চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোট শেষেও কথার লড়াই থামছে না। আক্রমণ সবচেয়ে বেশি সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের বিরুদ্ধেই। প্রতিদিন নানা কথা শুনতে শুনতে এই অভিনেতা এখন বিরক্ত। বলেছেন, তার বিরুদ্ধে তথ্যসন্ত্রাস চলছে।
জায়েদ রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমাকে মার্ডার কেস দিয়ে শুরু করল, পপিকে দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছে, এরপর নিপুণের অভিযোগ। এগুলোর একটাই কারণ জায়েদ খান জিতল কেন?’
এই জয় তার প্রাপ্য ছিল বলেও মনে করেন জায়েদ। বলেন, ‘আমি না জিতলে কে জিতবে। আমি তো কাজ করেছি আর তারা (প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল) এসেছে ১৫ দিন আগে। আমি যদি সামনের নির্বাচনে দাঁড়াই, সামনেও জিতব।’
কর্ম আর সততাই তার মূল শক্তি বলেও মন্তব্য করেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
ভোটের আগে-পরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল তো বটেই, যারা ভোটের অংশ নয়, বাংলা চলচ্চিত্র খুব বেশি দেখে এমনও নয়, তারাও ফেসবুকে এই ভোট নিয়ে লিখেছে। তাদের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিলেন জায়েদই। তিনি কীভাবে ভোটে জিতলেন, এ নিয়ে বিস্ময়ও প্রকাশ করছেন হাজার হাজার মানুষ।
জায়েদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে তথ্যসন্ত্রাস চলছে।… আমি যদি না জিততাম, তাহলে কোনো অভিযোগই আসত না।’
ভোটের দুই দিন পর রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসে জায়েদের প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণ আক্তার একটি ভিডিও ও দুটি স্ক্রিনশট দেখিয়ে দাবি করেন, ভোটে অনৈতিক প্রভাব খাটিয়েছেন জায়েদ।
নিপুণ যে দুটি স্ক্রিনশট দেখান, সেখানে জায়েদ খানের সঙ্গে নাম না জানা একজনের কথোপকথন রয়েছে।
সেখানে জায়েদ খান লিখেছেন, ‘ভাইয়া পেমেন্ট ক্লিয়ার নো টেনশন।’
অপর প্রান্ত থেকে এক ‘ভাইয়া‘ লেখেন, ‘বেশ। তাদের সবাইকে বিএফডিসির গেট থেকে দূরে অবস্থান করতে বলে দিয়েছি আমি। তুমি বুকে সাহস রেখে কাজ চালিয়ে যাও।’
জায়েদ আবার লেখেন, ‘ভাইয়া, হারুন (প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন) ভাই বলল, রিয়াজকে সরাতে হবে।’
‘ভাইয়া’ লেখেন, ‘শোনো জায়েদ, সব তোমার ইচ্ছেমতো হলে চলবে না। প্রশাসনিক ঝামেলা আমাকে পোহাতে হবে। রিয়াজকে টেকনিক্যালি এখন কিছু করতে গেলে তাতে তোমার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। রিয়াজ বরং ভেতরেই থাকুক। বিকল্প উপায় বের করো।’
এমন আরও কিছু কথার স্ক্রিনশট দেখান নিপুণ।
তিনি যে ভিডিওটি দেখান, সেটি অভিনেত্রী মুনমুনকে জায়েদ খানের টাকা দেয়ার প্রমাণ হিসেবে দাবি করেন।
এসব অভিযোগ জায়েদ এক ধাক্কায় উড়িয়ে দিয়েছেন।
‘ভোটারকে টাকা দেয়ার প্রমাণ হিসেবে’ দাবি করা ভিডিওটি নিয়ে জায়েদ বলেন, ‘অভিনেত্রী মুনমুন ফেসবুক থেকে একটি লাইভ করেছেন। সেখানে তিনি কাঁদছেন। তার সঙ্গে আমার যে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে, সেটিকে টাকা দেয়ার ভিডিও বলে ভাইরাল করা হয়েছে বলেই কিন্তু তিনি লাইভে এসেছেন এবং কেঁদে কেঁদে বলেছেন এটা মিথ্যা।’
ভিডিওটির ব্যাখ্যা দিয়ে জায়েদ বলেন, “মুনমুন ঢুকল, তার সঙ্গে কথা বলছিলাম, একসময় জড়িয়ে ধরলাম। মাস্কটা খুলে তাকে কানে কানে বললাম, ‘তোমার সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করেছি? আমি তোমার ছোট ভাই, আমাকে ভোট দেবে, আমার পুরো প্যানেলকে ভোট দেবে। তাকে এও বললাম যে, এবারই কিন্তু প্রথম সিল দিয়ে ভোট দিতে হবে।'”
স্ক্রিনশটের ব্যাপারে জায়েদ বলেন, ‘যে স্ক্রিনশন তারা দেখিয়েছে, সেটি নির্বাচনের আগের দিনই আমার কাছে এসেছে। স্ক্রিনশট হলে, যার কাছে পাঠিয়েছিলাম তার ছবিটা পাশে থাকার কথা। ওপরের নম্বর বা নাম থাকবে। কোথায় সেগুলো। যে আমাকে রিপ্লাই করেছেন তার পাশের ছবিটা কোথায়?’
জায়েদ জানান, তিনি স্ক্রিনশট দুটি সাইবার ক্রাইমে পাঠিয়েছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
নির্বাচনি বিধি অনুযায়ী যেখানে থাকা যাবে না, নির্বাচনের দিন সকাল থেকে জায়েদ খান সেখানেই ছিলেন বলে অভিযোগ করেন নিপুণ। এ ব্যাপারে জায়েদ বলেন, ‘সেখানে তা আমি একা না, নিপুণের প্যানেলের ফেরদৌস ভাই, জেসমিন, সাইমন সবাই ছিলেন আমার পাশেই। আমার একার কেন দোষ হবে?’