বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কলসি, ড্রাম, পাটাতন বাজিয়ে গানটি করেছি: ইমন চৌধুরী

  •    
  • ৮ জুলাই, ২০২২ ১৯:০৯

গভীর সমুদ্রে নৌকায় যারা থাকে, তাদের কাছে তো কোনো বাদ্যযন্ত্র থাকে না। এই প্রশ্ন থেকেই চ্যালেঞ্জের শুরু। ইমন জানান, পরিচালক সুমন তার কাছ থেকে এমন একটা সংগীতায়োজন চেয়েছিলেন, যেটা শুনে মনে হবে না যে এটা ওই জায়গার বাইরের কোনো গান।

‘পিরিত ভালো গলার মালা

পরলে কী আর হয়

যারে ভালো লাগে আমার

দেখলে তারে চোখে নেশা হয়…’

এটি ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানের কয়েকটি লাইন। গানে যেমন আছে ভালোবাসার নেশার কথা, তেমনি গানটির সুরেও নেশা আছে। একবার শুনলে গানটি আরেকবার শুনতে ইচ্ছে হতে পারে শ্রোতাদের। গুনগুন করে গেয়ে ওঠারও সম্ভাবনা প্রবল।

গানটির সংগীতায়োজন করেছেন ইমন চৌধুরী। তার মতে, ‘এ হলো সুরের মায়া।’ তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ সুরের ঢং আমাদের পরিচিত, এটা আমাদের মাটির সুরের ঢং, তাই হয়তো এত মায়া সুরটিতে।’

হাসিম মাহমুদের কথা ও সুরের ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি ব্যবহার করা হয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত হাওয়া সিনেমায়। গানটির সংগীত সৃষ্টি ও চিত্রায়ণের একটি গল্প আছে। সেই গল্প শোনালেন ইমন চৌধুরী।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই গানটি আমরা করছি দুই বছর ধরে। সবার প্রচেষ্টায় গানটি হয়েছে। সুমন ভাই (পরিচালক), মিথুন চাকরা (পারকেশনিস্ট) এর নাম বিশেষ করে বলতে হয়।’

গানটি একটি পার্টি সং। গানের ভিডিওতেও তা স্পষ্ট। গানে অংশ নেয়া অভিনয়শিল্পীদের টুকরো টুকরো উদযাপনের চিত্র সেটা প্রমাণ করে।

গানটির প্রেক্ষাপট জানিয়ে ইমন বলেন, ‘যখন গভীর সমুদ্রে কোনো নৌকায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রয়োজনমতো মাছ উঠে যায়, তখন তারা পাড়ে ফেরার প্রস্তুতি নেয় এবং তাদের আশপাশে অন্য যে নৌকাগুলো থাকে তাদের ডাকে। ফিরে যেতে চাওয়া নৌকায় যে খাবার বেচে যায়, সেই খাবার তারা অন্য নৌকার মানুষদের সঙ্গে ভাগ করে নেয় আর আনন্দ করে। এটা সেই সময়ের গান।’

গভীর সমুদ্রে নৌকায় যারা থাকে, তাদের কাছে তো কোনো বাদ্যযন্ত্র থাকে না। এই প্রশ্ন থেকেই চ্যালেঞ্জের শুরু। ইমন জানান, পরিচালক সুমন তার কাছ থেকে এমন একটা সংগীতায়োজন চেয়েছিলেন, যেটা শুনে মনে হবে না যে এটা ওই জায়গার বাইরের কোনো গান।

চ্যালেঞ্জটি নিলেন ইমন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেখানে বাদ্যযন্ত্র থাকে না সেখানে মানুষ গান করার সময় হাতের কাছে যা পায় তাই দিয়ে সুর তোলার চেষ্টা করে। এই গানটির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। নৌকার কিছু মানুষ, তারা তাদের ব্যবহার করা জিনিস দিয়ে সুর তোলেন। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সংগীতায়োজনেও আমার ওইসব জিনিস দিয়েই সংগীত তৈরি করব।

‘ভিডিওতে দর্শকরা নীল রঙের ড্রাম দেখেছেন, আমরা ওইরকম একটি ড্রামই বাজিয়েছি গানটির সুর তুলতে। গানে এক শিল্পীর হাতে যে কলসিটা দেখা গেছে, ওই রকম একটি কলসিই বাজিয়েছি আমরা। এমনকি আমরা নৌকার পাটাতন বানিয়েছি, সেটাও বাজিয়েছি। আর এগুলো সব বাজিয়েছেন মিথুন চাকরা। তাই তার কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নাই।’

ইমন আরও বলেন, ‘আমাদের তো এভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আগে ছিল না। তাই চ্যালেঞ্জটা ছিল বেশি। আমরা শেকড়ের গান করতে চেয়েছি, নিজেদের গান করতে চেয়েছি, আবার এটাও মাথায় রেখেছি যে কলসি, ড্রাম, পাটাতন দিয়ে মিউজিক করলেও যেন সেটা মানহীন কোনো মিউজিক না হয়। আমরা শত শত টেক নিয়েছি। প্রেক্ষাগৃহে যখন এই সাউন্ড শ্রোতারা শুনবে, তখন আরও ভালো বুঝবে আশা করি। এমন একটি কাজ করার সাহস, পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়ার জন্য সুমন ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

গানটি গেয়েছেন আরফান মৃধা শিবলু। ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটির ভিডিওতে যার ঠোঁটে গানটি শুরু হয় তিনিই শিবলু। নিজের ঠোঁটে নিজেই কণ্ঠ দিয়েছেন এ শিল্পী।

গানটি নিয়ে নিজের কিছু কথা ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন।

তিনি লিখেছেন, ‘এই গানটির গীতিকার ও সুরকার হাশিম মাহমুদ। আমি যখন চারুকলায় পড়তাম, তখন অনেক অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনা আর মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল এবং তারা বেশির ভাগই গানের মানুষ ছিল। সেই সময়ের অনেকের গানই এখন খুব জনপ্রিয়। কিন্তু আমার কাছে হাশিম ভাইয়ের গান ছিল ভিন্ন কিছু। আমি যখন হাওয়ার কাজ শুরু করব, তখনই ঠিক করেছিলাম সাদা সাদা কালা কালা গানটা সিনেমাতে রাখতে চাই। কিন্তু হাশিম ভাইকে আমার দীর্ঘদিন ধরে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে জানতে পারি তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হাশিম ভাইকে দিয়েই গানটি গাওয়াতে পারলে সব থেকে ভালো হতো। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি তার অসুস্থতার কারণে। এই গানটি আরফান মৃধা শিবলু গেয়েছে। শিবলু বহু বছর ধরে হাশিম ভাইয়ের সঙ্গে এই গানগুলো গেয়ে আসছে। তাই ওই গাইল।’

এ বিভাগের আরো খবর