সরলপুর ব্যান্ড নামের ‘যুবতী রাধে’ শিরোনামের গানটির যে কপিরাইট ছিল সেটি বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে কপিরাইট রেজিস্টার বুক সংশোধন করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস।
অভিযোগের প্রেক্ষাপট, আবেদনকারীর বক্তব্য, প্রতিপক্ষের জবাব, বিশেষজ্ঞ মতামত, আবেদনকারীর যুক্তি, সরলপুর ব্যান্ডের পক্ষে যুক্তি, সাক্ষীর বক্তব্য, পর্যালোচনা, যুক্তিতর্ক বিশ্লেষণের পর কপিরাইট অফিস সিদ্ধান্ত দেয়।
সিদ্ধান্তে জানানো হয়, “অঙ্গীকারনামায় ‘যুবতী রাধে’ গানটি মৌলিক হিসেবে দাবি করে অসত্য তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে কপিরাইট আইনের ৮৮ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘন করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরলপুর ব্যান্ডের অনুকূলে রেজিস্ট্রেশনকৃত ‘যুবতী রাধে’ শীর্ষক গানটির কপিরাইট সনদ বাতিল করা হলো।”
২০২০ সালের ডিসেম্বরে ‘যুবতী রাধে’ গানটি নিজেদের মৌলিক গান দাবি করে কপিরাইট অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আইপিডিসি আমাদের গান’ প্রকল্পের ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করে সরলপুর ব্যান্ড।
পার্থ বড়ুয়ার সংগীতায়োজনে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী শাওন ও চঞ্চলের কণ্ঠে ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ শিরোনামের গানটি হুবহু নকলের অভিযোগ আনে ব্যান্ডটি।
পরবর্তী সময়ে লোকগবেষক সাইমন জাকারিয়া একটি ভিডিও প্রকাশের মধ্য দিয়ে সরলপুর ব্যান্ডের গানটিকে বিভিন্ন লোকসাহিত্যের অংশ বলে প্রমাণ হাজির করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট বিভিন্ন বিভ্রান্তির জবাবে সরলপুর ব্যান্ড ফেসবুক লাইভে তাদের অবস্থান তুলে ধরে বলে, ‘সাইমন জাকারিয়া নিরপেক্ষ গবেষক নন।'
তবে শেষ পর্যন্ত গানটির কপিরাইট ধরে রাখতে পারেনি সরলপুর ব্যান্ড।
কপিরাইট অফিসের কপিরাইট অফিসার জাফর রাজা চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরলপুর ব্যান্ডের যুবতী রাধে গানটির ৩২টি লাইনের মধ্যে ১২টি লাইন লোকসাহিত্য থেকে হুবহু নেয়া হয়েছে। ৮টি লাইনের দেখা গেছে একটি শব্দ পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে বাকি ১২টি লাইন হয়তো তাদের, কিন্তু সেই ১২টি লাইনের কপিরাইট তারা পাবে না কারণ তারা প্রথমেই মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছে।’
তাহলে যুবতী রাধে গানটির কী হবে, জানতে চাইলে জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘এটা আমরা পাবলিক ডোমেইন করে দেব কারণ গানটি পাবলিক ডোমেইনের অংশ। কেউ যদি গানটি ব্যবহার করতে চায় তাহলে উল্লেখ করতে হবে যে সে এটি কোথা থেকে নিয়েছে। বা গানের কোন অংশ পাবলিক ডোমেইনের এবং কোন অংশ তার নিজের লেখা, সেটা উল্লেখ করতে হবে।’