বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জানের ভয়ে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম: পপি

  •    
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:৩৮

চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার কারণ জানিয়ে পপি বলেন, ‘আমার মতো শিল্পীকে, যে তিন-তিনবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি, আমাকে সদস্যপদ বাতিলের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এত বছর কাজ করার পর এটা একটা শিল্পীর জন্য কতটুকু অপমানের সেটা আমি বুঝতে পারি বা আমার মতো শিল্পী যারা ভিকটিম হয়েছে তারা। এই নোংরামির কারণে আমি আমার মানসম্মান নিয়ে থাকার জন্য বা আমার জানের ভয় ছিল- সবকিছু মিলে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি চলচ্চিত্র থেকে, আপনাদের কাছ থেকে।

দীর্ঘদিনের আড়াল ভেঙে প্রকাশ্যে এলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি। বুধবার এক ভিডিও বার্তায় আসন্ন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের জন্য ভোট চেয়ে জানালেন, এতদিন জানের ভয়ে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন।

ফেসবুক, ইউটিউবে প্রকাশ হওয়া সেই ভিডিও বার্তার শুরুতে সবার সুস্থতা কামনা করে পপি বলেন, ‘আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই ইলিয়াস কাঞ্চন, একুশে পদকসহ একাধিক পদকপ্রাপ্ত এবং নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের একক পৃষ্ঠপোষক, আমাদের জনগণের কাছে পরীক্ষিত একজন সৈনিক ইলিয়াস কাঞ্চন, যিনি একজন সফল হিরো, প্রযোজক, পরিচালক। আর সঙ্গে আছেন আমার বোন নিপুণ, যার মনটা অনেক বড়। আরও সঙ্গে আছেন আমার বন্ধু, আমার কলিগ আমার হিরো আপনাদের সবার প্রিয় নায়ক রিয়াজ। কাঞ্চন ভাই এবং নিপুণ প্যানেলে যারা যারা আছেন সকলকে জানাচ্ছি আমার তরফ থেকে অনেক অনেক শুভ কামনা-ভালোবাসা।’

তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম আর কখনোই ক্যামেরার সামনে আসব না, কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে নিজের কিছু দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আজকে কিছু কথা না বললেই না। দীর্ঘ ২৬ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক সুনামের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। দেশ-বিদেশ থেকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য অনেক কাজ করেছি। তিনবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলা, আজ আমি কোথায়? আমি আছি, আমি আছি আপনাদের মাঝেই, হয়তো ভাগ্যে থাকলে আবার ফিরব কাজে।’

কারও নাম উল্লেখ না করলেও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির একজনের কারণে বারবার তাকে অপমানিত হতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে কথাটি বলতে চেয়েছিলাম, সেটি হচ্ছে বর্তমান সমিতির (চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি) একটিমাত্র ব্যক্তির কারণে, তার পলিটিকস, তার নোংরামি এবং অনেক রকম অপকর্মের অসহযোগিতা করার কারণে আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে। শুধু আমি না, আমার মতো রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নিপুণ আমাদের সকলকে ব্যবহার করে, আমাদের কাঁধে বন্দুক রেখে যে এই চেয়ারটিতে বসেছে, বসেই বিভিন্ন রকম অপকর্ম করার চেষ্টা করেছে, যেখানে আমি সায় দিইনি বা আমরা সায় দিইনি। যার কারণে আজকে আমি ভিকটিম এবং আমাকে অনেক অপমানিত হতে হয়েছে।’

চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার কারণ জানিয়ে কুলি খ্যাত এই চিত্রনায়িকা বলেন, ‘আমার মতো শিল্পীকে, যে তিন-তিনবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি, সদস্যপদ বাতিলের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এত বছর কাজ করার পর এটা একটা শিল্পীর জন্য কতটুকু অপমানের সেটা আমি বুঝতে পারি বা আমার মতো শিল্পী যারা ভিকটিম হয়েছে তার। ১৮৪ জন শিল্পী যারা ভিকটিম হয়েছে তারা হয়তো আমার কষ্টটা বুঝতে পারবে বা আমিও তাদের কষ্টটা বুঝতে পারি। এই নোংরামির কারণে আমি আমার মানসম্মান নিয়ে থাকার জন্য বা আমার জানের ভয় ছিল- সবকিছু মিলে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি চলচ্চিত্র থেকে, আপনাদের কাছ থেকে।

‘আমার কাছে সদস্যপদ বাতিলের চিঠিটা পর্যন্ত আছে। আমি যখন এটা পেয়েছি তখন আমি স্পিচলেস ছিলাম। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই নোংরামির মধ্যে আমি আর কখনো যাব না। যদি কখনো পরিবেশ ভালো হয়, এই নোংরা মানুষগুলো যদি সরে যায় ইন্ডাস্ট্রি থেকে তখনই আবার কাজ করব।’

এফডিসি নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমরা সকলে জানি আমাদের এই এফডিসি আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের এফডিসি। আমাদের এই এফডিসি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নে গড়া এফডিসি। আমরা তাদের এ স্বপ্নকে বৃথা যেতে দিতে পারি না।’

আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের জন্য ভোট চেয়ে পপি বলেন, ‘ছোট্ট করে হাত জোড় করে একটা কথা বলব, আমরা যে ভুলটা করেছি, আমাদের যে নির্বাচন আসছে সেই নির্বাচনে আপনারা সেই ভুলটা করবেন না। সঠিক মানুষ পছন্দ করে ভোটটা দেবেন। যাতে আমাদের চলচ্চিত্র বাঁচে। চলচ্চিত্র বাঁচলেই আমরা বাঁচব। আমরা পরিবর্তন চাই, আমরা কাজ চাই, তার জন্য আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলছি, হয়তো আগে একটা ভুল করেছি, সেটা একটা ভুল মানুষকে আমরা সাপোর্ট করেছি, যেটার কারণে আজ অনেকগুলো মানুষ বিপদের মধ্যে। ইন্ডাস্ট্রি আজকে বিপদের মুখে, সমালোচনার মুখে। এগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে আমার কাছে মনে হয়েছে যে আমাদের পরীক্ষিত সৈনিক কাঞ্চন ভাই, নিপুণ, রিয়াজ, তায়েব ভাই যারা যারা এই প্যানেলে আছেন তাদেরকে একটা সুযোগ দেয়া উচিত ভালো কাজের জন্য।’

এই প্যানেল শিল্পীদের অসম্মান করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় অ্যাটলিস্ট শিল্পীর মূল্যায়ন করবে, কাজের মূল্যায়ন করবে, কাজ দিয়ে আমাদেরকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করবে। অন্তত পক্ষে শিল্পীদের নিয়ে অসম্মান করবে না বা রাজনীতি করবে না। এই বিশ্বাসটুকু আমার আছে। প্লিজ আপনারা ইন্ডাস্ট্রিকে ভালোবাসলে আমাদের চলচ্চিত্রকে ভালোবাসলে, চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের যারা যারা আছেন সকলকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৮ জানুয়ারি। শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে মিশা সওদাগর-জায়েদ খান এবং ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল।

এ বিভাগের আরো খবর