দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভ। অভিনয় করছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে। জীবনীভিত্তিক সিনেমাটির নাম বঙ্গবন্ধু। নূর নামের একটি সিনেমার কাজ একদম শেষ পর্যায়ে।
তার অভিনীত মিশন এক্সট্রিম সিনেমাটি মুক্তি পাবে ৩ ডিসেম্বর। রোববার সিনেমাটির ট্রেলার প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে আরিফিন শুভকে দেখা গেছে নতুন ঘটনায় নতুন কাজের চ্যালেঞ্জ নিতে।
এ তিন সিনেমাসহ আরও কিছু বিষয়ে আরিফিন শুভ কথা বলেছেন মিশন এক্সট্রিম সিনেমার ট্রেলার প্রকাশের রোববারের অনুষ্ঠানে।
মিশন এক্সট্রিম সিনেমার ট্রেলার প্রকাশ পেয়েছে, কেমন লাগছে?
মিক্সড ফিলিংস বলা যেতে পারে। আমি হ্যাপি, এক্সাইটেড, নার্ভাস, হোপফুল সবকিছু।
ভালো সিনেমা নেই, প্রেক্ষাগৃহে দর্শক যাচ্ছে না। পরিস্থিতিটা কেমন মনে হচ্ছে আপনার। মিশন এক্সট্রিম তো বিগ বাজেটের সিনেমা।
৮৮ সালে যখন বন্যা হয়েছিল, সেই বন্যার পরেও সিনেমা হলে দর্শক গেছেন এবং দেখেছেন। এটা এই কারণে বললাম যে, দর্শক যার কাজ দেখতে ভালোবাসেন, যাদের ওপরে আস্থা আছে দর্শকদের, যাদের কাজে দর্শকরা মনে করেন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখলে ইন্টারেস্টিং স্টোরি পাওয়া যাবে, বিনোদিত হওয়া যাবে, তাদের কাজ দর্শকরা দেখতে যাবেন এবং মিশন এক্সট্রিম মানুষের সেই এক্সপেকটেশন পুরণ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মিশন এক্সট্রিম সিনেমায় আরিফিন শুভর সঙ্গে ঐশী। ছবি: সংগৃহীতসিনেমার প্রেক্ষাপটে জঙ্গিবাদ কতটা গুরুত্ব পেয়েছে? নাকি পুরোটাই?
আমাদের গল্পের ব্যাপ্তিটা অনেক বড়। যে কারণে সেটা আমরা একটা সিনেমাতে শেষ করতে পারিনি। সে কারণে এটা দুটো সিনেমা হয়েছে। গল্পটা সেকেন্ড পার্টে গিয়ে শেষ হয়। আবার আলাদাভাবে দুটি সিনেমাই পূর্ণাঙ্গ।
ব্যাপ্তিটা এত বড় বলেই ডিটেইল করে দেখাতে চেয়েছি যে গল্পটা জঙ্গিবাদ এবং সেটার সূত্রপাত এবং সেটার বিস্তার এবং সেটাকে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে দেশকে রক্ষা করছেন জঙ্গিবাদ থেকে, তার একটা বড়ভাবে ব্যাখ্যা করবার চেষ্টা করেছেন আমাদের পরিচালকরা।
বিদেশি সিনেমায় আন্তর্জাতিক চক্রের বিষয় উঠে আসতে দেখা যায়। দেশের সিনেমায় এমন ঘটনা তেমন একটা দেখা যায় না। মিশন এক্সট্রিমে তেমন কিছু আছে কি?
হ্যাঁ, মিশন এক্সট্রিম সিনেমায় তেমন কিছু আছে। আমরা শুধু বাংলাদেশকে ইনভলব দেখাচ্ছি না। এই ষড়যন্ত্র বা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা অথবা এই যে জঙ্গিবাদ, এই বিষয়টাকে আমরা শুধু আমাদের দেশের পরিমণ্ডলে দেখাচ্ছি না। সেটা আমাদের দেশের সঙ্গে অন্য দেশের যে সম্পৃক্ততা, এই জঙ্গিবাদকে আরও লেলিয়ে দেয়ার জন্য অথবা আরও মদদ দেয়ার জন্য, সেই দিকটাও সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছে।
মিশন এক্সট্রিম বাংলাদেশের সঙ্গে দেশের বাইরেও মুক্তি পাচ্ছে। তারা সিনেমাটা কীভাবে নেবে বলে মনে করেন?
আমি ব্যক্তিগতভাবে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় আমার সিনেমা প্রদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে তারা আমার প্রত্যেকটা সিনেমা খুব সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছে এবং আনন্দিত হয়েছে। আমাকে তারা উৎসাহ জুগিয়েছে। সেটা ছুঁয়ে দিলে মন বা ঢাকা অ্যাটাক।
আশা করছি মিশন এক্সট্রিমেও সেই সাপোর্ট এবং ভালোবাসাটা পাব। কারণ এযাবৎকালে এত ব্যাপক ধরনের একটা বৃহৎ পরিসরে করা সিনেমা আমার এটাই প্রথম বঙ্গবন্ধু ছাড়া।
বঙ্গবন্ধু সিনেমায় আরিফিন শুভ অভিনয় করছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চরিত্রে। ছবি: সংগৃহীতবঙ্গবন্ধু সিনেমার আপডেট জানতে চাই। কী অবস্থায় আছে সিনেমাটি?
নভেম্বর-ডিসেম্বরে সিনেমাটির শেষ অংশের শুটিংটা হচ্ছে এবং আমরা আশা করছি যে বঙ্গবন্ধু সিনেমাটা আগামী বছর প্রথম কোয়ার্টারে গোটা পৃথিবীকে দেখাতে পারব।
সিনেমায় আপনি এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন বলে শোনা যায়। কেন এক টাকা নিলেন?
পারিশ্রমিক নিচ্ছি না, এ কথা ঠিক না। এখানে আমার শ্রম-মেধা আছে আর আমি ফ্রি তে কাজ করি না। আমি এক টাকা নিচ্ছি।
বিদেশে গেলে আমাদের পাসপোর্টে যে দেশের নাম লেখা থাকে, সেই দেশটির স্বপ্ন যিনি দেখে গেছেন, যে দেশটি তিনি দিয়ে গেছেন, তার চরিত্রে অভিনয় করার চেয়ে বড় বিষয় তো আর শিল্পী হিসেবে, বাংলাদেশি হিসেবে একজন মানুষ হিসেবে থাকতে পারে না।
অভিনেতা আরিফিন শুভ। ছবি: সংগৃহীতসিনেমার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শারীরিক গড়নও পরিবর্তন করতে হয়। কীভাবে করেন?
আমার কোনো সিক্রেট নেই। আমাকে কাঙাল বলতে পারেন, আমি ভালোবাসার কাঙাল। সেই ভালোবাসার লোভে একেকবার একেক রূপ নেয়ার এক ধরনের প্রয়াস থাকে।
আমি আমার দর্শকদের উদ্দেশে একটা ছোট বার্তা দিতে চাই, প্রথমে মিশন এক্সট্রিম, তারপরে হয়তো বঙ্গবন্ধু, তারপরে নূর এবং তিনটি গল্পই একেবারেই তিন ধরনের এবং সেটার প্রমাণ আমি যে ফাঁকা আওয়াজ দিই না সেটার প্রমাণ আপনারা দ্রুত পেয়ে যাবেন।
মিশন এক্সট্রিম দিয়ে শুরু হচ্ছে, তারপর বঙ্গবন্ধু সিনেমার লুক যখন বের হবে, তখন আপনারা দেখবেন আপনাদের চোখের সামনে থাকবে সেটা। তারপর যখন নূর সিনেমার লুক প্রকাশ পাবে সেটাও দেখবেন।
নূর সিনেমার আপডেটটাও জানতে চাই।
নূর সিনেমার দৃশ্যধারণ শেষ হয়ে যাবে আর তিন দিন পরে। এটা প্রেমের গল্প।
সিনেমায় আপনি নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। কেমন দায়িত্বটা?
খুবই কঠিন। তবে আমি অনেক কিছু শিখলাম, যেটা আমার নিজের প্রোডাকশনে আমাকে সহায়তা করবে। আমার নিজস্ব প্রোডাকশন, যেখানে আমার ভাবনাগুলো তুলে ধরব, সেটার জন্য এটা একটা স্কুলিং হিসেবে কাজ করবে।
অভিনেতা আরিফিন শুভ। ছবি: সংগৃহীততাহলে কি আপনাকে প্রযোজক হিসেবে দেখা যাবে?
দেখা যাক।
নতুন কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন কি?
বঙ্গবন্ধু শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলতে পারছি না। তবে বঙ্গবন্ধু সিনেমার শুটিংয়ের পর দেশের বাইরের একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করার কথা রয়েছে।