যারা টেপ রেকর্ডারে গান শুনেছেন, তদের কাছে শিল্পীদের পাশাপাশি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যেমন সাউন্ডটেক, সংগীতাও পরিচিত। প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও আছে। তবে আগের মতো জৌলুশ নেই। কারণ টেপ রেকর্ডার, সিডির বাজার শেষ হয়েছে অনেক আগেই।
এখন সিঙ্গেলসের যুগ। শিল্পীদের একটি করে গান প্রকাশ পায়, সেটিও ইউটিউবে। তাই দেশের অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকেছে ভিডিও প্রোডাকশনের দিকে। প্রায় সব পরিচিত অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ইউটিউব চ্যানেল।
বাংলাদেশে ইউটিউব চ্যানেল বেশ জনপ্রিয় হলেও আন্তর্জাতিকভাবে আরও অনেক জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যেখানে শিল্পীরা নিজেরাই তাদের অডিও কনটেন্ট প্রকাশ করতে পারেন এবং প্ল্যাটফর্মগুলো শিল্পীকে তার স্বত্ব সংরক্ষণ করার মাধ্যমে প্রাপ্য টাকাও দিয়ে থাকে।
এ ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় হলো স্পটিফাই, আই টিউনস, প্যানডোরা, অ্যাপল মিউজিক, গানা, অ্যামাজন মিউজিক।
রিয়াদুজ্জামান, ডাকনাম রিয়াদ, চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। ছোট থেকেই সংগীতের সঙ্গে যোগাযোগ। গান গাওয়ার পাশাপাশি রেকর্ডিংয়ের কাজ করতেন। বাসাতেই ছোট রেকর্ডিং স্টুডিও রয়েছে তার। কাজের পাশাপাশি তাই গান করেন মাঝেসাঝেই।
রিয়াদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বেশ কিছু গান করা আছে, যার মধ্যে দশটির মতো ডামি আকারে আছে। সম্প্রতি কিপটা শিরোনামের একটি গান স্পটিফাই ও আইটিউন্সে পাবলিশ করেছি।’
আর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের জন্য অপেক্ষা নয়, রিয়াদ এখন চাইলে নিজের গান নিজেই প্রকাশ করে শোনাতে পারেন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষকে এবং সেখান থেকে ইনকামও হতে পারে তার।
সেই প্রক্রিয়া জানিয়ে রিয়াদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্পটিফাইতে অডিও কনটেন্ট প্রকাশ করতে চাইলে ডিজিটাল সংগীত বিতরণ, প্রকাশনা এবং লাইসেন্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তা ঘরে বসে অনলাইনেই করা যায়। সেখানে গান দেয়ার পর প্ল্যাটফর্মটি কিছু সময় নিতে পারে কনটেন্টটির মান ও স্বত্ব বিষয়ক যাচাই করার জন্য। সব ঠিক থাকলে কনটেন্টটি পাবলিশ করা যাবে ৩৭টিরও বেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে, যেমন স্পটিফাই, টেনসেন্ট, আইটিউন্স। অনলাইন সংগীত বিতরণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে টিউনকোর, ডিসট্রোকিড, রিভার্বন্যাশন, ল্যানডার আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে খুবই জনপ্রিয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গানটির স্বত্ব সংরক্ষণ করতে চাইলে ক্রিয়েটরকে কিছু অর্থ দিতে হয় প্ল্যাটফর্মটিকে। কেউ চাইলে পেশাদার প্রক্রিয়ায় কনটেন্ট প্রকাশ করতে পারেন, কেউ চাইলে শুধু শোনানোর জন্য সেখানে কনটেন্ট দিতে পারেন।’
স্পটিফাইসহ অন্য যেসব আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, সেখানে কনটেন্ট দিতে চাইলে পরিবেশকের সাহায্যও নিতে পারেন ক্রিয়েটর। এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অডিও কনটেন্ট ডিসট্রিবিউট করে থাকে।
ডিসট্রিবিউটরদের মাধ্যমে অডিও কনটেন্ট পরিবেশন করলেও প্রক্রিয়া অনেকটা একই রকম, তবে এ ক্ষেত্রে অর্থপ্রাপ্তি হলে ক্রিয়েটরের কাছ থেকে তারা একটা কমিশন নিয়ে থাকেন বলে জানান রিয়াদ।
রিয়াদ বলেন, ‘অনেকের ধারণা যে এসব ক্ষেত্রে প্রফেশনাল রেকর্ডিং করতে হয়, কিন্তু যারা নতুন তারা কীভাবে এটা করবে! এ ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, শুধু একটি আইফোন ও একটি ছোট আইরিগ সাউন্ড কার্ডের মাধ্যমে করা রেকর্ডিং দিয়েও ভালো মানের কাজ করা সম্ভব।’