তিনি অভিনয় করেছেন বলিউডের পারেশান পারিন্দে সিনেমায়। ফাইনালিস্ট ছিলেন ভারতের জি-টিভির ‘সুপারস্টার অস্ট্রিলিয়া’ আয়োজনে। ২০১৭ সালে প্রথম রানার আপ হয়েছিলেন ‘মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ প্রতিযোগিতার।
এসব পরিচয় ছাপিয়ে সাদিয়া নাবিলা এখন এ দেশের দর্শকদের কাছে ‘ইরা’। বড় পর্দায় নজর কেরেছেন তিনি। সৈয়দপুরের এ মেয়ে অনেক দিন ধরেই আছেন অস্ট্রেলিয়াতে। সেখানে তিনি মডেলিং ও অভিনয়ে যুক্ত।
সম্প্রতি তিনি অনলাইনে যুক্ত হয়েছিলেন নিউজবাংলার সঙ্গে। নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন এ অভিনেত্রী।
সাদিয়া নাবিলা, আশা করছি ভালো আছেন। মিশন এক্সট্রিম দেশের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াতেও মুক্তি পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
আমি ভালো আছি এবং আমি অনেক বেশি হ্যাপি। এত এত সাড়া পেয়েছি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরে থেকে যে কী বলব। এত মানুষ যোগাযোগ করেছেন। আমার ইরা কারেক্টারের জন্য, মিশন এক্সট্রিমের জন্য আমি অনেক থ্যাংকফুল সবার কাছে। দর্শকদের অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনারা যারা এত সুন্দর সুন্দর মেসেজ পাঠিয়েছেন। চরিত্রটিকে এত বেশি ভালোবাসার জন্য আমি অনেক গ্রেটফুল।
মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া নাবিলা। ছবি: সংগৃহীতসিনেমার প্রিমিয়ার শেষ হওয়ার পর একজন বলছিলেন, ‘আই লাভ ইরা’। আমরাও বলতে চাই উই লাভ ইরা, উই লাভ সাদিয়া নাবিলা।
অনেক ধন্যবাদ। অনেক ভালো লাগার একটা ব্যাপার। কারণ আমি অস্ট্রেলিয়াতে। অনেক কিছু মিস করেছি, আপনারা যারা বাংলাদেশে আছেন সবাই মিলে সিনেমাটি দেখেছেন, সেটাও মিস করলাম। সবাই যেভাবে বলছেন ইরা সম্পর্কে, অনেক ভালো লাগছে আমার।
মিশন এক্সট্রিম মুক্তির সময় অনেকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হলেও আপনার সঙ্গে হয়নি। পুরো সময় আপনাকে অনেক মিস করলাম আমরা। আপনি তো দেশের বাইরেই থাকেন, সংশ্লিষ্টরা আপনাকে খুঁজে পেল কীভাবে?
শুরু থেকেই বলতে হয়। আমি অস্ট্রেলিয়াতে মডেলিং এবং অভিনয় করি। ২০১৭ সালে একটা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি আমি ফার্স্ট রানার-আপ হই। এটার পরে একটা বলিউড প্রোডাকশন হাউস আমাকে কন্টাক্ট করে এবং বলিউড সিনেমায় কাজ করি, যেটি মুক্তি পায় ২০১৮ সালে।
এর সঙ্গে আমি বাংলাদেশের কিছু টিভিসি, শর্টফিল্মে কাজ করছিলাম। এগুলো দেখে মিশন এক্সট্রিম সিনেমার পরিচালক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি তখন অস্ট্রেলিয়াতেই ছিলাম। আমার ভার্চুয়ালি একটা অডিশন হয়। তিনি আমাকে ইরা চরিত্রে পছন্দ করেন এবং আমি বাংলাদেশে ফ্লাই করি।
তো ভার্চুয়ালি আমাদের যাত্রা শুরু।
মিশন এক্সট্রিম সিনেমার সহশিল্পীদের সঙ্গে সাদিয়া নাবিলা। ছবি: সংগৃহীতআপনি এখনও মডেলিং করেন কি না? বলিউডের কোনো প্রোডাকশনে কি এখন কাজ করছেন?
আমি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাতে থাকি। এখানে আমি একটি বলিউড কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত। আমার মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু, স্কুল-কলেজের পর মডেলিং দিয়েই কাজ শুরু, সো আমি মডেলিং চালিয়ে যাচ্ছি অস্ট্রেলিয়াতে।
তবে মিশন এক্সট্রিমের পর আমি এত ভালো সাড়া পেয়েছি সবার কাছ থেকে। করোনা সিচুয়েশন ভালো হচ্ছে। তারপরও এখানে কিছু রেসট্রিকশন আছে। যার জন্য আমি মিশন এক্সট্রিম সিনেমার মুক্তির সময় থাকতে পারলাম না। এটা খুব দুঃখজনক আমার কাছে।
তবে এ পুরো সময়টা আমি অস্ট্রেলিয়াতে কাজ করেছি এবং মডেলিং চালিয়ে গিয়েছি। এখন ফোকাসটা হলো বাংলাদেশের মিডিয়াতে কাজ করা এবং চলচ্চিত্রে কনটিনিউ করা।
এ সিনেমার পর অনেক প্রযোজকই হয়তো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন। এমন কোনো ঘটনা আছে কি?
মিশন এক্সট্রিম রিলিজ হওয়ার আগেও আমি বেশ কিছু কাজের অফার পাই বাংলাদেশ থেকে কিছু ওয়েব সিরিজ কিছু চলচ্চিত্রের জন্য; কিন্তু আমার সবকিছু ক্যানসেল করে দিতে হয়। কারণ আমি আটকা ছিলাম করোনার জন্য।
সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু নামকরা পরিচালকের কাছ থেকে সাধুবাদ পেয়েছি। জানি না ভবিষ্যতে কী হবে, তবে আমি আশাবাদী।
আমরা ব্যক্তি সাদিয়া নাবিলাকেও জানতে চাই।
আমাদের বেড়ে ওঠা সৈয়দপুরে। এটা রংপুরের কাছাকাছি। সেইখানেই আমার স্কুল-কলেজ। আমি ২০১২-তে এইচএসসি কমপ্লিট করি এবং অস্ট্রেলিয়াতে চলে আসি। এখানে আইটি নিয়ে লেখাপড়া করি এবং ডিগ্রি কমপ্লিট করি।
আমার বড় ভাই এখানে থাকেন আর বাবা-মা আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন।
অস্ট্রেলিয়ায় মডেলিংয়ে যুক্ত সাদিয়া নাবিলা। ছবি: সংগৃহীতআপনাকে দর্শকরা পছন্দ করেছেন বলেই হয়তো আপনাকে আরও বেশিক্ষণ দেখার ইচ্ছা ছিল। সেই ইচ্ছা কি পূরণ হবে?
সেটার জন্য পার্ট টু। আমি সবাইকে ক্লিয়ার করে দিতে চাই, পার্ট ওয়ান ছিল ইরার ইন্ট্রোডাকশন। আর ইরার যে গল্প এবং ইরার যে মিশন তার সবই থাকবে পার্ট টুতে। ইরা ফিরছে আরও বড় কিছু নিয়ে পর্ব দুইয়ে।
আপনি কি মিশন এক্সট্রিম টু-এর মুক্তির সময় আসবেন, নাকি তার আগে একবার দেশে আসার সুযোগ রয়েছে?
না, আমার মিশন এক্সট্রিম টু-এর মুক্তির সময় আসতে হবে। তার আগে মনে হচ্ছে না আসব।
ইরা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাদিয়া নাবিলা। ছবি: সংগৃহীতদর্শকরা হয়তো মুখিয়ে আছেন আপনার আরও কিছু কাজ দেখার জন্য। নতুন কোনো কাজ করছেন কি?
কাজ করলে তো অনেক কাজই করা যায়। আমি সবই করে ফেললে দর্শকদের এই ভালোবাসাটা পাব না। বেছে বেছে কাজ করতে চাই।
মিশন এক্সট্রিমের জন্য আপনার প্রস্তুতি কেমন ছিল?
আমার প্রিপারেশন আসলে অস্ট্রেলিয়া থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। গঠন ঠিক করার জন্য আমার অনেক টাইম দিতে হয়েছে জিমে। আর চরিত্র ও তার মানসিক অবস্থা বুঝতে সানি (সানি সানোয়ার) ভাইয়া অনেক সাহায্য করেছেন। মূলত তিনি ইরা চরিত্র এবং আমাকে গুছিয়েছেন।
মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া নাবিলা। ছবি: সংগৃহীত