করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নানা বিধিনিষেধে অন্য সবকিছুর মতো প্রভাব পড়েছে নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতেও। অনেকটা সীমিত হয়ে এসেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কার্যক্রম। তাতে বিভিন্ন ধাপে আটকে আছে পাঁচটি বিসিএস।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমিত কার্যক্রমের মধ্যেও একসঙ্গে পাঁচটি বিসিএসেরই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে পিএসসিকে। এ জন্য নেয়া হয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ।
এর অংশ হিসেবে পিএসসির যেকোনো পদের প্রিলিমিনারি টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার গাইড লাইন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে পাঁচটি বিসিএসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও আমরা কিন্তু বসে নেই। নিয়োগ কার্যক্রম বেগবান করতে ইতিমধ্যে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেই আমাদের চলমান কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।’
৩৮তম বিসিএস
৩৮তম বিসিএসে যারা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও পদস্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ পাননি তাদের মধ্য থেকে ধাপে ধাপে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩৮তম বিসিএস থেকে আরও নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।
এ বিষয়ে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহমদ বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে শূন্য পদের চাহিদার বিপরীতে আমরা নন-ক্যাডারে সুপারিশ করে থাকি। মন্ত্রণালয় থেকে শূন্য পদের চাহিদা এলে আবারও ৩৮তম বিসিএসে যারা ক্যাডার পাননি, তাদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডার পদের নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।’
এখন পর্যন্ত ৩৮তম বিসিএস থেকে তিন দফায় শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ১ হাজার ৭৬৪ জনকে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। সম্প্রতি চতুর্থ দফায় দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে মোট ১ হাজার ১৩৯ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
৪০তম বিসিএস
৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় গত ২৭ জানুয়ারি। এই বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
পিএসসি থেকে জানা যায়, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেই আবার শুরু হবে ৪০তম বিসিএসের স্থগিত মৌখিক পরীক্ষা।
এই বিসিএসে শূন্য পদ ছিল ১ হাজার ৯০৩। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ২০০, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, করে ২৪, শুল্ক আবগারিতে ৩২ ও শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ৮০০ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে।
৪১তম বিসিএস
৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ করা হয় গত ১ আগস্ট। ঐ দিনই লিখিত পরীক্ষারও সম্ভাব্য সময় জানায় পিএসসি। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে নভেম্বরে লিখিত পরীক্ষায় বসতে হতে পারে প্রার্থীদের।
পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহমদ বলেন, বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণদের আগামী নভেম্বর মাসে লিখিত পরীক্ষা নিতে পিএসসি সচিবালয় সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।
৪২তম বিসিএস
চিকিৎসক নিয়োগের ৪২তম বিসিএসের (বিশেষ) মৌখিক পরীক্ষা আবার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এই মৌখিক পরীক্ষা আগেই হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হচ্ছিল না। একাধিকবার পেছানো হয় তারিখ।
পিএসসি জানিয়েছে, ১২ আগস্ট থেকে বিশেষ এই বিসিএসের ভাইভা আবার শুরু হবে, চলবে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত। তবে পূর্বঘোষিত ১০ ও ১১ আগস্টের পরীক্ষা আগামী ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
৪৩তম বিসিএস
৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত বছরের ৩০ নভেম্বর। এই বিসিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ জনকে নিয়োগ দেয়ার কথা। ইতিমধ্যে এই বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে পিএসসি। এক দফা পিছিয়ে প্রিলির তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ২৯ অক্টোবর।