মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমা ময়মনসিংহে দেখতে এসে দর্শকের উপস্থিতি দেখে উচ্ছ্বসিত সিনেমার অভিনয়শিল্পী নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ার ও ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানের গায়ক এরফান মৃধা শিবলু।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের ‘ছায়াবাণী’ সিনেমা হলে আসেন তারা। এ সময় সিনেমার নায়িকা নাজিফা তুষি বলেন, ‘সিনেমাটি করার আগে অনেক লম্বা সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমিসহ সব অভিনয়শিল্পী সেরা কাজটা করার চেষ্টা করেছি। এখনকার অনুভূতিটা আরও অনেক মজার। আমরা ঢাকার বাইরে সিনেমা হলগুলোতে যাচ্ছি। সব জায়গায় ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছায়াবাণী সিনেমা হলের কক্ষে বসে থাকার সময় একজন আন্টি আমাকে বলেছেন, জীবনের প্রথম তিনি হলে সিনেমা দেখতে এসেছেন। আরেকজন আন্টি বলেছেন, চিকিৎসকের কাছে এসে একফাঁকে আমাদের সিনেমা দেখতে এসেছেন। কথাগুলো শুনে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ আগে যারা সিনেমা দেখতে হলে আসেননি, এখন তারাও আসছেন।’
শুটিংয়ে কোনো মজার স্মৃতি আছে কি না জানতে চাইলে তুষি বলেন, ‘শুটিংয়ে অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে। আমি শুটিংয়ের সময় ১০টা করে ডিম খেতাম৷ তখন সবাই হাসাহাসি করত।’
সুমন আনোয়ার বলেন, ‘সিনেমা রিলিজের পর থেকে আমরা যেসব হলে ভিজিট করেছি তার মধ্যে সিনেপ্লেক্স ছাড়া অন্যগুলোর অবস্থা খুবই করুন। সেখানে এক দর্শকের জন্য দুই ঘণ্টাব্যাপী সিনেমা উপভোগ করা খুবই কষ্টকর। স্পেশালি ‘হাওয়া’ সিনেমাটি লাইট, সাউন্ড সব কিছু মিলিয়ে এটার কালার, টোন, গল্প, আবহ সংগীত উপভোগ করার জন্য সিনেপ্লেক্স এপ্রোপ্রিয়েট জায়গা। তার পরও আমাদের বাংলাদেশের সব জায়গায় সিনেপ্লেক্স নেই। তবুও যদি এ রকম সিনেমা নির্মাণ হয়, তাহলে হলে দর্শক আসবেই।’
হলে এসেই ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গান গেয়ে দর্শক মাতান কণ্ঠশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী এরফান মৃধা শিবলু। এ সময় তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে সুর ধরেন নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ারসহ হলভর্তি দর্শক।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানেই যাই সেখানেই মানুষের মুখে মুখে এ গান শুনতে পাই। এ গানটা খুব ভালো করে কম্পোজ করেছে মিঠুন চাকড়া ও ইমন চৌধুরী। আরেকটি সিনেমার কাজ আমরা শুরু করব৷ ওইটারও ইতিমধ্যে প্রি-প্রোডাকশন শুরু হয়েছে। আশা করছি, হাওয়া চলচ্চিত্র যেমন মানুষের ভালো লেগেছে, পরবর্তী সিনেমাও ভালো লাগবে।’
‘হাওয়া’ সিনেমা দেখার পর সাদেক মিয়া নামের এক দর্শক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবার অভিনয়ই ভালো লেগেছে। তবে চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষির অভিনয় ছিল দুর্দান্ত। সাদা সাদা কালা কালা গানে আকৃষ্ট হয়েই সিনেমা হলে এসেছিলাম।’
লাইলি আক্তার নামের আরেক দর্শক বলেন, ‘আমি এই প্রথম হলে সিনেমা দেখতে এসেছি। সিনেমা ভালো হয়েছে। এ রকম মানসম্মত সিনেমা নির্মাণ হলে আমাদের মতো অন্য দর্শকও হলে ফিরবে।’
হলের ম্যানেজার মো. শহর উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ২৯ তারিখ থেকে প্রতিদিন পাঁচটি করে শো চলছে। ভেবেছিলাম, ধীরে ধীরে হয়তো দর্শক কমে আসবে, কিন্তু না, এখন দর্শক আরও বাড়ছে। প্রতিদিন হাউসফুল যাচ্ছে সিনেমাটি।’
গত ২৯ জুলাই দেশের ২৩টি সিনেমা হলে মুক্তি পায় ‘হাওয়া’। দ্বিতীয় সপ্তাহে সিনেমাটি প্রদর্শিত হচ্ছে ৪১ প্রেক্ষাগৃহে।