ভারতের আসামের বংশোদ্ভূত বাঙালি দুই কন্যা সহোদরা অন্তরা নন্দী ও অঙ্কিতা নন্দী। ‘কাপ সং’ থেকে ‘ব্যালকনি কনসার্ট’ দিয়ে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বেশ আগেই নেটিজেনদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন ইউটিউব তারকা ‘নন্দী সিস্টার্স’। তাদের গাওয়া প্রায় প্রতিটি গানই হয় ভাইরাল।
সেখান থেকেই প্রথমবারের মতো প্লেব্যাক করে মাতাচ্ছেন অন্তরা। তাও আবার একটি নয়, চারটি ভাষায় একই গান গেছেন তিনি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে তামিল সিনেমা পোনিয়িন সেলভান-ওয়ান। তামিল, তেলেগু, হিন্দি, মালয়ালাম ও কন্নড় ভাষায় মুক্তি পাওয়া সিনেমাটির ‘আলাইকাদল’ শিরোনামের গানটি চারটি ভাষাতে গেয়েছেন অন্তরা।
বক্স অফিসে ঝড় তোলা সিনেমাটি ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী ৪০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে। আর সেই সিনেমাটির এই সঙ্গীত পরিচালনা বিখ্যাত সুরকার এ আর রহমান।
তামিল, তেলেগু, হিন্দি ও কন্নড় ভাষায় অন্তরার গাওয়া গানটি কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে শুনেছেন কয়েক কোটি শ্রোতা।
তবে অন্তরার প্লেব্যাকের শুরুর এই জার্নিটা দীর্ঘ বছরের। ৫ বছর বয়স থেকেই সংগীতের হাতেখড়ি তার। তখন থেকে মঞ্চে গান করলেও প্রথম আলোচনায় আসেন ২০০৯ সালে সারেগামাপা লিল চ্যাম্পসের মাধ্যমে।
কলকাতার নরেন্দ্রপুরে ছোটবেলা কেটেছে অন্তরার। পড়েছেন রুবি পার্ক দিল্লি পাবলিক স্কুলে। এখন পাঁচ বছর হলো রয়েছেন পুণেতে। সেখানে ‘দ্য সিমবায়োসিস সেন্টার অফ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন’ থেকে স্নাতক এবং পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিউজিকে মাস্টার্স করেছেন তিনি।
বাবা-মায়ের প্রবল উৎসাহে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বোন অঙ্কিতাকে নিয়ে ব্যালকনি কনসার্ট করতেন অন্তরা। ইউকুলেলে বাজিয়ে দুই বোনের গাওয়া সেই গানগুলো ছাড়তেন নিজেরদের ইউটিউব চ্যানেলে। সেখানে থেকেই আজ মণি রত্নমের প্যান-ইন্ডিয়ার সিনেমা ‘পোনিয়িন সেলভান’ দিয়ে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হলো অন্তরার।
‘নন্দী সিস্টার্স’-এর দুই বোন অন্তরা নন্দী (বাঁয়ে) ও অঙ্কিতা নন্দী। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে কথা বলেছেন ২৩ বছর বয়সী এই কণ্ঠশিল্পী।
অন্তরা বলেন, ‘ব্যালকনি কনসার্ট থেকে একটা বড় লাভ এটাই হয়েছে, যে মানুষ আমাদের চিনেছে। আমি আর আমার বোন অঙ্কিতা মূলত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগীতি গাইতাম। বিভিন্ন সংস্কৃতির গান শোনে লোকে, কিন্তু দেশের আনাচেকানাচে যা রয়েছে সেগুলোই শোনে না। আমাদের ভারতীয় লোকগীতির ভিডিওগুলো ভাইরাল হচ্ছিল, কিন্তু প্লেব্যাক সিঙ্গার হওয়ার আশা করিনি।
View this post on InstagramA post shared by Antara Nandy (@antara_nandy)
দর্শকদের ভালোবাসা আর স্বপ্নপূরণের এই গল্প নিয়ে আপ্লুত বাঙালি এই কন্যা বলেন, ‘ওস্তাদ রশিদ খাঁ সাহেবের কাছে গান শিখেছি। এ আর রহমান সাহেবের সঙ্গে গান গেয়েছি, সে তো প্রথম স্বপ্নপূরণ। পরেরটাও যে হবে ভাবিনি। ৬ সেপ্টেম্বর ফোন এলো। পোনিয়িন সেলভান-এর জন্য ‘আলাইকাদল’ গানটি মনোনীত হয়েছে।
‘আমি তো বুঝতেই পারছি না কী বলছে! কত সময়ে তো কত ভাষার গান রেকর্ড করে বেরিয়ে এসেছি, তার মধ্যে একটা তামিল গানও ছিল। মাত্র ৪০ মিনিটে রেকর্ড করা, সেটা শুনেই খুশি মণি রত্নমের দল। আর ব্যস্, স্বপ্নপূরণ!’