বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশ-ভারত সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ

  • খালেদ সাইফুল্লাহ   
  • ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:৪৩

উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল উন্নতি অর্জন করায় এখন দুটি দেশই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভাবছে, যাকে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট বা সেপা হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এ চুক্তির পর বাংলাদেশে ভারতের অবাধ বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে। ফলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হবে।

গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বিস্তৃত করার ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর বাণিজ্যিক অংশীদার ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ধীরে ধীরে বেড়েছে। গত এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।

উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল উন্নতি অর্জন করায় এখন দুটি দেশই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভাবছে, যাকে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

এ চুক্তির পর বাংলাদেশে ভারতের অবাধ বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে। ফলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হবে। পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি সেবা রপ্তানির সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। ভারতের বিশাল বাজারে এই সুবিধা পেলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারবে।

বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সেপা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বানিজ্য অঞ্চলের (সাফটা) মতো আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তির অকার্যকারিতার কারণেও এটি আলোচিত হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে সেপার সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য একটি যৌথ কমিশন গঠন করা হয়, যার কাজ ছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন করা।

এর মধ্যে ২০২১ সালের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময়ে দুই দেশই নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে সম্মত হয়। সে সময় যৌথ বিবৃতিতে ট্যারিফমুক্ত বাণিজ্যের প্রয়োজনীয়তা, বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি ও প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বাংলাদেশ থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সফরের ব্যাপারগুলো উঠে আসে।

এই চুক্তিতে পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ— এই তিনটি দিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভারতে এখন শুধু পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। সেপার পর সেবা রপ্তানি উন্মুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। বিশেষ করে ব্যাংক ও বিমা সার্ভিসের পরিধি বাড়বে।

সেপার প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির লাগাম টানা এবং নতুন অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো উন্মোচন করা, যার মধ্যে আছে সংযোগ, নতুন বাজার, সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব। এ ছাড়া উপআঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বহুমুখী সংযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এ চুক্তির ফলে অ্যান্টি ডাম্পিং ও রুলস অব অরিজিন শুল্ক বসিয়ে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার সুযোগ থাকবে না। ফলে দুই দেশই সেপার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী ব্যবসা সহজ করতে রেলওয়ে, সড়ক ও বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন, সীমান্ত হাট ও বহুমুখী যোগাযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ চুক্তির আওতায় পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া এই চুক্তির আওতায় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর মতো নতুন ক্ষেত্রগুলোর উন্নতিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। সেপার মাধ্যমে নতুন নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এটি দ্বিমুখী বাণিজ্যের প্রভূত উন্নতি সাধন করবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত অংশীদারত্ব শক্তিশালী করার জন্য এই চুক্তি চারটি দিকে ফোকাস করে। এগুলো হলো যোগাযোগ ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন বজায় রাখা, প্রতিরক্ষা সামগ্রীর যৌথ উৎপাদন, বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো উন্মোচন এবং ভ্যাকসিন ও অন্যান্য ওষুধ সামগ্রীর যৌথ উৎপাদন।

সেপার সম্ভাবনা

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেপা সম্ভাবনার নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। চুক্তির প্রথম বছরেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে ৫ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার। চুক্তিটি ব্যবসা-বাণিজ্য, সাপ্লাই চেইন ও উৎপাদনের বিকাশে যৌথভাবে কাজ করার ফলে আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসা সম্পর্কিত নিয়ম-কানুনের সংস্কারসহ দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতির সূচনা হবে।

পরিবহন খরচ কম ও সময় সাশ্রয়ের কারণে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা একই পণ্যের জন্য দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোর বদলে ভারতমুখী হবে। সেপা বাস্তবায়ন হলে এর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্ভাবনা হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার। ভারতের সেবা ও বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির শক্তিশালী সম্ভাবনা সেপা বাস্তবায়ন হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের জন্য সেপা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ। আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব (আরসিইপি) থেকে সরে আসার পর থেকে ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার চেষ্টা করছে।

দ্বিতীয়ত, এ চুক্তি দ্বিপক্ষীয় ও উপআঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি করবে যা বাংলাদেশ তাদের পলিসি ইনিশিয়েটিভের মধ্যে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংযোগই সমৃদ্ধি। সেপা বেশ কিছু দিক দিয়ে যোগাযোগের উন্নতি ঘটাবে, যা ভবিষ্যৎ এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে।

বিবিআইএন, বিসিআইএম এবং বিমসটেক ভারত ও বাংলাদেশকে পেট্রাপোল-বেনাপোল, ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা ও ডওকি-তামাবিল পয়েন্টে সংযুক্ত করেছে। এ ছাড়াও আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের মাধ্যমে সংযোগ ঘটেছে। এ চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ব্যক্তিগত, যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী কার্গো বাহনগুলো সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবে। এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে, যেখানে পণ্যের দাম অন্তত ৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।

ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও ট্রানজিট নতুন নতুন অর্থনৈতিক কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করবে, যার ফলে মানুষের আয় বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভোক্তাদের ব্যয় কমে আসবে।

এই সংযোগের মাধ্যমে আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুফল আসবে। যেমন: বিমসটেক চুক্তির মাধ্যমে থাইল্যান্ডের র‌্যানং বন্দরের সঙ্গে চেন্নাই, বিশাখাপাটনাম ও কলকাতা বন্দর সংযুক্ত হবে। বিমসটেকের নৌ-পরিবহন চুক্তি ও মুক্তবাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ২ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সংযুক্ত হবে। ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে পিটিএ ও এফটিএ সম্পাদনের পথ তৈরি করবে। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।

তৃতীয়ত, এই চুক্তির মাধ্যমে সহযোগিতা ও অংশীদারত্বের নতুন জায়গা তৈরি হবে এবং যৌথ উৎপাদন হাব ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন তৈরির সুযোগ তৈরি হবে। এটি উভয় দেশের জন্য নতুন বাজার তৈরি করবে ও নতুন নতুন বিনিয়োগ আসতে থাকবে।

বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেছে এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলো টেলিযোগাযোগ, ওষুধ, এফএমসিজি ও অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে।

সেপা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে এবং এ ধরনের বিনিয়োগ নতুন মাত্রা পাবে। এ চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশের রাসায়নিক সার, পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত মৎস্য পণ্য ও তৈরি পোশাক সহজলভ্য হবে।

চতুর্থত, অনুন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের মর্যাদা লাভের জন্য বাংলাদেশকে যেসব ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করতে হবে, এই চুক্তি সেসব ক্ষেত্রগুলোতে নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

দুই দেশের স্থলভাগ ও জলসীমায় সংযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেরই আয় বৃদ্ধি পাবে। পণ্য, সেবা ও জনসাধারণের বিনিময় বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটন ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ ঘটবে, যা দুই দেশেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মানবসম্পদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। দুই দেশেরই ওষুধ শিল্প সমৃদ্ধ হওয়ায় যৌথ ওষুধ পণ্য ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের ফলে উভয়ই লাভবান হবে।

করণীয় কী

ভারত-বাংলাদেশ উভয়ের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সেপা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এই চুক্তির পূর্ণ সফলতার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রথমত, যেকোনো অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির পূর্ণ ফলাফল পাওয়ার জন্য অবকাঠামোগত অবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিময়ের পূর্বশর্তই এটি।

দ্বিতীয়ত, দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য যাবতীয় অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।

তৃতীয়ত, দুই দেশের মধ্যকার পরিবহন নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে যোগাযোগ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

চতুর্থত, পারস্পরিক লাভের জন্য ট্যারিফ ও নন ট্যারিফের বাধ্যবাধকতা ও রুলস অফ অরিজিন উঠিয়ে দিতে হবে। পাটজাত পণ্যের ডাম্পিং ও অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক, কাস্টমসের বিড়ম্বনা, নো ম্যান্স ল্যান্ডে পণ্যের লোডিং ও আনলোডিংয়ের সমস্যাগুলোকে বিবেচনা করতে হবে।

পঞ্চমত, ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ খাতগুলোর উন্নতিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

ষষ্ঠত, আইনি বাধ্যবাধকতাও এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে অন্তত ৯০ শতাংশ পণ্য ও সব ধরনের সেবা পরিবহনে সমস্ত বর্ডার ডিউটি ও বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিতে হবে।

সপ্তমত, মুক্তবাণিজ্যের পূর্ণ সফলতা পেতে হলে একটি দেশের রপ্তানি খাতের বৈচিত্র্য থাকতে হবে, যা দিয়ে সে বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে পারে।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশই পোশাক পণ্যের দখলে এবং এগুলো মূলত উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে রপ্তানি হয়ে থাকে। ভারতের বাজারে এসব পণ্যের চাহিদা কম। তাই সেপার সফলতার জন্য রপ্তানি খাত আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা সেপা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেন কোনোরূপ প্রভাব না ফেলে তা খেয়াল রাখতে হবে। ২০১৮-১৯ সালে বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তিতে যোগদানে ভারতের বিরুদ্ধে সুপারিশ করেছিল।

দুই দেশের ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিবেচনায় সেপা একটি গেম চেঞ্জিং চুক্তি হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিযাত্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে যোগাযোগ এবং আর্থ-সামাজিক থেকে অবকাঠামো খাতে এই চুক্তি নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।

বিস্তৃত উৎপাদন ব্যবস্থা ও আঞ্চলিক বাজার সৃষ্টির জন্য বাণিজ্য, পরিবহন ও বিনিয়োগের ত্রিমাত্রিক উন্নয়নে গঠনমূলক পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য একটি সময়োপযোগী পরিকল্পনা নেয়া ও সে অনুযায়ী কাজ করা জরুরি।

লেখক: স্বাধীন গবেষক ও কলামিস্ট

এ বিভাগের আরো খবর