২৫ মার্চ, কালরাত। ১৯৭১ সালের এই দিনে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের অপারেশনে রচিত হয় এক কালো অধ্যায়।
গণহত্যায় যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে নাটকের দল প্রাচ্যনাট প্রতি বছর আয়োজন করে লালাযাত্রা। গত দুই বছর কোভিডের কারণে তা বন্ধ থাকলেও এ বছর সেটি আবারও অনুষ্ঠিত হলো।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর থেকে শুরু হয় লালযাত্রা। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর মধ্য দিয়ে তা শেষ হয় স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে।
লালযাত্রার আয়োজন। ছবি: নিউজবাংলা
লালযাত্রা আয়োজনে একজন নারীকে প্রতীকীরূপে সাজানো হয় মায়ের রূপে। যে কিনা বাংলাদেশের সবার মা। তার আঁচল ধরে সন্তানেরা হেঁটে যায়। এ সময় মা পথে ছিটিয়ে যায় রক্তরাঙা গোলাপের পাপড়ি।
যাত্রা শেষে নির্দিষ্ট একটি স্থানে পেতে দেয়া হয় মায়ের আঁচল। সেই আঁচলের দুই ধারে প্রদীপ প্রজ্বালন করে সন্তানেরা। এভাবে সম্মান জানানো হয় গণহত্যায় শহীদদের।
আয়োজনটিতে প্রতীকী মায়ের পরনে থাকে লাল-সবুজের পোশাক, আর তার প্রতীকী সন্তানরা পরেন কালো পোশাক। যাত্রার সময় সবার কণ্ঠে থাকে ‘ধন ধান্য পুষ্পে ভরা/আমাদেরই বসুন্ধরা’ গানটি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
লালযাত্রার আয়োজন। ছবি: নিউজবাংলা
লালযাত্রার মূল ভাবনা রাহুল আনন্দের। তিনি জানান, টানা ১০ বছর হওয়ার পর গত দুই বছর এটি করোনার কারণে বন্ধ ছিল। এ বছর আয়োজনটি করতে পেরে তারা খুবই খুশি। এ আয়োজনের মাধ্যমে তারা ২৫ মার্চ কালরাতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। তাই আয়োজনটি তাদের প্রাণের।
এ নির্দেশক-অভিনেতা-গায়ক বলেন, ‘এটা আমরা ২৫ মার্চ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত করি। কারণ এ আয়োজন দীর্ঘ কালরাত্রির আগে আমাদের পূর্বপুরুষের লাল রক্তের পথ ধরে ঐক্যের বন্ধনে এগিয়ে যাওযার প্রতীকী রূপ।’