বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাসানের ‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ যেভাবে

  •    
  • ১৩ আগস্ট, ২০২২ ২২:২২

শিল্পী আলী হাসান বলেন, ‘দোকানদারি করার সময় কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলি। সেগুলোই মিলিয়ে লিখতে শুরু করি- ‘যাই করি তাই করি/ব্যবসা-বাণিজ্য তো গোল/চাকরি-বাকরি সে তো গোল/সে তো গোল।’ হা হা হা…। তারপর ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে এই গান তৈরি করলাম।’

‘মানুষ তো মনে করে হুদাহুদি চেতি/আহেন ভাই বহেন ব্যবসার পরিস্থিতি

ব্যবসার যে পরিস্থিতি/মুরগি খুঁজি টিটি- আয় টিটি

বাপ-দাদার আমলের স্মৃতি ধইরা রাখবার চাই/ম্যাগার ক্যামনে ধরুম ভাই

কন তো টুকুরটাকুর সদাই বেইচা কয় ট্যাকা কামাই

কন তো টুকুরটাকুর সদাই বেইচা কয় ট্যাকা কামাই।’

‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ শিরোনামের গানের প্রথম কয়েকটি লাইন। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল এই গান। ফেসবুকে স্ক্রল করলেই চলে আসছে গানটির ভিডিও।

গানটির শিল্পী আলী হাসান। রোববার নিউজবাংলা কথা বলেছে এই র‍্যাপারের সঙ্গে। সেই আলাপচারিতায় উঠে এসেছে গানটি তৈরির গল্পসহ নানা বিষয়।

আলী হাসান বলেন, ‘দশ-বারো বছর আগে গান শুরু করেছি। তবে মাঝে অন্যান্য কাজকর্মের ব্যস্ততায় সেভাবে আর গান করা হয়নি। এর মধ্যে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটা ছেড়েছিলাম। তবে সাউন্ড ও ভিডিওর মান ভালো না থাকায় হিট হয়নি।’

নতুন গানটিতে শ্রোতা-দর্শকদের সাড়ায় অভিভূত আলী হাসান। জানালেন গানটি তৈরির পেছনের গল্প।

তিনি বলেন, ‘যখন দোকানদারি করতাম তখন কাস্টমারের সঙ্গে দুষ্টুমি করে মিলিয়ে বলতাম- ‘দেখেন তো ভাই, মালটা ঠিক আছে না লিক’। হা হা হা…, আমাদের অভ্যাসটাই এই টাইপের। আমার দাদী ছিলেন আগের যুগের মানুষ। তো উনি আবার কথা বলতেন ছন্দ মিলিয়ে। আমিও দাদীর রোগটা পেয়েছি। যাই বলি কথা বলার সময় ছন্দ মিলিয়ে বলি। ছোটবেলা থেকেই দুষ্টুমি করতাম, ঢোল-টোল নিয়ে গান গাইতাম। আস্তে ধীরে র‍্যাপ-হিপহপ জগতে আসা।’

শিল্পী হাসান বলেন, ‘ধীরে ধীরে ডায়ালগ বানানো শুরু করলাম। এই ডায়ালগ দিয়েই তো আমরা গান তৈরি করি। দোকানদারি করার সময় কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলি। সেগুলোই মিলিয়ে লিখতে শুরু করি- ‘যাই করি তাই করি/ব্যবসা-বাণিজ্য তো গোল/চাকরি-বাকরি সে তো গোল/সে তো গোল।’ হা হা হা…। তারপর ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে এই গান তৈরি করলাম। তবে এই গানটা তৈরি করতে অনেকটা সময় লেগেছে।’

দোকানের খবর জানতে চাইলে হাসান বলেন, ‘দোকান তো বিক্রি করে দিয়েছি প্রায় আট মাস হয়েছে। এরপর দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দিলাম। আগে তিন বছর কাতারে ছিলাম। তারপর কিছু ক্যাশট্যাশ নিয়ে দেশে ফিরে বাপের (বাবা) দোকানে ব্যবসা-বাণিজ্যে ইনভেস্ট করলাম। আমার বাপে এই ব্যবসা কইরাই আমাদেরকে বড় করছে। আমাদের হার্ডওয়্যারের দোকান ছিল। বাবার বয়স হয়েছে। এখন ভারী মালপত্র টানতে পারেন না। এইজন্য ব্যবসার হাল আমি ধরেছিলাম।’

র‍্যাপ চর্চার বিষয়ে জানতে চাইলে আলী হাসান বলেন, ‘চর্চা বলতে আমি প্রচুর পরিমানে ডায়ালগ লিখি। আমার দুই-তিনটি ডায়েরি ভরে গেছে। এগুলো থেকে পাঞ্চলাইন নিয়ে সব জোড়া দেই।’

তবে এই গুণ তার দাদীর কাছ থেকেই পেয়েছেন বলে জানালেন আলী হাসান। এ নিয়ে ছন্দ মিলিয়ে বলেন, ‘অনেকে কয় নাহ- জাতের ধারা জীবনের চারা। বংশগত রোগ আরকি হা হা হা…।’

হাসান আলী আরও যোগ করেন, ‘দাদীরে জিজ্ঞাসা করতাম- কী খাইছো? তখন তিনি বলতেন- ভাত আর ডাল, আর তোর বাপের গাল।’

দেশের বাইরে চলে গেলে কীভাবে গান করবেন বা ভবিষ্যতে গান নিয়ে পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে এই র‍্যাপার বলেন, ‘গান তো আমার নেশা, পেশা না। আমি যদি এটা করে ফ্যামিলি চালাতে পারতাম তখন না হয় এর ভেতরে থেকে যেতে পারতাম। আগে আমার কর্ম করতে হবে, সংসার চালাতে হবে।’

মা-বাবা, চার বোন ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার হাসানের। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। তবে যে দাদীর কাছ থেকে র‍্যাপের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন তিনি দু’বছর হলো মারা গেছেন।

হাসান জানান, ‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ গানে তার সঙ্গে যারা কণ্ঠ মিলিয়েছেন তারা সবাই র‍্যাপার। সবাই স্থানীয় এবং নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত।

তার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন- মারুফ আকন্দ, সাদি, আমিন আলী, রাকিব হাসান, মিস্টার রিজান, উদয় মাহমুদ ও মানাম হোসাইন।

এ বিভাগের আরো খবর