দেশের বাজারে ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম প্রসারিত হওয়ার পর অনেকে ধারণা করেছিলেন সিনেমার মতো ওটিটি কনটেন্টকেও নিতে হবে সেন্সর ছাড়পত্র। কনটেন্ট নির্মাণ শুরু হওয়ার প্রথম দিকে তৈরি হওয়া কিছু সমালোচনা, কনটেন্ট সরিয়ে নেয়ার ঘটনায় সেই ধারণা তীব্র হয়ে ওঠে।
তবে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ধারণাটি পরিষ্কার করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি জানান, ওটিটি কনটেন্টে সেন্সর লাগবে না, এটি নীতিমালার মাধ্যমে পরিচালিত হওয়াই বাঞ্চনীয়।
স্বাভাভিকভাবে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা প্রদর্শনের জন্য সেন্সর বোর্ড সদস্যরা সিনেমাটি দেখেন এবং সব ঠিক থাকলে তা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের যোগ্য বলে একটি সার্টিফিকেট ইস্যু করেন। সেই নিয়ম ওটিটি কনটেন্টের জন্য প্রযোজ্য হবে না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওটিটি আধুনিক প্ল্যাটফর্ম, এটা আধুনিক পৃথিবীর বাস্তবতা, আমরা এটাকে প্রমোট করতে চাই। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এত বিস্তৃত, এত ব্যপক এবং এত ক্রমবর্ধমান, সেজন্য এটা সেন্সর করা সম্ভব না। সেজন্য এটা একটা নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ওটিটি নিয়ে কাজ করেন, তাদেরকে দিয়েই মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছি, সে কমিটি এটি নিয়ে কাজ করছে। তারা সমস্ত অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করবে। আমরা এমন একটি নীতিমালা করতে চাই, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং একই সঙ্গে আমাদের দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ করবে।’
তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে যে কমিটির কথা জানিয়েছেন, সেই কমিটিতে আছেন সরকারি কর্মকর্তা, বিটিআরসি এর কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধি, ওটিটি ব্যবসার প্রতিনিধি, অভিনেতা তারিক আনাম খান, পিপলু আর খান, অমিতাভ রেজাসহ আরও অনেকে।
অভিনেতা তারিক আনাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী যেমনটা বলেছেন, আমাদের প্রস্তাব ও আলোচনা তেমনটাই ছিল। সেন্সর সার্টিফিকেট ইস্যুর প্রক্রিয়ায় না গিয়ে নীতিমালার মধ্যে থেকে যেন কাজগুলো করা যায়। তবে কিছু বিষয় তো অবশ্যই দেখতে হবে যেমন, আমাদের সংস্কৃতি, স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো যেন বিনষ্ট না হয়।’
কমিটিতে আরও কিছু অংশীজন অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে মনে করেন তারিক আনাম খান। তিনি জানান, শিক্ষকরাও যেন কমিটিতে থাকেন সে ব্যাপারে তারা প্রস্তাব দিয়েছেন।
ওটিটি নীতিমালার একটি খসড়া তৈরি করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেখানে কনটেন্ট বলতে শুধু ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টই নয়, ইউটিউব, ফেসবুকে প্রকাশিত ওডিও-ভিডিওকেও কনটেন্ট-এর আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
নীতিমালাটি চূড়ান্ত হলে কোনো কনটেন্টেরই সেন্সর চাড়পত্র লাগবে না, তবে তার পরিচালিত হবে নীতিমালার মাধ্যমে।