ঈদে সিনেমা মুক্তি পেতে যাচ্ছে দিন- দ্য ডে, পরান ও সাইকো। সিনেমা তিনটির সংশ্লিষ্টরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রচার নিয়ে। সেই প্রচারের অংশ হিসেবে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে গিয়েছিলেন দিন- দ্য ডে সিনেমার প্রধান দুই অভিনয়শিল্পী অনন্ত-বর্ষা।
সেখানে কথার এক পর্যায়ে অনন্ত বলেন, ‘সমালোচনা যদি আমার সামনে কেউ করে; আর যদি আমার সমানে চোখে পরে; ওকে তো আমি কান ধরে উঠাব বসাব।’
এখানে ‘ওকে’ বলতে অনন্ত জলিল পরিচালক অনন্য মামুনকে বুঝিয়েছেন।
‘বাজেট শত কোটি হলেই ভালো সিনেমা বা ভালো গল্পের সিনেমা হয় না’- এমন সমালোচনা, কোন সিনেমা কত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে, এসব নিয়ে কথা হচ্ছিল অনুষ্ঠানে। সে সময় অনন্য মামুনের প্রসঙ্গ তোলেন বর্ষা। তিনি বলেন, ‘সাইকো সিনেমার যে ডিরেক্টর আছে অনন্য মামুন; তাকে কে ডিরেক্টর বানিয়েছে? অনন্ত জলিল তাকে ডিরেক্টর বানিয়েছে।’
বর্ষার কথা কেড়ে নিয়ে অনন্ত বলেন, ‘অনন্য মামুনকে ডিরেক্টর আমি বানিয়েছি। আমার টাকা দিয়ে ওর ডিরেক্টারের ফি-টা পর্যন্ত আমি দিছি, ১ লাখ ৬ হাজার টাকা।’
অনন্তর বক্তব্যের পর নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পাল্টা বক্তব্য দিয়েছেন অনন্য মামুন। তিনি ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন। তার মতে, চুপ থাকা মানে মিথ্যাকে অন্যায় হিসেবে মেনে নেয়া।
অনন্য মামুন লেখেন, “দ্য স্পিড সিনেমার সব প্রোস্ট প্রোডাকশনের কাজ আমি চেন্নাই থেকে করে নিয়ে আসি। অবশ্যই তার জন্য অনন্ত ভাই আমাকে সম্মানি দিয়েছেন। দ্য স্পিড সিনেমার পরে অনন্ত ভাই বললেন, ‘মামুন আপনি এত কিছু পারেন, এবারের সিনেমাটা আপনি বানান।’ সিনেমার মানুষ হিসেবে এটা আমার স্বপ্ন ছিল, সেটা পুরণ হল। আমাকে ১ লাখ টাকা সাইনং মানি দিলেন; সম্পূর্ণ সিনেমার জন্য ৫ লাখ টাকা। সত্যি একজন নতুন পরিচালক হিসেবে এটা অনেক টাকা। আমি পরিচালক সমিতিতে সেখান থেকে ৫৬ হাজার ফি জমা দিয়ে সদস্য পদ নিলাম। এখন আপনারা বলেন তো টাকাটা কার, আমার নাকি অনন্ত ভাইয়ের?’
অনন্তর সিনেমায় প্রথম পরিচালক হিসেবে সুযোগ দেয়ার জন্য অনন্য মামুন সবসময় অনন্তর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবেন বলে জানান অনন্য মামুন।
লেখাটিতে তিনি আরও জানিয়েছেন, অনন্তর সঙ্গে তার পরিচয় ২০১০ সালে। তিনি লেখেন, ‘অনন্ত ভাইয়ের সিনেমার খরচ তার অফিসের লোক দেখেন। পরিচালক বা অন্য কারও হাতে টাকা দেয়া হয় না। মালয়েশিয়া সিনেমার কাজে তার লোক ২৩ লাখ টাকা বেশি দিয়ে আসে, আমি পরে হিসাব বের করে তাকে টাকাটা ব্যাক করে দেই। সেদিন উনি বলেছিলেন, ‘আপনি আমার ছোট ভাই’।
অনন্ত-বর্ষার সাংসারিক সমস্যা এবং অনন্তর সঙ্গে অনন্যর সমস্যা শুরুর কথাও লিখেছেন অনন্য মামুন। তিনি লেখেন, ‘আমার সঙ্গে প্রথম ঝামেলা শুরু হয় মুম্বাইয়ের হিরোইন স্নেহা উল্লালকে নেয়ার পর থেকে। অনন্ত ভাইয়ের সঙ্গে বর্ষা ম্যাডামের সম্পর্কও খারাপ যাচ্ছিল। অনন্ত ভাই বাইরের হিরোইনকে নিয়ে কাজ করবে, বর্ষা করতে দেবে না। ফাইনালি তাদের সম্পর্ক ঠিক হল, আমি ভিলেন হয়ে গেলাম।
অনন্য মামুন জানান, যখন কথায় কথায় একদিন অনন্ত তার বাবা-মাকে জড়িয়ে একটা গালি দেয়, ওই দিন থেকে অনন্য চলে আসেন অনন্তর কাছ থেকে।
অনন্য মামুন লেখেন, ‘আপনার পাশের লোকজন টাকার জন্য আপনাকে হুজুর হুজুর করতে পারে, আমি না। আপনার ব্যক্তিগত জীবনের গল্পগুলো না বলি, কারণ আমি আপনাকে সম্মান করি। মানুষকে সম্মান করা পারিবারিক শিক্ষা। পরিশেষে একটা কথাই বলি, এবার ঈদ তিনটা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে সবগুলোই সিনেমা। কোনটা ভালো কোনটা খারাপ, এটা বলার জন্য পাবলিক আছে।’