দীর্ঘ এই অতিমারি সময়ের মনস্তত্ত্ব নিয়ে লেখা শতাধিক কবিতা থেকে ৪০টি নির্বাচিত কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে কবি আলীম হায়দারের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘স্বপ্নলোকে সন্ত্রাস’।
মহামারির কারণে এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলা সংক্ষিপ্ত করা হলেও অনলাইন বিপণন মাধ্যমে পুরোদমে চলছে বইমেলা। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ইতোমধ্যে শতাধিক কপি বিক্রি হয়েছে বইটির।
অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি থেকে প্রকাশিত এ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আইয়ুব আল আমিন।
প্রকাশক মনি মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘রকমারি ডটকম এবং অগ্রদূতের অনলাইন বিপণের মাধ্যমে সারা দেশের আগ্রহী পাঠকদের অর্ডারের ভিত্তিতে শতাধিক কপি বই বিক্রি হয়েছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু অর্ডার আসছে। কবিতার বইয়ের বিক্রি সব সময়ই কম। তবে সেই হিসাবে বইটির বিক্রি ভালো।’
এদিকে বইটি নিয়ে কবির ফেসবুকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পাঠকরা। অনেকে নিজের মতামতও লিখেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হাফিজ আহমেদ নয়ন বইটি প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘নিঃসঙ্গতার অন্যতম অনুষঙ্গ প্রকৃতি অপরূপ হয়ে ধরা দিয়েছে আলীম হায়দারের কবিতায়। আবহমান বাংলার মতোই বাংলা সাহিত্যেও কবিতা সব সময়ই প্রকৃতিনির্ভর। প্রকৃতির অপরূপ বর্ণনা সমাজের বাস্তবতার সঙ্গে মিশে একাকার হয়েছে ‘স্বপ্নলোকে সন্ত্রাস’ গ্রন্থের একেকটি কবিতায়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কোভিডকালীন নিস্তব্ধতা। সব মিলিয়ে স্বপ্নলোকে সন্ত্রাস বইটি নতুন প্রজন্মকে শুধু আশাহতই করে না, নতুন আশার বাণীও শোনায়; কবির মন প্রকৃতির মতোই সাবলীল ও আশাবাদী।’
মার্কিন প্রবাসী গণযোগাযোগবিষয়ক গবেষক ও শিক্ষক ফরচুর শামীম তার পর্যালোচনায় লিখেছেন, ‘দৃশ্যমান অনুভূতির গভীরেও আরও যে অনেক গোপন কুঠুরি আছে, যেখানে নাড়া দিলে হৃদয় নড়ে যায়, কবি আলীম হায়দারের এই কাব্যগুলো হয়তো সেই সব প্রেম, জোছনা, ফুল, পাখি, নদী, মানুষ, বুকের ভেতর শূন্যতলে হাজার হাজার আকাশ, কেবল এক হয়ে ভালোবেসে একাকার হওয়ার কথাই বলতে চায়। এই কাব্যগুলো হয়তো বলতে চায় জীবনের এক অনিন্দ্য নির্জনতার কথা, যা কখনও বলে বোঝানো সম্ভব না।’
কাব্যগ্রন্থটি নিয়ে কবি আলীম হায়দার বলেন, ‘জীবনের অনেক রূপ। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সেসব প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। মানুষের সামাজিকতার সেসব মুখোশ খুলে পড়েছে এই মহামারিকালে। বাজারযুগের এই সময়ে অনুভূতিগুলো নিতান্তই ব্যক্তিগত। বাকি সব মোড়কে মোড়ানো। সেই মোড়ক খুলে যাওয়ার পর, যা অবলোকন করেছি, তাতে হৃদয় ভেঙে গেছে। অবসাদ তাড়াতে মানুষের কাছে নয়, বরং বারবার ফিরে যেতে হয়েছে উদার প্রকৃতির কাছে। হয়তো এসবের প্রভাবই পড়েছে এই কাব্যগুলোয়।’