটি কনটেস্টের গ্র্যান্ড ফিনালের একটি অংশের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে অনলাইনে। তাতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে মীর সাব্বিরকে মঞ্চে ডেকে নেন উপস্থাপক ইশরাত পায়েল। সেখানে মীর সাব্বিরের সঙ্গে রসিকতাও করেন তিনি।

মীর সাব্বির মঞ্চ ছাড়ার সময় তাকে বরিশালের ভাষায় নাটকের সংলাপ বলতে অনুরোধ করা হয়। সাব্বির বলেন, ‘আমি সংলাপ মুখস্থ রাখতে পারি না।’

এরপর আবারও অনুরোধ করলে মীর সাব্বির বরিশালের ভাষায় উপস্থাপকের উদ্দেশে বলেন, ‘এই মাতারি তুমি এরম উদ্‌লা গায় দাঁড়াই আছ কিল্লাই?’

বরিশালের ভাষায় মীর সাব্বিরের সংলাপ শুনে হেসে ফেটে পড়েন উপস্থাপকসহ দর্শকরা। মীর সাব্বিরের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘ওহ মাই গড। অনেক ধন্যবাদ।’

এর কদিন পর সেই সংলাপ নিয়েই বুলিংয়ের অভিযোগ তোলেন উপস্থাপক ইশরাত পায়েল।

এ নিয়ে সোমবার ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন ইশরাত। এতে তিনি বলেন, নারীর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে মীর সাব্বিরকে। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে বুলিং করা হয়েছে, এটা ক্রাইম।

বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে ফেসবুকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন মীর সাব্বির।

স্ট্যাটাস শুরু করেছেন, ‘এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি’ শিরোনামে।

এরপর মীর সাব্বির লেখেন (বাক্য ও বানান অপরিবর্তিত), ‘গত ১১ ই নভেম্বর মিসেস ইউনিভার্সের একটি প্রতিযোগিতায় আমি অতিথি হয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি কথা নিয়ে প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপিকা দুই একটি কথা বলেছেন। মঞ্চে আমার সঙ্গে কথা বলার পর দেখলাম, ওই উপস্থাপিকা তার বরাত দিয়ে দুই একটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এর কারণে অনেক সাংবাদিক আমাকে ফোনও করেছেন। আসলে মূল বিষয়টা ছিল, মানে বলতে পারেন তেমন কিছুই না। একটা ছোট্ট বিষয়কে হঠাৎ করে বড় করার চেষ্টা করা হয়েছে।

‘উপস্থাপিকা মজার ছলে আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা শুনতে চেয়েছেন। যেহেতু আমি বরিশালের ছেলে। আমি যে কথাটা বলেছিলাম, সেটা উপস্থাপিকা চমৎকার হেসে রিসিভ করেছেন এবং দর্শকরা তখন মজা পেয়েছেন। আমি যেটা বলেছি সেটা তাৎক্ষণিক এবং এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’

ওই নারী উপস্থাপক ছোট বোনের মতো উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘কাউকে হেয় করার জন্য কিছু বলি নাই। সেটা নিশ্চয়ই সবাই যারা দেখেছেন তারা বুঝতে পেরেছেন। উপস্থাপিকা আমার ছোট বোনের মত। সে যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে... আমি দুঃখ প্রকাশ করতেই পারি। সেটা নিয়ে এভাবে ফেসবুক কিংবা বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তৃতা দিয়ে ছড়ানোর কিছু নাই। আমাকে বললেই পারত দাদাভাই কিংবা ভাইয়া আপনাকে আমি রেসপেক্ট করি। আপনার কথায় আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি তখন হয়তো বলতাম সরি তুমি কষ্ট পেও না। আমি তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য কথাটা বলিনি। কারণ তুমি আমার শব্দের মানে বুঝতে পারোনি। বিষয়টা শেষ হয়ে যেত।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমি আমার ছোট বোনের আমার ব্যাপারে ভুল বোঝার কারণে দুঃখ প্রকাশ করতেই পারি। অতএব মন খারাপ না করে আমি আশা করছি, সবার মতো আমার এই ছোট বোনটিরও আমার সম্পর্কে ধারণা এবং আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রে (শব্দের মানে না বোঝার কারণে) যত অভিমান আছে, সেটা ভুলে গিয়ে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হবে।’

সবশেষে ভক্ত-অনুরাগীদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘আবারও ধন্যবাদ আমার সব ভক্ত-দর্শকদের। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যেভাবে আমার পাশে সবাই আছেন, আমাকে ভালোবাসেন... আমার শিল্প কর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস যাদের আছে, তারা আমার মাথার তাজ হয়ে থাকবেন আমরণ।’

বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলার প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন মীর সাব্বির। ‘মাতারি’ ও ‘উদ্‌লা’ শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘মাতারি শব্দের অর্থ নারী। আমাদের অঞ্চলে (বরিশাল) এই শব্দ দিয়ে বিবাহিত/অবিবাহিত সব নারীকেই বোঝায়। এটি একটি প্রচলিত মৌখিক শব্দ, এতে নারীকে হেয় বা তাচ্ছিল্য করার কিছু নেই।

'আর উদ্‌লা আমরা নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার করি। অনেকে একে খালি গা বা খোলামেলা অবস্থা হিসেবে মনে করেছেন। তবে আমাদের অঞ্চলে নানান অর্থে উদ্‌লা শব্দটির ব্যবহার আছে। আমি সেদিন আকর্ষণীয় অর্থে শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমার ইনার ফিলিংস থেকে শব্দটি বলেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর