বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফ্রিকার ১২ দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ১৬:১০

স্থপতি আদিল ডালবাই এবং মুকাসা পুরো দুনিয়াকে জানান দিতে চান আফ্রিকার স্থাপত্য নিয়ে, যা মিশরের পিরামিডের কথা মনে করিয়ে দেয়।

মিশরের পিরামিড বিশ্বজুড়ে নান্দনিকতার এক আশ্চর্যের নাম। কিন্তু অনেকেই জানেন না আফ্রিকার অনেক স্থাপত্যের মধ্যেও আছে ঠিক একই নান্দনিকতা।

স্থপতি আদিল ডালবাই এবং মুকাসা তাই পুরো দুনিয়াকে এর জানান দিতে চান সাব-সাহারান আফ্রিকা প্রকাশিত সাত খণ্ডের আর্কিটেকচারাল গাইডের মাধ্যমে। সম্প্রতি তারা এ দলের অংশ হিসেবে কাজ করছেন।

ছবি: ডাকার রেলওয়ে স্টেশন (স্থপতি আদিল ডালবাই)

তাদের গভীর গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল পূর্বযুগের ভবনগুলো। ঔপনিবেশিক সময়ে সেনেগালের রাজধানী ডাকারে নির্মিত সম্প্রতি সংস্কার করা রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে আধুনিক মাস্টারপিসের জন্য কাজ করেছেন এ দুই স্থপতি।

আফ্রিকার ১২টি উদ্ভাবনী, ঐতিহাসিক এবং আইকনিক ভবনগুলো হলো-

১. কাসুবি সমাধি, উগান্ডা– ১৮৮২

ভবনের স্থপতি সেবাস্তিয়েন মরিসেত

উগান্ডার রাজধানী কামপালায় কয়েক হেক্টর কৃষি জমি জুড়ে তৈরি কাসুবির রয়েল কমপ্লেক্স হলো বুগান্ডা রাজ্যের রাজাদের সমাধিস্থল। মূলত কাঠ এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ থেকে নির্মিত হয়েছিল এটি।

ভেতরে একটি পবিত্র বন প্রতিলিপি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ৫২টি বুগান্ডা গোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য উপরের দিকে রয়েছে ৫২টি বৃত্তাকার রিং।

২. লিডেটা মার্কেট, ইথিওপিয়া– ২০১৭

স্থপতি: গোঞ্জালো গুয়াজার্দো

শপিং সেন্টারটি ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ‘ভিলাল্টা স্টুডিও’ তৈরি করেছে, যা হালকা ওজনের কংক্রিট দিয়ে তৈরি। নকশায় ছিদ্রযুক্ত মুখোমুখি রয়েছে যা প্রাকৃতিক আলো-বাতাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, ভবনের চকচকে সাদা খোলকে সাজানো কাট-আউট প্যাটার্নটি একটি ঐতিহ্যবাহী ইথিওপীয় কাপড়ের অনুকরণ করে বানানো।

৩. হিকমা কমপ্লেক্স, নাইজেরিয়া- ২০১৮

স্থপতি: জেমস ওয়াং

আর্কিটেকচার স্টুডিও এটেলিয়ার মাসোমির নাইজেরিয়ান প্রতিষ্ঠাতা মরিয়ম কামারা, স্টুডিও চাহারের ইয়াসামান ইসমাইলির যৌথ উদ্যোগে সাবেক একটি হাউসা মসজিদকে পুনরুদ্ধার করা হয়।এতে একটি কমিউনিটি স্পেস আর লাইব্রেরিও রয়েছে।

ডালবাইয়ের জন্য প্রকল্পটি পুরাতন এবং নতুনের অবিচ্ছিন্ন মিশ্রণে বিশেষভাবে তৈরি।

জার্মান এই স্থপতি বিবিসিকে বলেন, ‘এটি স্পষ্টতই একটি সমসাময়িক ভবন যা নাইজেরিয়ান ঐতিহ্যকে গভীরভাবে প্রকাশ করে।

‘শুধুমাত্র সাংস্কৃতিকভাবে নয়, প্রযুক্তিগতভাবেও এটি পুরানো ভবনগুলোর কৌশল ও উপকরণের উপর নির্ভর করে।’

৪. মারোপেং ভিজিটরস সেন্টার, সাউথ আফ্রিকা– ২০০৬

স্থপতি: গ্যাপ আর্কিটেক্টস অ্যান্ড আরবান ডিজাইনারস

মারোপেং একটি অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র যা আধুনিক মানুষের প্রাথমিক বিকাশ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করতে তৈরি করা হয়েছে।

এই আইকনিক স্ট্রাকচারটি সাউথ আফ্রিকার প্রতিষ্ঠান (GAPP Architects ও MMA Studio) দিয়ে ডিজাইন করা।

৫. মেরোস এর পিরামিড, সুদান–৩০০খৃস্টাব্দ

স্থপতি: ভ্যালেরিয়ান গুইলট

এই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটি একসময় প্রাচীন কুশাইট সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। এর খনন থেকে প্রাসাদ, মন্দির এবং রাজকীয় গোসলখানার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়।

এই পিরামিডগুলো বেলেপাথরের ব্লক দিয়ে নির্মিত হয়েছিল।

৬. বাসোথো হাউস, লেসোথো

ছবি: গ্যারি ভ্যান

লেসোথোতে ‘লিটেমা’ হলো একটি ম্যুরাল, ডেকোরেশন খোদাই করা আর মোজাইক দিয়ে তৈরি।

মাটি ইট, প্লাস্টার দিয়ে নির্মিত ঘরটি উর্বরতা এবং ত্যাগের রক্তের প্রতীক লাল রঙে আঁকা। বিশুদ্ধতা ও শান্তির প্রতিনিধিত্ব করছে সাদা। পূর্বপুরুষদের উল্লেখ করার জন্য কালো, আর বৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আঁকা অন্ধকার মেঘ।

৭. কেনেথ ডাইক লাইব্রেরি, নাইজেরিয়া–১৯৫৪

ছবি: ইয়াইন জ্যাকসন

গ্রন্থাগারটি নকশা করেছিলেন ইংল্যান্ডে আধুনিক আন্দোলনের পথিকৃৎ ম্যাক্সওয়েল ফ্রাই এবং জেন ড্রু। এটি ইবাদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অংশ।

১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ এটি প্রতিষ্ঠা করে। বিশেষ বৈশিষ্ট্যের গ্রন্থাগারটি সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে একটি ভবনের মধ্যে তাপ কমিয়ে আনে।

৮. মালির বিখ্যাত মসজিদ জেনি, ত্রয়োদশ শতাব্দী

এ মসজিদটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাটির তৈরি কাঠামো। মসজিদটি জেনি শহরের প্রতীক,যা থেকে ৮০০ থেকে ১২৫০ সালের মধ্যে বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়েছিল।

ভবনটির মসৃণ ভাস্কর্যযুক্ত দেয়ালগুলো রোদে শুকানো ইট, বালি, মর্টার ও প্লাস্টারের একটি কোট দিয়ে নির্মিত।

প্রতি বছর শহরের অধিবাসীরা সাম্প্রদায়িকভাবে একটি একদিনের ইভেন্টের সময় মসজিদটি পুনরায় প্লাস্টার করে যা ক্র্যাপিসেজ দে লা গ্র্যান্ড মসজিদ (গ্রেট মসজিদের প্লাস্টারিং) নামে পরিচিত।

৯.সম্রাট ফ্যাসিলাইডের প্রাসাদ, ইথিওপিয়া- ১৭ শতকের শুরু

প্রাসাদটি ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর গন্ডারে অবস্থিত, যা ‘ফাসিল ঘেবি’ (রয়েল এনক্লোসার) নামে পরিচিত।

এতে রয়েছে একটি দুর্গযুক্ত প্রাঙ্গন।রয়েছে ২০টি প্রাসাদ, রাজকীয় ভবন, বিস্তৃতভাবে সাজানো গীর্জা, মঠ ও অন্য কিছু ভবন।

এই ভবনগুলোর নকশা জেসুইট মিশনারিদের গন্ডারে আনা বারোক শৈলী দিয়ে প্রভাবিত হয়েছিল।

১০. ডোমিনিকান চ্যাপেল, নাইজেরিয়া-১৯৭৩

শিল্পী দেমাস নোভোকো ভাস্কর্য উপাদান, আর আধুনিকতার সঙ্গে নাইজেরিয়ান স্থানীয় ভাষাশৈলীর স্থাপত্যের মিশ্রণ ঘটিয়েছেন।

আছে খোদাই করা কাঠের কলাম। ছোট রেলিং আর গেটগুলোতে বিস্তৃত ধাতব কাজও রয়েছে।

১১. গ্রেট মসজিদ, বেনিন–(১৯১২-১৯৩৫)

বেনিনের রাজধানী পোর্ট-নভোতে অবস্থিত মসজিদটি উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলীয় রাজ্য বাহিয়াতে ১৭ ও ১৮ শতকের গির্জার আদলে নির্মিত আফ্রো-ব্রাজিলীয় স্থাপত্যের একটি আকর্ষণীয় উদাহরণ।

উজ্জ্বল হলুদ, বাদামী, সবুজ এবং নীল রঙের এ প্যালেট বাহিয়ার ঐতিহাসিক স্থাপত্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

এটি পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল বরাবর আফ্রো-ব্রাজিলিয়ান মসজিদের একটি।

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মুক্তি পাওয়া ক্রীতদাসদের বংশধর দিয়ে বানানো হয় এ মসজিদ।

১২. মাপুংগুবে ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার, সাউথ আফ্রিকা-২০০৯

মাপুংগুয়ে ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে একটি পাথুরে ল্যান্ডস্কেপে অবস্থিত কেন্দ্রটি। ওয়ার্ল্ড আর্কিটেকচার ফেস্টিভালে সাউথ আফ্রিকার স্থপতি পিটার রিচ ২০০৯ ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড জিতেছে এই স্থাপত্যের জন্য।

মাটির মিশ্রণ তৈরির জন্য নির্মাণস্থল থেকে মাটি ও পাঁচ শতাংশ অতিরিক্ত সিমেন্ট ব্যবহার করে ইট তৈরি করা হয়েছিল এর জন্য।

এ বিভাগের আরো খবর