বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাসই আনতে পারে জয়মাল্য

  •    
  • ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:২৫

এই জয় হয়তো অনেক বার্তা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এবং বিশ্ব ক্রিকেটকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বার্তা হচ্ছে- ক্রিকেটের মূল মঞ্চ টেস্ট। দীর্ঘ ইনিংস খেলে ক্রিজে টিকে থাকার অভ্যাস করলে, সাদা পোশাকেও বাংলাদেশ ভালো করার ক্ষমতা রাখে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা প্রথম ইনিংস ভালো করলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে চুপসে যাওয়া। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেন না। প্রথম ইনিংসেও ত্রুটি আছে, উপরের সারির ব্যাটসম্যানরা, বিশেষ করে উদ্বোধনী জুটি সাজঘরে ফিরে আসে পোশাকে ধুলো বসার আগেই। লড়াইটা বরাবর বোলাররাই করে যান। মঙ্গানুইতে এর ব্যতিক্রম হলো বলেই জয় এল। এই ব্যতিক্রমটি যেন ব্যতিক্রম রয়ে না যায়।

রোদ পোহাতে কাচ ঘেঁষে দাঁড়ালাম। কাচে এসে পড়া সূর্যরশ্মি বেশ উষ্ণতা দিচ্ছে। আমার সামনেই তখন সহকর্মীরা মেতে আছে মধ্যাহ্নভোজে। সেখানে উষ্ণতা ছড়াচ্ছিল ক্রিকেট তর্ক। বাংলাদেশ শেষ হাসিটা হাসতে পারবে তো? নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের একটি অধ্যায় হিসেবে নিজেকে প্রায় প্রস্তুত করে নিয়েছে। সহকর্মীদের একপক্ষ বলছিল- বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত। অন্যপক্ষ বলছিল- জয়ের এমন দুয়ার থেকে বাংলাদেশ বহুবার ফিরে এসেছে।

উৎসবের রং মাখিয়েও উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠা যায়নি। অনাকাঙ্ক্ষিত আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইতেও এই ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কিন্তু না, বাংলাদেশ জয়ের জোয়ারে ভাসছে এখন। এর আগে সহকর্মীরা বলছিল টেস্টতো গণিতের খেলা। তাই অঙ্ক কষে সহকর্মীদের একটি বড় অংশ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে, কোনো কোনো পরীক্ষা থাকে যেখানে ইচ্ছে করলেও অকৃতকার্য হওয়া যায় না। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে বাংলাদেশ সেই পরীক্ষারই মুখোমুখি হয়েছিল, বাংলাদেশে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই তার প্রমাণ পাওয়া গেল। ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। টেস্টে টানা সতেরো ম্যাচ অপরাজিত থাকা নিউজিল্যান্ডকে তাদের জমিনেই বধ করল বাংলাদেশ।

এই জয় হয়তো অনেক বার্তা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এবং বিশ্ব ক্রিকেটকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বার্তা হচ্ছে- ক্রিকেটের মূল মঞ্চ টেস্ট। দীর্ঘ ইনিংস খেলে ক্রিজে টিকে থাকার অভ্যাস করলে, সাদা পোশাকেও বাংলাদেশ ভালো করার ক্ষমতা রাখে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা প্রথম ইনিংস ভালো করলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে চুপসে যাওয়া।

বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেন না। প্রথম ইনিংসেও ত্রুটি আছে, উপরের সারির ব্যাটসম্যানরা, বিশেষ করে উদ্বোধনী জুটি সাজঘরে ফিরে আসে পোশাকে ধুলো বসার আগেই। লড়াইটা বরাবর বোলাররাই করে যান। মঙ্গানুইতে এর ব্যতিক্রম হলো বলেই জয় এল। এই ব্যতিক্রমটি যেন ব্যতিক্রম রয়ে না যায়। যেন ধারাবাহিকতা থাকে। দ্বিতীয় টেস্টও বাংলাদেশ জিতবে, এমন প্রত্যাশা ও দাবি করছি না। চাই শুধু ম্যাচটি পুরো পাঁচ দিনের হোক। ব্যাটসম্যানরা তাদের দায়িত্ব পালন করুন। বোলার ও ফিল্ডাররা থাকুক আপন ছন্দে। তাতে জয় না এলেও আমরা উপভোগ্য ক্রিকেট দেখার সুযোগ পাব।

ক্রিকেট, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেট যে অহংবোধ ও তারকানির্ভর খেলা নয়, তারও প্রমাণ মিলল মঙ্গানুইতে। কোনো কোনো তারকা খেলোয়াড় হয়তো ধরেই নিয়েছিলেন অতীত অভিজ্ঞতায়, নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের ভরাডুবি ঘটবে। তাই সেই কলঙ্কের সঙ্গে নিজেদের জড়াতে চাননি। হয়তো ভরসা ছিল না নিজেদের ওপরও। তাই তারা সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাসকিন, ইবাদত, মাহমুদুল হাসান জয়, মমিনুল, মুশফিক, লিটন, ইয়াসির, মেহেদী নিজেদের প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। কোনো তারকার শূন্যতা বোধ করেননি। খেলে গেছেন, যেভাবে খেলতে হয় টেস্ট। যেভাবে মেলে ধরতে হয় নিজেকে। তাদের সেই মেলা ধরাতেই বাংলাদেশ ছুঁতে পেরেছে বিজয়।

বিজয়ের এই জয়ধ্বনিকে দীর্ঘ করতে প্রয়োজন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গোছানো যত্ন। একই সঙ্গে ক্রিকেটারদের বিনীত ও শৃঙ্খল যাপন অনুশীলন। তাহলে যেকোনো পরিসরের ক্রিকেটেই বাংলাদেশ জয়ধ্বনির উপলক্ষ তৈরি করবে।

লেখক: সাংবাদিক, কলাম লেখক।

এ বিভাগের আরো খবর