নির্মাতা হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছেন নুহাশ হুমায়ূন। স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা, মিউজিক ভিডিও, বিজ্ঞাপন নির্মাণ করছেন তিনি। সম্প্রতি হরর সিরিজ পেট কাটা মূর্ধন্য ষ নামের একটি ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন নুহাশ।
চারটি পর্বের তিনটি এখন দেখা যাচ্ছে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম চরকিতে। তিন নম্বর পর্ব প্রকাশের রাতে সবাইকে নিয়ে একটি আয়োজন করে চরকি কর্তৃপক্ষ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পেট কাটা মূর্ধন্য ষ সংশ্লিষ্ট অধিকাংশই।
ধ্বনিটি মূর্ধন্য ষ হলেও লোকমুখে এটি পেট কাটা ষ নামে পরিচিত হয়ে আসছে। তেমন লোকমুখে ছড়িয়ে থাকা কিছু ভয়ের গল্প নিয়ে সিরিজটি নির্মাণ করেছেন নুহাশ।
হরর ঘরানার কনটেন্ট নিয়ে নিউজবাংলাকে নুহাশ হুমায়ূন বলেন, ‘বাংলা ভূতের গল্প বিদেশি ভূতের গল্প থেকে অনেক আলাদা। আমি নির্মাণ করতে চেয়েছি সাইকোলজিক্যাল হরর, অর্থাৎ মানসিকতার মধ্যে ভয় তৈরি করা বা যে ভয়টা ইমিডিয়েটলি থাকে না, কিন্তু পরে ঘুরঘুর করে। হঠাৎ করে লাফ দিয়ে এসে একটা ভূত ভয় দেখাবে, সে ধরনের কনটেন্ট আমি বানাচ্ছি না। আর পেট কাটা ষ-এ তো আরও না।’
নুহাশের মতে সুপারন্যাচারাল গল্প বলার জন্য টেকনিক্যাল বিষয় যেমন লাইট, এডিটিং, মিউজিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, সারদ, হারমোনিয়াম, মন্দিরা দিয়ে ভৌতিক পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টাটা ছিল অনেকগুলো এক্সপেরিমেন্টের একটি।
দর্শকদের ভালো সাড়া নুহাশকে হরর জনরা নিয়ে সিনেমা নির্মাণের উৎসাহ দিচ্ছে।
‘পেট কাটা ষ’ সংশ্লিষ্টরা। ছবি: চরকি
নিউজবাংলাকে নুহাশ বলেন, ‘আমার খুব ভালো একটি এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে। আমাদের অবজারভেশন বলছে সুপারন্যাচারাল বিষয় নিয়ে দর্শকের একটা ক্ষুধা আছে। আগামীতে ফিচারিস্টিকভাবে এ ধরনের গল্প বলতে চাই।’
আয়োজনে সিরিজটির অভিনয়শিল্পীরা নুহাশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অনেক পুরোনো ও নতুন মুখ আছে সিরিজটিতে। তাদের মধ্যে নতুনদের দাবি, নুহাশ হুমায়ূন পরিচালনায় ছিলেন বলেই তারা কাজটি করতে রাজি হয়েছেন। এটা কি কোনো চাপ তৈরি করে?
নুহাশ বলেন, ‘আমি যে ধরনের কাজগুলো করছি, সেগুলো করতে আমার একটা চাপ থাকে। একটু প্রেসার থাকা দরকার, একটু প্রেসার থাকলে খারাপ না।’
নুহাশের প্রথম সিনেমা মুভিং বাংলাদেশ। সিনেমাটি পেয়েছে দেশের বাইরের ফান্ড। চলতি বছর থেকে শুটিংও শুরু হওয়ার কথা। নুহাশ জানান, শুটিংয়ের কাজ শুরু হবে শিগগিরই।
চরকির আয়োজনে পেট কাটা মূর্ধন্য ষ সিরিজের স্পনসররা উপস্থিত ছিলেন। তারাও বলেছেন, নুহাশের কারণেই তারা স্পনসর করতে আগ্রহী হয়েছেন।
যে পরিচালক এত দ্রুত আস্থা অর্জন করে ফেলেছেন, তার তো প্রযোজক পাওয়াটাও সহজ। তাহলে দেশের প্রযোজকসহ মুভিং বাংলাদেশ সিনেমাটি কেন শেষ করছেন না নুহাশ?
বললেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল সার্কিট সম্পর্কে আমার জানা খুব জরুরি। তাইওয়ান থেকে যে ফান্ডটা পেয়েছি, সেটা আগে কিন্তু কেউ পায়নি। এই ফান্ড পাওয়ার মাধ্যমে একটা পথ তৈরি হলো।’
নুহাশ এও বলেন, ‘আমি অবশ্যই দেশের বিনিয়োগ নিতে চাই এবং সেটা আমার জন্য গর্বের ব্যাপার। তবে স্পনসরের বাজেটে তাদের ব্র্যান্ডের বিষয়টা গুরুত্ব পায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজেটে এমন কোনো বিষয় থাকে না।’
নুহাশ মনে করেন মুভিং বাংলাদেশ সিনেমাটি নির্মাণ ও মুক্তি পেতে দেরি হলেও এর আবেদন কমবে না। কারণ, এটা শুধু একটা স্টার্ট আপের গল্প না, এটা একটা হিউম্যান স্ট্রাগলের গল্প। একটা মিডল ক্লাস ছেলের গল্প, যে অনেক কষ্ট করে নতুন কিছু করার জন্য। এটা সবাই রিলেট করতে পারবে বলে পরিচালকের বিশ্বাস।
নুহাশ হুমায়ূনের আরেক স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা মশারি, সেটিও আরও কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেবে বলে জানান তিনি।