বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওটিটিতে ভারতীয় সিনেমা, প্রেক্ষাগৃহে সমস্যা কোথায়?

  •    
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:০৭

দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গবিডি, বায়োস্কোপ, চরকি প্রদর্শন করছে নানা ভাষার সিনেমা, সিরিজ। ভারতের কন্নড়, মালায়লাম, তামিল, তেলেগু এর মধ্যে অন্যতম। তবে দেশের প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় সিনেমায় রয়েছে অনেকের আপত্তি।

উপমহাদেশের সিনেমা বাংলাদেশে প্রদর্শনের ক্ষেত্র কিছু বিধি রয়েছে। কলকাতার বাংলা সিনেমা বাদে হিন্দি বা উর্দু ভাষার কোনো চলচ্চিত্র বাংলাদেশে প্রদর্শন করতে চাইলে ব্যবহার করতে হবে বাংলা সাবটাইটেল। নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতিসংশ্লিষ্ট মিঞা আলাউদ্দিন।

উদাহরণ হিসেবেযুদ্ধশিশু নামের সিনেমার কথা বলা যায়। ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় সিনেমাটিতে বাংলা সাবটাইটেল ব্যবহার করে প্রদর্শন করা হয়েছিল বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে। এ দেশে মুক্তির জন্য চিলড্রেন অফ ওয়ার সিনেমাটির নাম বদলে রাখা হয় যুদ্ধশিশু।

মিঞা আলাউদ্দিন বলেন, ‘উপমহাদেশের কোনো সিনেমা বাংলাদেশে আমদানি করতে চাইলে আমদানির বিনিময়ে একটি বাংলাদেশি সিনেমা সেই দেশে রপ্তানি করতে হয়। সাফটা চুক্তির আওতায় হয়ে থাকে এ বিনিময়।’

২০১৫ সালে সালমান খানের ওয়ান্টেড সিনেমা বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে সিনেমাসংশ্লিষ্টদের আন্দোলনের মুখে এক-দুই দিনের মধ্যে তা প্রেক্ষাগৃহ থেকে নেমে যায়। তবে থামেনি কলকাতার বাংলা সিনেমা প্রদর্শন।

সম্প্রতি কলকাতার গোলন্দাজ ও কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন নামের দুটি সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্সে। ভারতীয় হলেও বাংলা ভাষায় নির্মিত বলে সিনেমাগুলোতে প্রয়োজন হয়নি বাংলা সাবটাইটেল।

ওভার দ্য টপ (ওটিটি)-এর যুগে ভারতের সব ভাষার সিনেমাই এখন সহজলভ্য। ঘরে বসে মোবাইলে চাইলেই এখন উপমহাদেশের বিভিন্ন ভাষার সিনেমা দেখা যায়।

বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য ভিন্ন ভাষার সিনেমা আরও উপভোগ্য করতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো।

দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গবিডি, বায়োস্কোপ, চরকি প্রদর্শন করছে নানা ভাষার সিনেমা, সিরিজ। ভারতের কন্নড়, মালায়লাম, তামিল, তেলেগু এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গবিডি তাদের গ্রাহকদের জন্য সম্প্রতি নিয়ে এসেছে বলিউডের সিনেমা থালাইভি। কঙ্গনা রানাউত অভিনীত সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০২১ সালে। বাংলা ভাষায় ডাবিং করা হয়েছে সিনেমাটি।

এ প্ল্যাটফর্মে আরও আছে থেরি: সিংহপুরুষ, প্রীতম, কন্নড় সিনেমা প্রতিশোধ, শেষ খেলা, ম্যাস লিডার, তিন টানেতে রাজা উজির, সাহসী, পিকেট ৪৩।

বায়োস্কোপে আছে এন জি কে, বারাম, ও মাই গড। চরকিতে রয়েছে লুকা। ফিল্মিস্থান নামের একটি তথ্যচিত্র আছে চরকিতে, সেটির ভাষা অবশ্য হিন্দিই রয়েছে।

ওটিটির নীতিমালা না থাকায় এসব ভারতীয় সিনেমা প্ল্যাটফর্মে রাখার জন্য কোনো সেন্সর সার্টিফিকেটও লাগছে না। এ ব্যাপারে সেন্সর বোর্ডের সচিব মো. মমিনুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওটিটিতে প্রদর্শিত সিনেমা সেন্সরের ব্যাপারে আমরা কোনো কিছু বলতে পারছি না আপাতত। এ নিয়ে কোনো নীতিমালা এখনও হয়নি। যদি কোনো নীতিমালা আমাদের এখতিয়ার দেয় ওটিটির ব্যাপারে, তখন আমরা কিছু বলতে পারব।’

এসব সিনেমা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রাখার কারণ জানিয়ে চরকির কনটেন্ট অফিসার আদর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জনপ্রিয়তার ভিত্তিতেই আমাদের গ্রাহকদের জন্য কনটেন্ট রাখি। তামিল, তেলেগু, মালায়লাম বা কোরিয়ান সিনেমার একটা জনপ্রিয়তা আছে আমাদের দেশের কিছু দর্শকের মধ্যে। তাদের কথা চিন্তা করেই সে ধরনের কনটেন্ট রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘লুকা নামের একটি মালায়লাম সিনেমা আছে আমাদের প্ল্যাটফর্মে, যেটির সংলাপ দর্শকরা বাংলা ভাষায় শুনতে পাবেন। এটা এমন না যে লুকা সিনেমাটির জনপ্রিয়তা বেশি বলে সেটি নেয়া হয়েছে। মালায়লাম ভাষার সিনেমার জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে আমরা লুকা সিনেমা রেখেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের সিনেমা আরও আসতে পারে।’

আদর জানান, এসব সিনেমা চরকি তাদের নিজস্ব পলিসির ভিত্তিতে কিনে থাকে। এখানে সিনেমা বিনিময়ের কোনো বিষয় নেই।

ওটিটিতে যদি বাংলাদেশের দর্শকরা বাংলা ডাবিংয়ে ভারতীয় সিনেমা দেখতে পারেন, তাহলে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা প্রদর্শনে সমস্যা কোথায়?

এমন প্রশ্নের জবাবে প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু সমস্যা হলো নিয়ম, আইনকানুনের জটিলতা। আমদানি-রপ্তানির কাজগুলো যদি দ্রুত করা যায়, তাহলে আর কোনো সমস্যা নাই।’

জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রযোজক আলিমুল্লাহ খোকন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বিনিময় ছাড়াই যদি ওটিটি ভারতীয় সিনেমা দেখাতে পারে, তাহলে প্রেক্ষাগৃহেও ভারতীয় সিনেমা দেখানোর সুযোগ দেয়া উচিত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে বিষয়গুলোকে সহজ করলে আমি কোনো সমস্যা দেখি না।’

সালমান খানের ওয়ান্টেড সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের বিপক্ষে যারা আন্দোলন করেছিলেন, তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বর্তমান সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো কোনো সমস্যা দেখছি না। আমরা তো চেয়েছিলাম ১০টি করে সিনেমা বছরে আসুক। যখন আবার আমাদের প্রেক্ষাগৃহগুলো জমে উঠবে বা করোনার ধাক্কা সামলিয়ে দেশের সিনেমা বেশি নির্মিত হবে, তখন আমরা আবার বলিউডের সিনেমা আমদানি বন্ধ করে দেব। তবে জায়েদ খান ও মিশা সওদাগর প্রথম থেকেই এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন, তাই এর কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

সোহান এও বলেন, ‘সংকট দূর করতে আমদানি করতে চাওয়া বলিউড সিনেমাগুলো যে ভাষায় নির্মিত, আমরা চেয়েছিলাম সেই ভাষাতেই প্রদর্শন করতে।’

এ বিভাগের আরো খবর