তৈরি পোশাক শিল্পের উৎসে করহার ০.২৫ শতাংশ নির্ধারণ এবং তা আগামী পাঁচ বছর অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতি (ইএবি)।
বর্তমানে এ খাতে উৎসে কর ০.৫০ শতাংশ। বাজেটের আগে এটি কমানোর দাবি থাকলেও তা বিবেচনায় আনেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
বুধবার আগামী ২০২১-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর দেয়া প্রতিক্রিয়ায় ইএবি প্রস্তাব রেখেছে।
রপ্তানি উন্নয়নের স্বার্থে বাজেট পাসের আগে অর্থমন্ত্রীকে বিবেচনার জন্য সংগঠনটি আরও বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। এর পাশাপাশি বাজেটে রাখা বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে নিজেদের মূল্যায়নের কথাও জানিয়েছে রপ্তানিকারকদের এই সংগঠনটি।
সংগঠনের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘চমৎকার বিনিয়োগ এবং ব্যবসাবান্ধব’ বাজেট হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাজেটে বাস্তবতার নিরিখে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবন, অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল ও গতিশীল এবং অক্ষুণ্ন রাখার সব প্রচেষ্টা প্রতিফলিত হয়েছে।’
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, অবকাঠামো, আর্থসামাজিক, দারিদ্র্য বিমোচন, মানবসম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ায় বাজেট যুগোপযোগী হয়েছে বলেও মূল্যায়ন করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
তিনি দেশের রপ্তানি উন্নয়নের স্বার্থে ইএবির দেয়া প্রস্তাবনাগুলো বাজেট পাসের আগেই অর্থমন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান। বলেন, ‘এসব প্রস্তাবনা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করলে বাজেট আরও ফলপ্রসূ হবে। একই সঙ্গে ব্যবসায় খরচ কমবে। এবং বিনিয়োগের দ্বারও উন্মুক্ত হবে।’
ইএবির আরও যেসব প্রস্তাব
সর্বমোট প্রাপ্তি ৩ কোটি টাকা বা ততোধিক হলে ব্যক্তি আয়করদাতাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম করের হার ০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.২৫ শতাংশ করা হয়েছে। সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ ন্যূনতম এই করের হার নির্ধারণ করলে কর প্রদানে উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
ব্যবসায়ী অগ্রিম আয়কর (এআইটি) সহ আমদানি পর্যায়েও ভ্যাটের আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে সব ধরনের উৎসে কর ও অগ্রিম কর চূড়ান্ত কর হিসেবে সমন্বয় করার প্রস্তাব দেয় ইএবি।
সব ধরনের সুতার ওপর ৩ টাকা মূল্য সংযোজন কর ধার্যসহ সুতা তৈরিতে ব্যবহৃত সব ধরনের ফাইবারকে শুল্কমুক্তভাবে আমদানির সুবিধা দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।
রপ্তানিকারকদের এক্সপোর্টার্স রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) ফান্ড রপ্তানি উন্নয়নের জন্য ব্যয়ের ওপর আয়কর কেটে রাখার বিধান ও রপ্তানির বিপরীতে দেয়া নগদ সহায়তার ওপরে আয়কর কেটে রাখার প্রথাও বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।
রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানে মূল যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রেও রেয়াতি সুবিধা চেয়েছে তারা। একইভাবে রপ্তানি কাজে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট মওকুফ, অগ্নি-নির্বাপণ উপকরণ রেয়াতি হারে আমদানির সুযোগ দাবিও করেছে।
মাংস প্রক্রিয়াজাত খাত সম্পর্কিত গৃহীত পদক্ষেপের সঙ্গে মাংস রপ্তানিতে ফ্রিজার ভ্যান এবং চিলার ভ্যান আমদানির ক্ষেত্রে মূলধনী পণ্য বিবেচনায় শুল্ক অব্যাহতির সুবিধাও দাবি করেছে।
এ খাতে সরবরাহ করা প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উপকরণে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের মসলা এবং প্যাকেজিং আমদানিতেও শুল্ক সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব রেখেছে।