বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কালভৈরব মন্দিরে ৩০০ বছরের মহোৎসব

  •    
  • ২০ মার্চ, ২০২১ ২২:৩৯

প্রায় তিনশ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়ার দূর্গাচরণ আচার্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে শহরের মেড্ডা এলাকায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে জীব জগতের কল্যাণ কামনায় প্রতিবছর এই যজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়ে আসছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনশত বছরের প্রাচীন শ্রী শ্রী কাল ভৈরব মন্দিরে চার দিনের সপ্তশতী বার্ষিক মহাযজ্ঞ মহোৎসব শুরু হয়েছে।

শনিবার সকালে বৈদিক পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মহোৎসবের উদ্বোধন করেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি পলাশ ভট্টাচার্য।

বেলা ১২টায় জীব জগতের কল্যাণ কামনায় মহাযজ্ঞ শুরু হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পূজারী, দর্শনার্থী ও ভক্তরা অংশ নেন।

এই উৎসবে মন্দিরের আশেপাশে বসেছে মেলা। এতে নাগরদোলাসহ খেলনাসামগ্রী, মাটির তৈজসপত্র ছাড়াও নানা পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, প্রায় তিনশ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়ার দূর্গাচরণ আচার্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে শহরের মেড্ডা এলাকায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে জীব জগতের কল্যাণ কামনায় প্রতিবছর এই যজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়ে আসছে।যজ্ঞ অনুষ্ঠানের প্রধান পুরোহিত মধুসূদন চক্রবর্তী জানান, করোনা মহামারির কারণে সারা বিশ্বে অস্থিরতা কাটানোর জন্য প্রার্থনা করছেন তারা।

মন্দিরে আসা ভক্ত খেলা রানী বিশ্বাস বলেন, ‘মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি, তিনি যেন সকলের মঙ্গল করেন। আমাদের সবাইকে ভালো রাখেন।’প্রতিমা রানী দাস নামে আরেক ভক্ত বলেন, ‘প্রতি বছরই মন্দিরে আসি। এবারও এসেছি, চন্ডী মায়ের কাছে। প্রার্থনা করি, তিনি যেন দেশবাসীকে ভালো রাখেন।’মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শ্রী নারায়ন চক্রবর্তী বলেন, ‘চন্ডী শব্দ এসেছে চন্ড থেকে। চন্ড মানে উগ্র। এই চন্ডকে স্ত্রীলিঙ্গ করে চন্ডী করা হয়েছে। উগ্রচন্ড সব সময় রাগান্বিত থাকেন। তাকে তুষ্ট করার জন্যই মূলত প্রার্থনার আয়োজন।’

মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি পলাশ ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘মহামারি থেকে মুক্তি পেতে পঞ্চমুন্ডি মায়ের কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।’

এবারে যজ্ঞ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মহামারির কারণে এ বছর বিদেশি ভক্তদের সমাগম হচ্ছে না। করোনার কারণে এবার কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা অর্চনা করা হচ্ছে।

তিতাস নদীর কূল ঘেঁষা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ৩০০ বছরের পুরোনো মন্দির হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র। হিন্দু দেবতা শ্রী শ্রী কাল ভৈরবের মূর্তি এই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ।

১৯০৫ সালে নির্মিত ২৮ ফুট উচ্চতার কাল ভৈরব বা শিব মূর্তি ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি হিসেবে ধরা হয়। মূর্তির ডান দিকে কালী এবং মূর্তির বাম দিকে দেবী পার্বতীর প্রতিমা রয়েছে।

সরাইলে বিখ্যাত জমিদার নূর মুহাম্মদ মন্দিরের জন্য জমিটি দান করেন। জনশ্রুতি আছে, কালীশ্বর শ্রী শ্রী কালভৈরবের আবির্ভাবের পর স্বপ্নে আদেশ পেয়ে স্থানীয় দূর্গাচরণ আচার্য মাটি দিয়ে নির্মাণ করেন এই অতি বিরাটাকায় কালভৈরবের বিগ্রহটি। তিনি ছিলেন ফুলবাড়িয়া গ্রামের স্থায়ী অধিবাসী এবং প্রখ্যাত মৃন্ময়মূর্তি প্রস্তুতকারক শিল্পী।

তিনি মূর্তির পাশে নির্মাণ করেন শিবের স্ত্রী পার্বতীর মূর্তি।

দুর্গাচরণ প্রথমে তিতাস পঞ্চবঢী মূলে মূতিটি স্থাপন করে পুজার্চনার ব্যবস্থা করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কালভৈরবের বিগ্রহটি ডিনামাইটে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পাকিস্তান বাহিনী। এতে পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যুদ্ধ শেষে চার বছরের চেষ্টায় আবার মূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত হয়।শ্রী শ্রী কালভৈরব মূর্তিটির পাশে ছিল শ্রী শ্রী কৈলাশ্বেশ্বর শিবলিঙ্গ, যা ১০৫ বছরের পুরনো। এটি ১১ কেজি ওজনের কষ্টি পাথরের মূর্তি।

মন্দিরের বাম পাশে এই শিবলিঙ্গ মন্দিরটি আলাদা ভবনে অবস্থিত।

২০০৯ সালের ১২ জুন মন্দিরের তালা ভেঙে শিবলিঙ্গটি চুরি করে নেয়া হয়। ১৯ অক্টোবর শহরের পুনিয়াউট এলাকা থেকে সেটি উদ্ধার করে র‌্যাব।

এ বিভাগের আরো খবর