বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনলাইন প্রযুক্তির অপব্যবহার

  • নাসির আহমেদ   
  • ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:০৩

এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশ-বিদেশে বসে একাত্তরের চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধীরা এবং তাদের রাজনৈতিক- দোসর- সহযোগীরা এমন সব মিথ্যাচার করছে, এমন বিকৃত তথ্য দিয়ে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা দেখে- শুনে বিস্মিত হতে হয়। এমনকি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টাও চালাচ্ছে তারা। অনলাইন পত্রিকার নামে অনেকে অসৎ উদ্দেশ্যে যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মতো খুলে বসেছে অনলাইন পোর্টাল।

একসময়ের দারিদ্র্যে জর জর টানাপোড়নের বাংলাদেশ আজ যে উন্নয়নের মহাসড়কে তার মূলে শক্তি জুগিয়েছে ডিজিটাইজেশন। যদি যোগাযোগ প্রযুক্তির এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন না ঘটত তাহলে অনেক কিছুই বিলম্বিত হতো। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয়েছিল যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার অন্যতম ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। প্রযুক্তির সেই অভাবিত উন্নয়ন বাংলাদেশকে সব ক্ষেত্রে গতিশীলতা দিয়েছে।

এক কথায় ব্যবসা-বাণিজ্য শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগসহ উন্নয়নের সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নতুন গতি সঞ্চার করেছে। ব্যাংকিং এবং বিপণন ক্ষেত্রে এই গতিশীলতা সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান। কার্ডেই অধিকাংশ লেনদেন কেনাকাটা। কথায় বলে, আলোর পিঠেই অন্ধকার। এ উক্তি চিরসত্য।

এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরের পর মানুষের হাতে হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেট। তার মানে পৃথিবীর তাবৎ তথ্যভাণ্ডার আর লেনদেন কয়েকটি অ্যাপসের বদৌলতে এখন এন্ড্রয়েড ফোনে। এমনকি টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রের সব কিছুই এখন মোবাইল ফোনে! এককথায় তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে প্রযুক্তি!

যোগাযোগ ও উন্নয়ন অর্থনীতির বিশাল দুয়ার খুলে দিয়েছে প্রযুক্তি। ওই যে বলেছি আলোর উল্টোপিঠে অন্ধকার সেই অন্ধকারে এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছ। সম্ভাবনা তখনই সংকটে পরিণত হয়, যখন শুরু হয় তার অপব্যবহার। ইতিবাচক উদ্ভাবনকে নেতিবাচক কাজে ব্যবহার করলে যে কী ভয়াবহ সর্বনাশ বয়ে আনতে পারে, তার প্রমাণ তো এটম বোমা!

আমাদের অনেকেরই জানা বিশ্বনন্দিত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনই প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন এটমকে ভেঙে যে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটানো যায়, এই সত্য! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি শঙ্কিত হয়েছিলেন এই ভেবে, যদি হিটলার তথা জার্মানি এই শক্তির সন্ধান পেয়ে যায় তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে!

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে তার এই আশঙ্কার কথাই জানিয়েছিলেন। কিন্তু রুজভেল্ট সেই আণবিক শক্তি আবিষ্কারের সম্ভাবনাকে বোমায় পরিণত করে নিজেই ব্যবহার করিয়েছিলেন জাপানের বিরুদ্ধে। ১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগস্ট হিরোশিমা-নাগাসাকি শহর দুটি ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছিল এটম বোমা। আইনস্টাইন যা কখনও ভাবতেই পারেননি মানব সভ্যতাবিনাশী এত বড় সর্বনাশা কাজে ব্যবহৃত হবে তার উদ্ভাবন!

প্রযুক্তির শক্তিতেই বাংলাদেশ আজ বহুমাত্রিক উন্নয়নে অগ্রযাত্রায় মুখরিত। কিন্তু সেই প্রযুক্তির অপব্যবহার নানামুখী বিপর্যয়ও ডেকে আনছে। তথ্যপ্রযুক্তির ফসল সোশ্যাল মিডিয়া। সেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত আজ নানা রকম সেবার আওতায় চলে এসেছে।

দেশের ইউনিয়নগুলো আজ সেই সেবা দিয়ে যাচ্ছে ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র থেকে। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ফরম পূরণ, পাসপোর্টের আবেদন, চাকরির আবেদনসহ বহু ধরনের সেবা আজ ঘরে বসেই পাচ্ছে মানুষ। নগদ লেন-দেনের বিকল্প ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে ই-প্লাটফরম। মার্কেটিংসহ নানা বিপণন ব্যবস্থায় নগদ লেনদেনের বিকল্প এখন কার্ড। ঘরে বসেই মিলছে সব পণ্য।

অথচ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশ-বিদেশে বসে একাত্তরের চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধীরা এবং তাদের রাজনৈতিক- দোসর- সহযোগীরা এমন সব মিথ্যাচার করছে, এমন বিকৃত তথ্য দিয়ে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা দেখে- শুনে বিস্মিত হতে হয়। এমনকি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টাও চালাচ্ছে তারা। অনলাইন পত্রিকার নামে অনেকে অসৎ উদ্দেশ্যে যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মতো খুলে বসেছে অনলাইন পোর্টাল। সম্প্রতি যার লাগাম টেনে ধরার প্রয়াস পাচ্ছে সরকার। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর যা খুশি তা অপপ্রচারের সুযোগ কখনও এক কথা হতে পারে না।

যাহোক ই-কমার্স প্রসঙ্গে ফিরে যাই। ই-কমার্স-এর আওতায় বড় বড় কয়েকটি পণ্য বিপণন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে দেশে, যেখানে বিপুল পরিমাণ পণ্য কেনাবেচা হয় প্রতিদিন। ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছিল অনলাইনমার্কেট। অনলাইন ব্যবহার করে ইতোমধ্যে ই-ভ্যালি, ই-অরেঞ্জ ধামাকা, আলেশা মার্ট ইত্যাদি মেগাশপ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। প্রযুক্তির এই সুবিধাকে এদের কেউ কেউ অপব্যবহার করে বিশাল সম্ভাবনাময় এই আধুনিক বাণিজ্য ব্যবস্থাপনাকে তারা প্রশ্নবিদ্ধ করল। প্রতারিত করল অসংখ্য গ্রাহককে।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে প্রযুক্তির ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটি দিকেই আলো আর অন্ধকারের মতো বিপরীত বাস্তবতা। প্রয়োজন শুধু অপপ্রয়োগ রোধ করতে যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত করা। সেটা করা না গেলে যে কী ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে তা ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। বিশেষ করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতারণার তথ্য ফাঁস হওয়ার পর মানুষের বিশ্বাস ধসে পড়েছে অনলাইন শপিংয়ে কেনাকাটা বিষয়ে। অথচ গত দেড় বছর ধরে করোনাকালের বাস্তবতায় জনসাধারণ বিপুলভাবে ঝুঁকছিল ই-শপিংয়ে। করোনা সংক্রমণের ভয়ে মানুষ ঘরে বসেই এই কেনাকাটার সুযোগ গ্রহণ করছিল সানন্দে। সংগত কারণেই দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছিল ই-শপিং।

গ্রাহকের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দেয়ার এই প্লাটফরম জনপ্রিয়তা পাবে সেটাই স্বাভাবিক। পেয়েছিলও। কিন্তু গ্রাহকদের সঙ্গে একের পর এক প্রতারণার তথ্য ফাঁস হতে থাকলে এসব অনলাইন মেগা শপের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় চলে আসে এবং বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হয়। একটি সম্ভাবনাময় বিকাশমান বিপণন খাতে নেমে আসে বিশাল ধস! বিশেষ করে গত সপ্তাহে প্রতারিত গ্রাহকদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাবের হাতে ই-ভ্যালি চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দম্পতি রাসেল ও নাসরিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর ই-শপিং ব্যবসার সম্ভাবনার ওপর চরম আঘাত নেমে আসে! মানুষের যেটুকু বিশ্বাস অবশিষ্ট ছিল, তাও নিঃশেষ হয়ে গেল।

গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে তাদের স্বামী-স্ত্রীর প্রতারণার বিশাল ফাঁদ। তারা অগ্রিম টাকা নিয়েও অসংখ্য গ্রাহককেই পণ্য বুঝিয়ে দেননি। তাদের দেনার দায় সহস্রাধিক কোটি টাকা। অথচ তাদের ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র লাখ টাকা! তাহলে এত টাকা কোথায় গেল?

এ প্রশ্নের উত্তর এখনও জানা যায়নি। র‌্যাব তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এখন। ইতোমধ্যে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা ভয়ংকর। তারা সচেতনভাবেই গ্রাহকদের প্রতারিত করে আসছিল।

ই-ভ্যালির এমডি এবং চেয়ারম্যান পরিকল্পনা করেছিলেন কোম্পানির দেউলিয়া ঘোষণা করে গ্রাহকদের দায় থেকে মুক্তি পেতে। তাদের আরেক পরিকল্পনা ছিল গ্রাহকসংখ্যা আরও বাড়িয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ই-ভ্যালি হস্তান্তর!

এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই তাদের গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এখন প্রশ্ন হচ্ছে হাজার হাজার প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা কী হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। ইভ্যালির মতো যেসব অনলাইন শপিং প্রতিষ্ঠান এই ধরনের লুটপাট করেছে তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব কী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের, নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের, নাকি কনজিউমার স্বার্থ যারা দেখার কথা তাদের? কার কী ভূমিকা তাও এখন খতিয়ে দেখা দরকার। এত বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যেমন খুশি তেমন চলতে দেয়া যায় কি? দিনের পর দিন তারা জনগণের অর্থ লুটপাট করে যাবে আর তা কেউ দেখবে না, তা কি হতে পারে? তার দেখভালের দায়িত্ব কি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপরও বর্তায় না?

আইনের আশ্রয় নিয়ে এদের কাছ থেকে গ্রাহকদের অর্থ আদায় করা যে সম্ভব নয় তা এখন স্পষ্ট। ই-ভ্যালি বন্ধ করে দিয়ে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করা যাবে না। সরকার প্রশাসক বসিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে যদি পর্যায়ক্রমে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে হয়তো একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকতে পারে। কারণ আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা মোটেও সুথকর নয়। পিকে হালদারের অর্থ প্রতিষ্ঠানের অরিয়ান্টাল ব্যাংক গ্রাহকরা এখনও অর্থ ফিরে পায়নি, বহু বছর আগে জনগণকে প্রতারণার দায়ে যুবক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু যুবকের প্রতারিত গ্রাহকরা তাদের অর্থ ফিরে পায়নি। এরকম বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করে সাধারণ মানুষকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।

ই-ভ্যালির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যদি মাত্র ত্রিশ লাখ টাকা থাকে তাহলে বাকি হাজার হাজার কোটি টাকা দেশে কোথাও সরানো হয়েছে, না কি বিদেশে পাচার হয়েছে, তার সন্ধান পেতেই হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যমন্ত্রণালয় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সম্মিলিত ভূমিকা নিতে হবে- যাতে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়ার উপায় উদ্ভাবন করা যায়।

এ প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন যে, ই-কমার্সের সুস্পষ্ট পরিচালনাবিধি বা গাইডলাইন থাকা সত্ত্বেও তা মানেনি ই-ভ্যালি কর্তৃপক্ষ! দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ধরনের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ থাকার কথা, তা কতটা কার্যকর ছিল? এ ব্যাপারে তাদের যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকা দরকার ছিল তার কতটুকু তাদের ছিল? এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে হবে।

এরই মধ্যে ধামাকাকে ২০০ কোটি টাকা ফেরত দিতে পাঁচদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে ধামাকায় পণ্য সরবরাহকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ। ১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এই আল্টিমেটাম দেন তারা। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং ডটকম সেলার অ্যাসোসিয়েশন তাদের বকেয়া পাবে কি না তাও এক অনিশ্চিত প্রশ্ন। এ-তো গেল সেলার বা মার্চেন্টদের কথা, এর বাইরেও রয়েছে গ্রাহকদের পাওনা যারা টাকা দিয়ে পণ্য পাননি। ই-ভ্যালি ধামাকার মতো অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকেও নজরদারির আওতায় আনা উচিত।

প্রতারণার ক্ষেত্রে আমাদের গণমাধ্যম এবং গ্রাহকদেরও সতর্ক থাকা দরকার ছিল। গণমাধ্যম যেভাবে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে তাতে কোনো বাছবিচার ছিল বলে মনে হয় না। একটি প্রতিষ্ঠানকে টাকা পেলেই বিজ্ঞাপিত করা যায় না, তার সাত-পাঁচ ভেবে দেখতে হয়। আমাদের যে সমস্ত বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী তারকা ব্যক্তিরা ই-ভ্যালির হয়ে উচ্ছ্বসিত ভাষায় বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন, তাদেরও বিবেচনা থাকা উচিত ছিল বলে মনে করি।

ই-ভ্যালির ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সচেতনতার অভাব মারাত্মকভাবে চোখে পড়েছে। দুই লাখ টাকার একটি পণ্য কী করে আশি হাজার টাকায় দেবে, তা ভেবে দেখলে কেউ এ পথে আসার কথা ছিল না। লোভের মোহে পড়েই কেউ ভেবে দেখেননি।

যাহোক, হাজার হাজার গ্রাহকের স্বার্থ দেখার দায়িত্ব সরকারকে গ্রহণ করতেই হবে। ভোক্তা অধিকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। ই-কমার্স একটি সম্ভাবনাময় বাণিজ্যিক খাত। কিছু দুষ্টচক্রের কারণে এই বিশাল সম্ভাবনাময় খাত ধ্বংস হয়ে যাক, এটা আমাদের কারো কাম্য হতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চীনসহ বিশ্বের বহু দেশ বড় বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান মাধ্যমে সফলভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে, আমাজান, আলিবাবার মতো প্রতিষ্ঠান এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত ।

আমরা আশা করতে চাই, দেশের সম্ভাবনাময় এই বাণিজ্যিক খাতকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সবাই এগিয়ে আসবেন। হাজার হাজার গ্রাহকের ভেঙে যাওয়া বিশ্বাস আবার ফিরিয়ে আনবেন।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কবি। সাবেক পরিচালক (বার্তা) বাংলাদেশ টেলিভিশন।

এ বিভাগের আরো খবর