যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনোদন ম্যাগাজিন ভ্যারাইটিতে শুক্রবার প্রকাশিত একটি খবর নিয়ে বেশ আলোচনা দেশের বিনোদন জগতে। সে খবরে জানানো হয়েছে হিন্দি ভাষার একটি সিনেমা, নাম ইন দ্য রিং-এ অভিনয় করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অভিনেতা সিয়াম আহমেদ।
খবরটি প্রকাশের পর থেকেই নানা প্রশ্ন জাগছে দর্শকদের মনে। সিয়াম কীভাবে যুক্ত হলেন সিনেমাটিতে? কেমন ধরনের সিনেমা হতে যাচ্ছে এটি? সিয়ামের চরিত্র কেমন?
এমন নানা বিষয় নিয়ে সিয়ামের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। শুক্রবার রাতে মোবাইলে কথা হয় সিয়ামের।
‘হিন্দি ভাষার সিনেমা’, ‘হিন্দি সিনেমা’, ‘বলিউডের সিনেমা’ নানাভাবে ইন দ্য রিং সিনেমাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে দেশের সংবাদমাধ্যমে। বিষয়টি পরিষ্কার করবেন?
এটি একটি আমেরিকান সিনেমা। এর ভাষা হিন্দি। কারণ ভারতের একটি জায়গার কিছু মানুষের গল্প।
এটাকে নেটফ্লিক্সের সিনেমাও বলেছেন কেউ কেউ।
এটা প্রযোজক ভালো বলতে পারবেন, কারণ এর সেলিং পয়েন্ট তো ওনারা নির্ধারণ করবেন। এটি থিয়েটার রিলিজের জন্যই বানানো। থিয়েটার এবং ফেস্টিভ্যালের জন্য। পরবর্তী সময়ে তো নেটফ্লিক্সেও প্রদর্শনের সুযোগ তো থাকতেই পারে। লেট সি ফিউচারে কী আছে।
এই প্রজেক্টে আপনার যুক্ত হওয়া কীভাবে?
ইন্ডিয়ায় আমার একটা প্রজেক্টের কাজ চলছিল। ওই প্রজেক্টের এডিটিং টেবিলে আমার কাজ দেখেন সংশ্লিষ্টরা। তারপর ওই প্রজেক্টের লাইন প্রডিউসারের কাছ থেকে তারা আমার নম্বর সংগ্রহ করেন।
এটা কোন সময়ের কথা বলছেন?
চার মাস আগের কথা এটা।
এডিটিং টেবিলে যে প্রজেক্টের কাজ দেখে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলো, সেই প্রজেক্টের নাম কি বলা যাবে?
সেটা এখনই না বলি।
ওই প্রজেক্টের কথা কি আমরা এখনও জানি না?
হয়তো জানেন, হয়তো জানেন না। তবে ওই ব্যাপারে ডিটেইলে না যাই।
ঠিক আছে। আপনি প্রজেক্টে যুক্ত হওয়ার কথা বলছিলেন…
হ্যাঁ, লাইন প্রডিউসারের কাছ থেকে আমার নম্বর নেয়ার পর আমাকে জানানো হলো যে সিনেমাটির আমেরিকান সাইডের যিনি প্রযোজক এবং পরিচালকের সঙ্গে অনলাইনে কনফারেন্স বা মিটিংয়ের জন্য সময় দিতে পারব কি না।
পরে আমি তাদের সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত হই এবং তারা জানান যে আমি আগ্রহী কি না, আমি অডিশনের জন্য সময় দিতে পারব কি না এবং আমার একটা অডিশনও হয়।
এবং এগুলো খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে, তাই না?
এগুলো খুবই তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে। ক্যারেক্টারটা কেমন, তার চেয়ে বেশি ওনারা দেখতে চাচ্ছেন যে আমি ক্যারেক্টারের সঙ্গে মানানসই হব কি না।
তিন মাস আগে ওনারা আমাকে জানান যে, চরিত্রটির জন্য ওনারা আমাকে পছন্দ করেছেন এবং আমার শিডিউল নিয়ে কথা হয় এবং আমরা বছরের শেষে একটা ডেট লক করতে পেরেছি।
চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর আসলে কী করতে হয়। মানে স্ক্রিপ্ট রিডিং বা রিহার্সেল কী করতে হচ্ছে, নাকি করবেন?
আমরা অলরেডি এগুলো করেছি। আমরা ক্যারেক্টার ডিটেইলিং নিয়ে কথা বলেছি, ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কথা বলা হয়েছে। এখন আমার টিম মেম্বারদের অনেকেই কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আছেন। তারা সেখানে ডিস্ট্রিবিউশনসহ আরও কিছু বিষয় এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। আর আমি এখন ব্রেকে আছি।
ইন দ্য রিং সিনেমায় আপনার চরিত্র বা গল্প নিয়ে আপনি যতটুকু বলতে অনুমতিপ্রাপ্ত, ততটুকু যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন।
আমি শুধু আমার চরিত্রের নামটাই বলতে পারব। আমার চরিত্রের নাম রওশান। এই রওশান মানে আলোকিত।
পুরো সিনেমার শুটিং কি ভারতেই হবে?
আপাতত যেটুকু জানি, পুরোটা খিদিরপুরে হওয়ার কথা।
আরেকটা বিষয় জানতে চাই। এটা তো গ্লোবাল প্রজেক্ট বলছেন। তো অনেকের ধারণা এমনকি আমাদেরও, এসব কাজে শিল্পী সম্মানী বেশ ভালো। আসলেই কি তাই?
এক নম্বর, এগুলো ভ্যারি করে। আমার বা একজন শিল্পীর নেগোসিয়েশনটা কোথায় দাঁড়াবে। তবে সম্মানীটা সব সময় মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না।
আমি একজন প্রফেশনাল শিল্পী হিসেবেই কাজ করছি। অভিনয় কিন্তু এখন আমার পেশা। সেই জায়গা থেকে অবশ্যই তারা আমাকে সম্মানিত করার চেষ্টা করবেন।
সর্বোপরি কাজটায় যুক্ত হতে পেরে কেমন লাগছে?
গল্পটা পছন্দ হওয়াটা হচ্ছে প্রথম প্রায়োরিটি এবং দ্বিতীয় প্রায়োরিটি হলো গল্পে আমার কিছু করার আছে নাকি। আমি দেখেছি যে গল্পে আমার কিছু করার আছে। তখন সেখানে অনেক কিছু করা যায়, মানে এক্সপ্রেস করা যায়। তো আমার মনে হয় সেই জায়গাটা এ চরিত্রটি আমাকে দিচ্ছে। এখন আমি যদি ঠিকমতো পারফর্ম করতে পারি, তাহলে আমাদের সবার জন্যই একটা প্লাস হবে।
আপনার অভিনীত পাপ পুণ্য সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আপনি প্রেক্ষাগৃহে ছিলেনও। দর্শকের প্রতিক্রিয়া কেমন?
আমরা শুক্রবার সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টারে ছিলাম। আমার কাছে দর্শক সমাগমের পাশাপাশি রিঅ্যাকশনও জরুরি। অর্থাৎ সব সময় যে অনেক দর্শক হতে হবে এমন না। যে কয়জন দেখছেন তাদের ভালো লাগছে কি না সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে সিনেমাটি দেখে ভালো লাগার কথা ছড়িয়ে যাবে এবং ধীরে ধীরে অন্য দর্শকরাও দেখতে আসবেন।
আমি যেটা দেখলাম যে যারা দেখছেন, তাদের সিনেমাটা ভালো লাগছে এবং অনেকজনের একেক রকম কারণে ভালো লাগছে। এটা আমার প্রাপ্তি।
ঈদে আমার অভিনীত পিওর মাসালা একটা সিনেমা দেখেছি। সেখান থেকে ভালো ফিডব্যাক পেয়েছি। এখন পাপ পুণ্য চলছে। এখানে আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষের মতো করে অভিনয় করেছি।
এখন দুটি সিনেমাই যদি দর্শকের ভালো লাগে, সেটি আমার, আমাদের খুবই ভালো একটা ইঙ্গিত।