বাংলা চলচ্চিত্রে স্বর্ণালি এক অধ্যায়ে জন্ম নেয়া অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর জন্মদিন আজ। বেঁচে থাকলে মঙ্গলবার ৭২ বছর বয়স পূর্ণ হতো তার।
বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত এ অভিনেত্রীর জন্মদিন পালন করল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। এদিন রাত ৮টার দিকে এফডিসিতে সমিতির কার্যালয়ে কেক কাটা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য চিত্রনায়ক অমিত হাসানসহ অনেকে।
কেক কাটার আগে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির রাজ্জাক-কবরী বড় ব্যাপার, কত বড় ব্যাপার সেটা আমরা বলে বোঝাতে পারব না। কাকতলীয় ব্যাপার হলো, আমি যখন ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিলাম তখন রাজ্জাক ভাইয়ের জন্মদিন ছিল, আর আমরা এই কমিটিতে আসার পরে কবরী আপার জন্মদিন পালন করছি। লিজেন্ট এই দুজনের দায়িত্বটা কীভাবে যেন আমার এবং আমাদের এই কমিটির ওপর এসে পড়ল।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আজকে তার জন্মদিন, তবুও মনে পড়ছে তিনি আমাদের মাঝে নেই। এটাই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে। সে জন্য আমি এবং আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে দোয়া করছি। আপনারা যারা দেখছেন তারাও দোয়া করবেন; তাকে যেন সৃষ্টিকর্তা কবুল করেন।’
সাইমন সাদিক বলেন, ‘আজকে আমাদের অনেক শ্রদ্ধেয় এবং সবার প্রিয় অভিনেত্রী কবরী ম্যাডামের জন্মদিন। তিনি আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু রয়ে গেছে তার ভালো ভালো কাজ। তিনি আমাদের খুব স্নেহ করতেন। যদিও তার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়নি, কয়েকবার দেখা হয়েছে; স্নেহভরে জিজ্ঞেস করতেন কেমন আছো? আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন।’
স্মৃতিচারণা করে অমিত হাসান বলেন, ‘আমি যখন প্রথম ছবি শুরু করতে যাই তখন আলমগীর ভাই-কবরী ম্যাডাম তারা ছিলেন ছবিতে। শুরুতেই একই ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তখন থেকেই আমাকে ছোট ভাই হিসেবে যে আদরটা করত, অভিনয় শেখার জন্য যে উপদেশ দিত এবং শেষ পর্যন্ত তা আমি পেয়েছি। আমার সঙ্গে তার তেমন বেশি ছবি ছিল না, এরপরও তার যতটুকু সহযোগিতা পেয়েছি উপদেশ পেয়েছি তা ভোলার নয়।’
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন কবরী। ষাট ও সত্তরের দশকের বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা তিনি।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের সুতরাং দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। ১৯৬৫ সালে অভিনয় করেন জলছবি ও বাহানায়; ১৯৬৮ সালে সাত ভাই চম্পা, আবির্ভাব, বাঁশরি, যে আগুনে পুড়ি; ১৯৭০ সালে দীপ নেভে নাই, দর্পচূর্ণ, ক খ গ ঘ ঙ, বিনিময় সিনেমাগুলোতে।
১৯৭৫ সালে সুজন সখী সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছান। জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে আগন্তুক, নীল আকাশের নিচে, ময়নামতি, সারেং বৌ, দেবদাস, হীরামন, চোরাবালি, পারুলের সংসার।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কবরী গত বছর ১৭ এপ্রিল মারা যান।