বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওয়ান ইলেভেন ও আগস্টের ছাত্র-আন্দোলন

  •    
  • ২৫ আগস্ট, ২০২১ ১৫:৪৩

শোষকের রক্তচক্ষু ও তীব্র দমন-পীড়নকে উপেক্ষা করে একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সাহস ফিরে পেয়ে আন্দোলনে শামিল হন। যুক্ত হন জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বহীন নতুনধারার একবিংশ শতকের ছাত্র-আন্দোলনে। ধারাবাহিকভাবে গড়ে ওঠা তীব্র ছাত্র গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন সরকার বাধ্য হয় ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দিতে।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন, যা বাংলাদেশে ‘ওয়ান ইলেভেন’ নামে পরিচিত। জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে ইতঃপূর্বে ২০০৬ সালের শেষার্ধে একাধারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিজের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমদকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে বাধ্য হন৷ ফখরুদ্দীন সরকার প্রতিষ্ঠার পেছনে সেনাবাহিনীর প্রধান ভূমিকা ছিল বলে দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়৷

ছাত্র-আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে আমি তখন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। জরুরি অবস্থা জারির প্রতিবাদে সংগত কারণেই মিছিল করার কারণে ২০০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন নেতাকর্মীর মধ্যে আমি, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কল্লোল বণিক ও সাবেক নেতা বিপ্লব সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তখন এমন এক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল যে কারো টুঁ শব্দটি করার সুযোগ পর্যন্ত ছিল না। এই সুযোগে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে পরিচিত ফখরুদ্দীন সরকার ২০০৭-এর আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় শতাধিক শীর্ষনেতাকে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করে। এমনকি বাদ যাননি প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া এবং তাদের পরিবারের বিভিন্ন সদস্য।

পরিস্থিতি এতটাই জটিল ও অভাবনীয় ছিল যে জুলাইয়ের শেষদিকে দেশব্যাপী বন্যা শুরু হলেও আমরা ছাত্র সংগঠনগুলো স্বনামে তাদের ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে পারছিলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোনো রুম বরাদ্দ দিতে সাহস পাচ্ছিলেন না। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র (জিমনেসিয়াম) সংলগ্ন খেলার মাঠে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পরই স্থাপিত হয় সেনাক্যাম্প। বিঘ্নিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক ক্রীড়া কর্মকাণ্ড।

এমনই এক স্থবির পরিস্থিতিতে সামরিক শাসনামলের আগের অভিজ্ঞতার আলোকে ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ হতে আমরা সংগঠনের সাংস্কৃতিক উইং সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের নামে কেন্দ্রীয়পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রুম বরাদ্দ নিয়ে ত্রাণ কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেব প্রাথমিকভাবে খাবার স্যালাইন বানানোর কার্যক্রম শুরু করি। অন্যরাও পরবর্তী সময়ে আমাদের কৌশল অনুকরণ করে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করে। সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের নামে পরবর্তী সময়ে আমরা কৌশলগতভাবে সারা দেশে ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা অব্যাহত রাখতে পেরেছিলাম।

এসব ডামাডোলের একপর্যায়ে ২০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তবিভাগ ফুটবল খেলার অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্রদের মধ্যে ফুটবল খেলা চলার সময় খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে ছাত্র ও সেনা সদস্যদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডাকে ধরে খেলার মাঠেই শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালায় সেনাসদস্যরা। এর প্রতিবাদ করতে গেলে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে সেনাসদস্যরা।

এই ঘটনার প্রতিবাদে পুরো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। দাবি ওঠে ছাত্রদের কাছে দোষী সেনাসদস্যদের ক্ষমা চাওয়ার। কিন্তু সেনাসদস্যরা তা মেনে না নিলে পরে জিমনেসিয়াম থেকে ক্যাম্প প্রত্যাহারসহ জড়িত সেনাকর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়।

এরকম পরিস্থিতিতে ২১ আগস্ট নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থী। স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত পুলিশ বাহিনীর নির্মম হামলায় কার্জন হল, টিএসটি, লাইব্রেরি অঞ্চল, কলাভবন ও নীলক্ষেত এলাকাসহ গোটা ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের টিয়ার সেল ও রাবার বুলেটে আহত হন শত শত শিক্ষার্থী। আন্দোলনের মুখে এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র থেকে সেনা ক্যাম্প সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।

আন্দোলনের দাবিতে তখন যুক্ত হয় আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুলিশপ্রধান ও সেনাপ্রধানের ক্ষমা চাওয়া এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দাবি হিসেবে শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিকচর্চার পরিবেশ ফিরিয়ে দেয়া। এ সব দাবিতে ২২ আগস্ট এ আন্দোলন ঢাকা শহরসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। রাজশাহীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন রিকশা চালক আনোয়ার।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তৎকালীন সেনাসমর্থিত সরকার ২২ আগস্ট রাত ৮টা থেকে বিভাগীয় শহরগুলোতে কারফিউ জারি করে। ওইদিন সন্ধ্যার মধ্যেই ঢাবির আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

২৩ আগস্ট রাতে আটক করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদকে। তাদের চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের অভিযোগে কারাবরণ করতে হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুর রহমান খান, আবদুস সোবহান, মলয় কুমার ভৌমিক, দুলালচন্দ্র বিশ্বাস, আবদুল্লাহ আল মামুন, সেলিম রেজা নিউটন, সাব্বির সাত্তার তাপু, সারোয়ার জাহান সজল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম ও ড্রাইভার আতাউর রহমান আতাসহ ১০ ছাত্রকে। পরে ঢাবির আরও দুই শিক্ষক অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক ও ড. সদরুল আমিনসহ ৭ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২২ আগস্ট সন্ধ্যায় কারফিউ জারির পর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর চলে নির্মম নির্যাতন। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এই গৌরবজনক পরিচয়টিই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ক্যাম্পাস, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত আজিজ সুপার মার্কেট, ঢাকার বিভিন্ন ছাত্রাবাস, ছাত্রমেসগুলোসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হয় অকথ্য ও নির্মম নির্যাতন। কারফিউর রাতে ও পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হানা দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও বেধড়ক পেটানো হয়।

সংগঠনগত বিচারে এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন নেতৃবৃন্দ। এই ঘটনার পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের তৎকালীন সভাপতি মানবেন্দ্র দেব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি আবু সায়েম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মন্টি বৈষ্ণবকে। আহত হন অগণিত নেতাকর্মী। এমনকি সংগঠনের সারা দেশের অন্য নেতাদেরকেও গ্রেপ্তার আতঙ্কের মধ্যেই নতুন করে সৃষ্টিশীল উপায়ে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আন্দোলন-সংগ্রাম সংগঠিত করতে হয়।

পরবর্তী সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন অপরাপর প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে নিত্যনতুন কৌশলে আন্দোলনকে চলমান রাখে। শোষকের রক্তচক্ষু ও তীব্র দমন-পীড়নকে উপেক্ষা করে একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সাহস ফিরে পেয়ে আন্দোলনে শামিল হন। যুক্ত হন জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বহীন নতুনধারার একবিংশ শতকের ছাত্র-আন্দোলনে। ধারাবাহিকভাবে গড়ে ওঠা তীব্র ছাত্র গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন সরকার বাধ্য হয় ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দিতে।

ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তির এই আন্দোলনের বিজয় পরবর্তী সময়ে জাতীয় মুক্তির পথ রচনা করে। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়নে অতিষ্ঠ জনবিক্ষোভকে পুঁজি করে রাজনীতিকে সংস্কারের বিভ্রান্তিকর বাতাবরণে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে রাজনৈতিকভাবে নেতৃত্বশূন্য করার প্রক্রিয়া হতে পিছু হটতে বাধ্য হয় তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আস্তে আস্তে উন্মুক্ত হতে থাকে ঘরোয়া রাজনীতির দ্বার। পরবর্তী সময়ে রাজনীতিকে রাজনীতিবিদদের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হয়।

২০০৮-এর ডিসেম্বরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাবিসহ সারা দেশে বিক্ষোভ-সহিংসতার ঘটনা খতিয়ে দেখতে ২০১০ সালের ১৯ আগস্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষ হতে জাতীয় সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেননকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের একটি সংসদীয় উপ-কমিটি গঠন করা হয়।

সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে উপ-কমিটির সদস্যরা সাবেক উপাচার্য, সেনা কর্মকর্তা, ডিজিএফআই ও র‌্যাব সদস্য, নির্যাতিত ছাত্র, শিক্ষক, সেই সময়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাসহ অনেকের বক্তব্য শোনেন।শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সংসদে তদন্ত প্রতিবেদন উত্থাপনও করে। কিন্তু তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে পরবর্তী সময়ে সরকার উদ্যোগী হয়নি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও তার করণীয় দায়িত্ব পালন করেনি।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তিদের বিচার, রাজনীতিতে অরাজনৈতিক শক্তির সব ধরনের হস্তক্ষেপ বন্ধ, নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রদের ক্ষতিপূরণ, সব মামলা ও দণ্ড স্থায়ীভাবে বাতিলের ব্যাপারে সরকারকে সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণসহ ১৩ দফা সুপারিশ প্রদান করা হয়। মামলার বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নেয়া এবং তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রায় এক দশক পর নামকাওয়াস্তে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা ব্যতীত ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ বা দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশসহ অন্যান্য বিষয়ে আর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

এমনকি আন্দোলনে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ চাওয়া শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিটিও অধরাই থেকে গেছে। যে দেশে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়, কিন্তু তদন্ত আলোর মুখ দেখে না, সেই দেশে সংসদীয় কমিটির মতো উচ্চতর ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সুপারিশ আমলে না নেয়ার মাধ্যমে আগামীতেও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার সুযোগ রাখা হলো কি না সেটা ভবিষ্যৎই আমাদের বলে দেবে।

কিন্তু আগস্ট ছাত্র-আন্দোলন আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, বাংলার ছাত্রসমাজকে কোনোরকম অগণতান্ত্রিক ষড়যন্ত্রের জাঁতাকলে দাবিয়ে রাখা যায় না। আগামীদিনেও যদি কেউ এরকম কোনো দুরভিসন্ধিতে মেতে ওঠেন তবে সাময়িকভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কিছু সময়ের জন্য ছাত্রসমাজের তথা তরুণ তুর্কীদের মুখ বন্ধ রাখা গেলেও যেকোনো গণবিরোধী শাসন ব্যবস্থাকে চূড়ান্ত বিচারে পরাভূত করেই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বাংলার ছাত্রসমাজ সমস্ত বাধা-বিঘ্ন মোকাবিলা করে বিজয় অর্জনের পথে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

লেখক: প্রাবন্ধিক-সাবেক ছাত্রনেতা।

এ বিভাগের আরো খবর