বাংলার নকশিকাঁথার সুনাম সেই প্রাচীনকাল থেকেই। গ্রামীণ নারীরা ঘরে ঘরে কাঁথা সেলাই করে তাতে আশ্চর্য নিপুণতায় গল্পকাহিনী ও ছবি ফুটিয়ে তোলেন। এবার নারীরা সুই-সুতার কাব্যে ফুটিয়ে তুলেছেন মুক্তিযুদ্ধকে। সুতায় বোনা প্রতিটি ক্যানভাসে জীবন্ত হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সোমবার দিনব্যাপী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চের পাশে আয়োজন করা হয় নকশিকাঁথায় স্বাধীনতার ইতিহাস চিত্রায়ন। এ আয়োজনে অংশ নেয় নারীদের নিয়ে কাজ করা ১২টি সংগঠনের ১৪টি দল। সুই-সুতার কাজে ফুটে উঠেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, ৭ মার্চের ভাষণের চিত্রসহ ইতিহাসের নানা ঘটনা।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ নারীদের সৃজনশীল এ কাজ নিয়ে বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের নকশিকাঁথা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও সুনাম অর্জন করেছে। এখানকার নারীদের অবসর কাটে নকশিকাঁথা সেলাই করে। এর মধ্যে কেউ কেউ এটিকে জীবিকা নির্বাহের পথ হিসেবেও বেছে নিয়েছেন।
‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে মাথায় রেখে নকশিকাঁথায় স্বাধীনতার ইতিহাসকে ফুটিয়ে তোলার জন্যই এই আয়োজন করা। দিনব্যাপী এ আয়োজনে নারীরা ফুটিয়ে তুলেছেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, সাত বীরশ্রেষ্ঠ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ অনেক কিছু। আজকের এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দিন অনেকেই কাপড়ের ক্যানভাসে সুই আর সুতা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন। কিছু কিছু কাজ শেষ হয়নি, সেগুলো শেষ করে তারা জমা দেবেন। এগুলো আমরা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করব। এর মধ্য থেকে যারা ভালো করেছেন তাদের পুরস্কার দেয়া হবে। সেই সঙ্গে যারা এ উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিতে চান, তাদের প্রশিক্ষণের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করব।’
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) একেএম তাজকির উজ জামান, সহকারী কমিশনার চন্দন কর, সহকারী কমিশনার রুহুল আমিনসহ আরও অনেকে।