বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইনডেমনিটি বাতিল: কলঙ্কমোচনের এই দিন

  • নাসির আহমেদ   
  • ১২ নভেম্বর, ২০২১ ১৭:৩৯

জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত না থাকেন, তাহলে কেন তিনি ঘাতকদের রক্ষার অবৈধ অধ্যাদেশকে পরবর্তীকালে আইনি বৈধতা দেবেন? জিয়া ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশকে আইনি বৈধতা না দিলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যেত আজ থেকে ৪২ বছর আগেই। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের জন্য অপেক্ষা করার কোনো প্রয়োজন হতো না।

দিন আসে দিন যায়, কিন্তু সব দিন মনে রাখে না মানুষ। কোনো কোনো দিন ইতিহাসে ঠাঁই পেয়ে যায় স্মরণীয় ইতিবাচক ঘটনার জন্য, যেমন ৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর ইত্যাদি।

আবার কোনো কোনো দিন নেতিবাচক ঘটনার সাক্ষ্য হয়ে থাকে। যেমন গণহত্যার ২৫ মার্চ, জাতির পিতাকে হত্যার ১৫ আগস্ট। কথাগুলো মনে এল ১২ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে। ১৯৯৬ সালের এই দিনে জাতিকে বিচারহীনতার কলঙ্ক থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল জাতীয় সংসদে কালো আইন ইনডেমনিটি বাতিলের বিল পাসের মধ্য দিয়ে।

এই দিনে অনেকের মনে পড়বে ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের কথাও। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েক লাখ আদম সন্তান প্রলয়ংকরী জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল এদিনে। স্বজনহারানোর গভীর শোকের স্মৃতি নিয়ে দিনটি প্রতিবছর আসে উপকূলবাসী মানুষের কাছে।

সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচনের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে এমন বিপর্যয় কল্পনাও করেননি কেউ। পাকিস্তানি শাসকরা কেউ না গেলেও মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধুসহ অনেকে ছুটে গিয়েছিলেন উপকূলে। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের তরফ থেকে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালান।

যাহোক সে প্রসঙ্গ আজ আলোচ্য নয়, আলোচনায় থাকতে চাই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের স্মৃতিময় ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর নিয়ে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক অধ্যাদেশ জারি করে খুনিদের বিচার করা যাবে না মর্মে দায়মুক্তির ব্যবস্থা করেছিল ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই সেই অধ্যাদেশকে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে আইনে পরিণত করে। যে কারণে বিচারের পথ রুদ্ধ হয়ে যায় সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার।

বিশ্বের বহু দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান ঘাতকের হাতে নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বহু দেশে রাষ্ট্রপ্রধান হত্যার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাতে সংবিধান-নির্দেশিত পথে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। অর্থাৎ সরকার পরিবর্তিত হয়েছে, কিন্তু যে ঘাতকরা তাদের হত্যা করেছে তাদের বিচারের পথ রুদ্ধ করার জন্য দুনিয়ার কোথাও সংবিধান সংশোধন করে কোনো ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তির আইন প্রণয়নের মতো অমানবিক দৃষ্টান্ত নেই।

দুঃখের বিষয়, শুধু যে বিচারহীনতার সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন মোশতাক- জিয়া সরকার, তা-ই নয়, তারা যা কিছু করেছিল সবকিছুই করেছে সংবিধান লঙ্ঘন করে। রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে উপরাষ্ট্রপতি হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বা সরকারপ্রধান, কিন্তু বাংলাদেশে সব নিয়ম লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক!

যাহোক, সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বিল বাতিলের এই দিনটির সুদূরপ্রসারী প্রভাব এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত হওয়ার প্রসঙ্গে আলোকপাত করা যাক। সপ্তম জাতীয় সংসদে এই কালো আইনটি বাতিল করার পর ক্রুদ্ধ বিএনপি শুধু বিরূপ প্রতিক্রিয়াই ব্যক্ত করেনি, রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে হরতালও ডেকেছিল। এর কারণ একটাই, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার থেকে মুক্ত রাখা এবং নিজেরাও মুক্ত থাকা।

যারা বলেন: ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ। বিএনপি এর জন্য দায়ী নয়। বিএনপির তখন জন্মও হয়নি।’ বিএনপির যদি কোনো দায়ভার না থেকে থাকে তাহলে তারা কেন এই কালো আইন বাতিল করার পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল, প্রতিবাদে কেন ডেকেছিল হরতাল? কথায় বলে কান টানলে মাথা আসে। মোশতাক টানলেও জিয়া আসেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ষড়যন্ত্রকারী বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক স্বঘোষিত প্রসিডেন্ট হয়ে যে আড়াই মাসের সরকার পরিচালনা করেছিলেন, সেখানে তার ভূমিকা ছিল পুতুল সরকারের। সমস্ত কলকাঠি নেড়েছিল ওই খুনি মেজরচক্র, যারা বঙ্গভবনে মোশতাককে ঘিরে রেখেছিল। তাদের যারা চালিয়েছে অর্থাৎ পর্দার আড়ালের সর্মথকরা ক্যান্টনমেন্টে বসে থাকা কুশীলব। মোশতাক নিজের ইচ্ছায় এক পা-ও ফেলতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গেই স্মরণ করতে হবে যে, বঙ্গবন্ধু হত্যার মাত্র ৯ দিনের মাথায় সেনাপ্রধান জেনারেল সফিউল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধানের পদটি জবরদখল করে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেনাবাহিনী প্রধানের সম্মতি ছাড়া পুতুল প্রেসিডেন্টের পক্ষে সুতাটিও সারানো সম্ভব ছিল না।

সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে জিয়াউর রহমান যে মোশতাক- সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন, তার সবকিছুই ছিল পূর্ব ছকমাফিক। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার দেড় মাসের মধ্যে খুনিদের বিচারের আওতা থেকে মুক্ত রাখতে মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। জেনারেল জিয়ার সম্মতি ছাড়া তা ছিল একেবারেই অসম্ভব, অকল্পনীয় ব্যাপার। দৃশ্যমান সরকারপ্রধান মোশতাক হলেও সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে জেনারেল জিয়াউর রহমানই ছিলেন সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রক।

সুতরাং দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করলে বিএনপি তো ক্ষুব্ধ হবেই, এটাই তো স্বাভাবিক। জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত না থাকেন, তাহলে কেন তিনি ঘাতকদের রক্ষার অবৈধ অধ্যাদেশকে পরবর্তীকালে আইনি বৈধতা দেবেন? জিয়া ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশকে আইনি বৈধতা না দিলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যেত আজ থেকে ৪২ বছর আগেই। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের জন্য অপেক্ষা করার কোনো প্রয়োজন হতো না।

দুটি অংশে বিভক্ত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের ভাষা ছিল কী জঘন্য!

“১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থী যা কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টসহ কোন আদালতে কোন মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।”

দ্বিতীয় অংশটা আরও জঘন্য। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে:

“রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যয়ন করবেন, তাদের দায়মুক্তি দেয়া হলো”।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে অনেক সরকার দেশশাসন করেছে কিন্তু কেউ এই নৃশংস মানবতাবিরোধী আইনটি বাতিলের কথা চিন্তাও করেননি। বরং খুনিদেরকে তারাও লালন-পালন করেছেন, রাজনীতিতে এনে সংসদ সদস্য করেছেন, বিরোধী দলের নেতা করেছেন। বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্য।

এমনকি ওই ইনডেমনিটি আইনের অনুসরণ করেই জেনারেল হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীতে আরেকটি দায়মুক্তি আইন করে নিয়েছেন, যেখানে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ (তার ক্ষমতা দখলের দিন) থেকে ১৯৮৬ সালের ৯ নভেম্বর পর্যন্ত তার সরকারের জারি করা সব সামরিক আইন অধ্যাদেশ, বিধিবিধান, নির্দেশ, বৈধ করিয়ে নেন।

আরও একটি ইনডেমনিটি আইন জাতীয় সংসদে সংবিধানে লিপিবদ্ধ করেন বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে। ‘যৌথ অভিযান দায়মুক্তি বিল ২০০৩’ নামের ওই আইনে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ নামের অভিযানে বিনাবিচারে নিহতদের পরিবারের বিচার চাওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়। বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি কখনও কোনো দেশ বা সমাজের সুস্থতার পরিচয় বহন করে না।

বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কে যাদের সামান্য ধারণা আছে তারাও জানেন যে, দেশের রাষ্ট্রপতির পদশূন্য হলে উপরাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালন করবেন (অনুচ্ছেদ ৫৫)।

উপরাষ্ট্রপতির পদও শূন্য হলে সে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন স্পিকার। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি এবং স্পিকার জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাদের বাদ দিয়ে অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেন এবং সেনাপ্রধান তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেন! অবৈধ রাষ্ট্রপ্রতির জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশও ছিল অবৈধ।

আমাদের সংবিধানে (৯৩ অনুচ্ছেদ) প্রেসিডেন্টের অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা দেয়া আছে, তারও শর্ত দেয়া আছে। “সংসদের আইন ধারা আইন সঙ্গতভাবে করা যায় না, এমন কোনো অধ্যাদেশ বা বিধান করা যাবে না”।

খন্দকার মোশতাক যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন তা যেমন ছিল সংবিধানের দৃষ্টিতে অবৈধ, তেমনি জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্টের আসনে বসে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধ অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিলেন, তাও ছিল অবৈধ। সংবিধানে মানবাধিকার এবং আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার প্রতিটি নাগরিকের জন্য সুরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও এই জঘন্য কালো আইন সংবিধানে ভুক্ত করে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত কাজটি করেছিলেন তারা।

জেনারেল জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী প্রতিটি কর্মকাণ্ড বলে দেয় বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতি তার যেমন সমর্থন ছিল, তেমনি পরবর্তীকালে ঘাতকদের রক্ষার জন্য সংবিধানে আইন প্রণয়ন ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ মিশনে পুনর্বাসনের পদক্ষেপে তার ভূমিকা প্রত্যক্ষ। ১৯৭৯ সালে সংবিধানে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার বিলটি উপস্থাপন করেছিলেন এক কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজুর রহমান যাকে জিয়া প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন তার মন্ত্রিসভায়!

অপরদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারের আইন বিচার ও সংসদ-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন খসরু ইনডেমনিটি আইন বাতিলের বিলটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন ১৯৯৬ সালে। এই দুই বিপরীত চিত্রের মধ্য দিয়ে ওই কালো আইন প্রণয়ন বিল উত্থাপক এবং তা বাতিলের বিল উত্থাপক ব্যক্তিদ্বয়ের পরিচয়েই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির সুস্পষ্ট বিভাজন রেখাটি দৃশ্যমান।

যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাটি করার পরেও বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বাধা প্রদান করেছে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকার। যে জেলা জজ মামলাটির প্রথম রায় ঘোষণা করেছিলেন, ঘাতকদের সহযোগী দ্বারা তিনি এবং তার পরিবারও আক্রান্ত হয়েছিলেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট এসে উচ্চ আদালতে মামলাটির কার্যক্রম স্থবির করে রাখে। যে কারণে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়। ২০০৮-এর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আবার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। আওয়ামী লীগকেই সেই স্থবিরতা দূর করতে হয়েছে।

জেলা জজকোর্ট, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্ট হয়ে মামলাটির বিচার সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু দণ্ডিতদের সকলের রায় আজও কার্যকর করা যায়নি। এখনও ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মামলায় দণ্ডিত ৬ ঘাতক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছে। ১২ নভেম্বরের এই দিনে আমাদের প্রত্যাশা: সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় জড়িত অবশিষ্ট খুনিদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা হবে।

একইসঙ্গে বলতে চাই বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বিশ্বস্ত এবং ঘনিষ্ঠ সহচর চার জাতীয় নেতাকে কারাগারে যারা হত্যা করেছে সেই খুনিদেরও বিচার করা হোক। প্রতিবছর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের ঐতিহাসিক দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করছি। কারণ এই কালো আইন বাতিলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক কালো পর্দাও সরে গেছে। উন্মোচনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনৈতিক মুখোশও। অতএব, ১২ নভেম্বর জাতীয় কলঙ্কমোচনের দিন হিসেবে স্মরণীয় হোক।

লেখক: কবি ও সিনিয়র সাংবাদিক। সাবেক পরিচালক (বার্তা), বিটিভি। উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক দেশের কণ্ঠ।

এ বিভাগের আরো খবর