মুক্তিযোদ্ধা, বরেণ্য চলচ্চিত্রকার এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইদুল আনাম টুটুলের সর্বশেষ নির্মাণ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কালবেলা।
চলচ্চিত্রটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং প্রযোজনা সংস্থা ‘আকার’-এর ব্যানারে নির্মিত।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং প্রযোজনা সংস্থার আয়োজনে বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কালবেলা চলচ্চিত্রটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী।
চলচ্চিত্রটি ১০ ডিসেম্বর ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টার সিনেমা এবং চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
কালবেলা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে একজন নারীর সংগ্রামের কাহিনি নিয়ে নির্মিত। পাশাপাশি চলচ্চিত্রে ফুটে উঠেছে যুদ্ধকালীন সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের সন্ধানে অনিশ্চিত যাত্রা, পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসরদের নির্মমতা এবং যুদ্ধকালীন সামাজিক অস্থিরতা।
চলচ্চিত্রটির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ এবং শিশির আহমেদ। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাসুম বাশার, মিলি বাশার, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, লুৎফর রহমান জর্জ, শেখ মাহবুবুর রহমান, সায়কা আহমেদ, জুলফিকার চঞ্চল, কোহিনুর আলম তানভীরসহ অনেকে।
কালবেলা সিনেমার পোস্টার। ছবি: নিউজবাংলা
চলচ্চিত্রটির শুটিং শেষ হওয়ার পরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর মারা যান নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল। তার মৃত্যুর ৩ বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে কালবেলা।
সাইদুল আনাম টুটুলের জন্ম ১৯৫১ সালের ১ এপ্রিল একটি উদার প্রগতিশীল পরিবারে। শৈশব থেকে তিনি রেডিও এবং টেলিভিশনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং শরণার্থী শিবিরে সাংস্কৃতিক দলের কর্মী ছিলেন।
১৯৭৬ সালে পুনা ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে চলচ্চিত্র সম্পাদনায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। সূর্য দীঘল বাড়ি চলচ্চিত্র সম্পাদনার জন্য ১৯৭৯ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ঘুড্ডি, দহন, দুখাই, দীপু নাম্বার টুসহ বেশ কিছু সিনেমা সম্পাদনা করেন তিনি।
এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাল পিরান, সুখের নোঙর, গল্পের শেষ আছে, দক্ষিণের ঘর।
ছবিতে নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল। ছবি: নিউজবাংলা
১৯৮২ সাল থেকে বিভিন্ন জাতীয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চলচ্চিত্র বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন।
২০০০ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা আধিয়ার। তেভাগা আন্দোলনের পটভূমিতে নির্মিত সিনেমাটি সব মহলে প্রশংসিত হয়।