বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেখ হাসিনা: বঞ্চিত মানুষের ঠিকানা

  • রাজন ভট্টাচার্য   
  • ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৬:১৪

শেখ হাসিনার কাছে আগামী প্রজন্মের প্রত্যাশা হলো- শহর হবে গ্রাম। দুর্নীতিমুক্ত হবে বাংলাদেশ। অব্যাহত থাকবে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান। বেকারত্ব ঘুচবে। সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। রাজনীতি থাকবে প্রকৃত দেশপ্রেমিক মানুষের হাতে। আধুনিক চিন্তা ও সিদ্ধান্তে দেশের গণতন্ত্রের ভিত আরও মজবুত হবে। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আর কোনো প্রশ্ন উঠবে না।

দেশের কোনো এলাকায় যদি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, হত্যা-নির্যাতনসহ যেকোনো বড় রকমের সহিংস ঘটনা বা প্রকৃতিক দুর্যোগের খবরটি দ্রুত গণমাধ্যমে আসে। স্থানীয় প্রশাসন, রাজনীতি হয়ে বার্তাটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কান পর্যন্ত পৌঁছাতেও সময় লাগে না। সামাজিক যেকোনো বড় রকমের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা বা প্রভাবশালীরা দ্বিধা- বিভক্ত হয়। প্রশাসনও শক্তিশালী পক্ষে অনেক সময় অবস্থান নেয়।

সাধারণ মানুষের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী যদি প্রকৃত খবরটি পান তাহলে পরে এর একটা সুষ্ঠু বিহিত হবেই। ন্যায়বিচার পাবেন নির্যাতিত মানুষ। আইনের মুখোমুখি হবে অপরাধীরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে মানুষ আশায় বুক বেঁধে বসে থাকে শেখ হাসিনা পাশে আছেন। সবাই সরকারের সহযোগিতা পাবেন। নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো তাদের জন্য কঠিন কিছু হবে না। সারের সংকট হলে কৃষকরা আশায় থাকেন শেখ হাসিনা জানলে ফসল নষ্ট হবে না। যেকোনো মূল্যে তিনি কৃষি উপকরণের জোগান দেবেন। সমস্যার সমাধান করবেন। জাতির পিতার কন্যা বলে কথা নয়, শেখ হাসিনার প্রতি এখনও অনেকের এমন বিশ্বাস বা আস্থা এমনই। এরকম আস্থার জায়গাটি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অর্জন। যা মানুষের অন্তর থেকেই তৈরি হয়েছে।

দুই.

ঘটনা প্রবাহের দেশ বাংলাদেশ। এখানে সংকটের শেষ নেই। রাত পোহালেই নতুন সমস্যার জন্ম হয়। এগুলো সমাধান হতে না হতেই পুরোনোগুলো ছাপিয়ে নতুন অনেক কিছু সামনে চলে আসে। তাই এদেশের গণমাধ্যম নিয়মিত সুখবর নিয়ে প্রকাশিত হয় না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশ আছে সেখানের গণমাধ্যমে খারাপ খবর লেখার কিছু নেই। সব ভালো, তাই আরও ভালো খবর নিয়ে প্রতিদিন পাঠকের কাছে সংবাদ পরিবেশন করা হয়।

আমাদের দেশে মন্দের ভিড়ে যেমন ভালো খবরগুলো দেয়ার সুযোগ থাকে না, অনেক দেশে ভালো খবরগুলোই মূল খবর। দুএকটি মন্দ ঘটনা ঘটলে সেগুলো সাধারণ ভেবে গণমাধ্যমগুলো অনেক সময় প্রকাশে এড়িয়ে চলে। আবার দুএকটি মন্দ ঘটনা সমাজ, রাষ্ট্র তথা গোটা রাজনীতিকে ভাবিয়ে তোলে। যা সামাধানে সব পক্ষ থেকেই দ্রুত তৎপর হতে দেখা যায়।

পক্ষান্তরে আমাদের দেশে কী দেখা যায়, বছর ধরে সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে। পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। খাদ্যসংকট দেখা দেয়। নানা সংকটের মুখে সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে ওঠে আসে। বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের থাবায় নিঃস্ব হয় মানুষ। অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা-সামাজিক অপরাধ, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ-অর্থনৈতিক সংকট, বিনিয়োগ সমস্যা-গ্যাং কালচার, দখল-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, শ্রমবাজারে ধসসহ বহুমাত্রিক সমস্যা মাথায় নিয়ে সরকারকে পথ চলতে হয়। এর সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও।

এসব সমস্যা তো একদিনে তৈরি হয়নি। অনেক আগে থেকেই ছিল। সময়ের কারণে কোনটি বাড়ে, কোনটি কমে। এতসব সমস্যা নিয়ে পথ চলতে গেলে ভালো খবরগুলো গণমাধ্যমে সামনে আসবে না এটাই স্বাভাবিক। চলমান নানা সমস্যা মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ সরকারের পথচলার প্রায় ১৩ বছরের মাথায় করোনা মহামারির ধাক্কা। এতকিছুর পরেও কিন্তু বৈশ্বিক উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। সবকিছু সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার কারণেই। কারণ মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী তিনি। থেমে যাওয়াতে বিশ্বাস করেন না।

তার ৭৫তম জন্মদিন চলে গেল গত ২৮ তারিখে। এ সময়ে দল বা সরকারপ্রধান হিসেবে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলার স্বপ্ন দেখেন তিনি। তার প্রবল মানসিক শক্তি দেশের মানুষকে এগিয়ে চলার সাহস ও শাক্তি জোগায়। এর ধারাবাহিকতা তাকেই ধরে রাখতে হবে। কারণ তার চোখ দিয়ে দেখা স্বপ্নে বিভোর ১৬ কোটি মানুষ। অর্থাৎ এগিয়ে চলার বাংলাদেশে তার সঙ্গে স্বপ্নের সারথি গোটা জাতি।

তিন.

শেখ হাসিনার কাছে আগামী প্রজন্মের প্রত্যাশা হলো- শহর হবে গ্রাম। দুর্নীতিমুক্ত হবে বাংলাদেশ। অব্যাহত থাকবে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান। বেকারত্ব ঘুচবে। সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। রাজনীতি থাকবে প্রকৃত দেশপ্রেমিক মানুষের হাতে। আধুনিক চিন্তা ও সিদ্ধান্তে দেশের গণতন্ত্রের ভিত আরও মজবুত হবে। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আর কোনো প্রশ্ন উঠবে না। সামনের দিনগুলোতে সকলের প্রত্যাশা দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। মজবুত হবে দেশের অর্থনৈতিক ভিত। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে শত বছরের করা ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু হবে। যানজটমুক্ত হবে রাজধানী।

গ্রামে গ্রামে পৌঁছাবে সব রকমের নাগরিকসুবিধা। রাষ্ট্রের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় তরুণরা হবে উদ্যোক্তা। সবখানে সমান কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে শহরমুখী কমবে মানুষের স্রোত। নৌ ও রেলপথ হবে আরও গতিশীল। উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকার কোনো অবস্থাতেই আপস করবে না। ’৭২-এর সংবিধানে ফিরবে রাষ্ট্র। শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই ২০৪১ সালের বদলের যাওয়া বাংলাদেশ উপভোগ করবে গোটা জাতি। সর্বোপরী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনষ্ক জাতি গড়ে তোলার বাঁশিওয়ালা কিন্তু তিনিই।

চার.

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ওই বছরেরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাসজীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

২০১৮ সালে চতুর্থবারের মতো জয়লাভ করেন তিনি। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্ন তিনি ১৯৮১ সাল থেকে দেখতে শুরু করেন। তার দেখা স্বপ্ন বিফলে যায়নি। অনেক স্বপ্ন সফল হয়েছে। তাই দেশ ও মানুষের প্রয়োজনে শেখ হাসিনার ভালো কাজগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনার কিছু নেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে দেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে দীর্ঘদিন জমে থাকা যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়েছেন তিনি। এজন্য তার প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়ত কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে। তবে তার প্রতি প্রত্যাশার জায়গাটুকু কখনই নষ্ট হবে না। বিশ্বাস আছে তিনি পারবেন। আশা করি সামনের দিনগুলোতে তার কর্ম ও সিদ্ধান্তে সবার শতভাগ আস্থা ফিরবে। শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের আস্থার ঠিকানা হয়ে থাকুন যুগ যুগ।

লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক

এ বিভাগের আরো খবর