নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের জনক অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের ৭৫তম জন্মজয়ন্তীতে জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘হাশেম উৎসব’।
এই উৎসবে বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক হাসান মতিউর রহমান এবং বাংলাদেশ বেতারের সাবেক মহাপরিচালক ও ছায়ানটের শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র শীলকে ‘মোহাম্মদ হাশেম পদক-২০২২’ প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে গুণীজন পদক ছাড়াও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ জনকল্যাণে বিশেষ অবদানের জন্য ফাউন্ডেশনের জুরি বোর্ড মনোনীত ১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
গুনিজনদের হাতে পদক তুলে দেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. দিদার-উল আলম।
এর আগে বিকাল পাঁচটায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে ‘গণমানুষের শিল্পী মোহাম্মদ হাশেম’ শিরোনামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. দিদার-উল আলম। এতে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানছুরুল হক খসরু।
এবার উন্মুক্ত পরিবেশে সকাল সাড়ে ৯টায় হাশেম উৎসব উদ্বোধন করেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান। সকাল ১০টায় শুরু হয় মোহাম্মদ হাশেমের গানের প্রতিযোগিতা। দুপুর দেড়টায় শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া শেষে বিকাল ৩টায় শোভাযাত্রা বের করা হয়।
উৎসব ঘিরে জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে বসেছিল শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিসহ গণমানুষের মিলন মেলা। ছিল দিনব্যাপী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম।
সন্ধ্যায় একই মঞ্চে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা। রাত ৮টায় হাশেমের সৃষ্টি ও বর্নাঢ্য জীবনের ওপর সাজ্জাদ রাহমান ও সানজিদা সুলতানা নির্মিত আলাদা দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর পরপরই সংগীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
নোয়াখালীর প্রধান সংগীত খ্যাত ‘আঙ্গো বাড়ি নোয়াখালী, রয়্যাল ডিস্ট্রিক ভাই/হেনী মাইজদী চৌমুহনীর নাম কে হুনে নাই’ সহ হাজারও গানের গীতিকার ও সুরকার মোহাম্মদ হাশেমের জন্ম ১৯৪৭ সালের ১০ জানুয়ারি। সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে তার বাড়ি।
২০২০ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোহাম্মদ হাশেম। মাইজদী শহরের বড় দিঘির উত্তর পাড়ে কোর্ট মসজিদের পাশে তিনি সমাহিত।