বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘প্রস্তাবিত তামাক কর তরুণ ও দরিদ্রদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে’

  •    
  • ১১ জুন, ২০২১ ০০:৫১

প্রস্তাবিত বাজেটে উচ্চ স্তরে ১০ শলাকার প্যাকেটে ৫ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরে ৭ টাকা বাড়ানো হলেও নিম্ন ও মাঝারি স্তরের সিগারেটের দাম ও শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর এ প্রস্তাবনাকে তরুণ ও দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যের হুমকি হিসেবেও দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

তামাক কোম্পানিতে সরকারের ক্ষুদ্র মালিকানা থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠান মালিকেরা তামাকজাত পণ্যে প্রত্যাশিত কর আরোপ করতে দেয় না বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ।

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দেয়ার পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার বেসরকারি মানবাধিকার ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভয়েসের ‘তামাক কর বিষয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তারা এ মতামত দেন।

তামাকের ওপর প্রস্তাবিত কর নিয়ে হতাশ হয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘খুব নগণ্য হলেও তামাক কোম্পানিতে সরকারি মালিকানা বা শেয়ার আছে। যার কারণে একটা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বোঝাপড়া তৈরি হয়। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের অশুভ চক্র কাজে লাগিয়ে সুবিধা ভোগ করে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে উচ্চ স্তরে ১০ শলাকার প্যাকেটে ৫ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরে ৭ টাকা বাড়ানো হলেও নিম্ন ও মাঝারি স্তরের সিগারেটের দাম ও শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর এ প্রস্তাবনাকে তরুণ ও দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যের হুমকি হিসেবেও দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রস্তাবিত বাজেট চূড়ান্ত না হলেও এই করের হার সংশোধনের সম্ভাবনা কম বলেও মনে করেন ড. নাসির।

তিনি বলেন, ‘তামাক কর বাড়াতে হলে ভবিষ্যতে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর কৌশল বদলাতে হবে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আইন সংশোধনের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে আলোচনার জায়গা বৃদ্ধি করতে হবে।’

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ তুলে করেন ভয়েসের প্রকল্প সমন্বয়কারী জায়েদ সিদ্দিকী।

প্রবন্ধে প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ার পাবার আশঙ্কা করা হয়। এতে বলা হয়, বাজারে ৮৪ শতাংশ সিগারেট নিম্ন ও মধ্যম মানের হলেও সেগুলোর ওপর কর বাড়ানো হয়নি। আর এসব সিগারেটের মূল ভোক্তা হচ্ছে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, ‘বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম দিকে। দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাকে আসক্ত। প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারায়। অনেকে অকালে পঙ্গু হয়ে যান।’

করোনা মহামারিতে বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রবন্ধে বলা হয়, ‘বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য ক্ষতি কমিয়ে আনতে তামাকের বহুস্তরভিত্তিক ব্যবস্থা লোপ করা থেকে শুরু করে সুনির্দিষ্ট কর আরোপের দাবি জানানো হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার প্রতিফলন নেই।’

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রধান হাসান শাহরিয়ার বলেন, ‘সাধারণত বাজেটের সময় এমনভাবে কর ধার্য করা হয় যাতে নিম্ন আয়ের মানুষের চাপ কম হয়। কিন্তু বিড়ি-সিগারেটের মত ক্ষতিকর পণ্যের জন্য নিয়ম প্রযোজ্য নয়। বরং ক্ষতিকর পণ্যের ব্যবহার কমাতে ধনী এবং দরিদ্র্য সবার জন্য সমান কর আরোপ করা উচিত।’

প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন ও মধ্য স্তরের সিগারেটের মূল্য ও শুল্ক অপরিবর্তিত রেখে ছাড় দেয়ার একটা প্রবণতা দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের গ্র্যান্ট ম্যানেজার মনে করিয়ে দেন, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাক মুক্ত করতে চান প্রধানমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেট তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে কী না তা নিয়ে সংশয় আছে তার।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের প্রধান পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যদিও আমরা এ বছর রাষ্ট্রযন্ত্রের কান পর্যন্ত পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছি। তবুও আমাদের থেমে গেলে চলবে না। আমাদের কাজ করে যেতে হবে। সফলতা একদিন আসবেই।’

ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদের পরিচালনায় এই সম্মেলনে অংশ নেন ঢাকা আহসানিয়া মিশন, প্রজ্ঞা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, উন্নয়ন সমন্বয় এবং ডর্পের প্রতিনিধিরা।

এ বিভাগের আরো খবর