দেশের খ্যাতিমান নাট্যকার, অভিনেতা, লেখক ও শিক্ষক ড. ইনামুল হকের জানাজা শেষে মঙ্গলবার বাদ জোহর রাজধানীর বনানী করবস্থানে দাফন করা হবে।
ইনামুল হকের বড় জামাতা লিটু আনাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বেইলি রোডের বাসায় প্রথম জানাজা হবে। দ্বিতীয় জানাজা হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিল্পকলা একাডেমিতে।’
রাতে ফ্রিজার ভ্যানে মরদেহ তার বাসার কমপাউন্ডেই রাখা হবে বলেও জানান লিটু আনাম।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে মরদেহ নেয়া হবে শহীদ মিনারে। সেখানে সবাই শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর সেখান থেকে বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।’
সোমবার বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ড. ইনামুল হককে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনীর সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৪৩ সালের ৭ মার্চ জন্ম ইনামুল হকের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শেষ করে ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রসায়ন বিভাগে। ১৯৮৭ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশ নেন ইনামুল হক। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন নাট্যচর্চাকে হাতিয়ার করে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সৃজনীর ব্যানারে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন ইনামুল। তার ১৮টি নাটক বিভিন্ন নাট্যপত্র, বিশেষ ম্যাগাজিন এবং বই আকারে প্রকাশ হয়েছে।
ইনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে নির্জন সৈকতে, গৃহবাসী, মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র।
ড. ইনামুল হকের দাম্পত্যসঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক।
২০১২ সালে একুশে পদক এবং ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন ইনামুল হক।