বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থপাচার নিয়ে আমারও লাগে: অর্থমন্ত্রী

  •    
  • ৭ জুন, ২০২১ ১৫:৪০

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই, এগুলো বন্ধ করতে হবে।’

অর্থপাচার বন্ধে সদিচ্ছার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের মানুষের কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে চলে গেলে অন্যদের মতো তারও বেদনার অনুভূতি হয়।

সম্পূরক বাজেট পাস প্রস্তাব উত্থাপনের সময় অর্থপাচার নিয়ে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

আর্থিক খাতের অনিয়ম দূর করতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ১৫টি নতুন আইন আসছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

ওই সময় বাংলাদেশ থেকে যারা অর্থপাচারে জড়িত তাদের নামের তালিকা চান মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে টাকা যায়। কীভাবে যায় এটা আমি বুঝতে পারি। কিন্তু কারা নেয় এটা জানি না। কারা টাকা নিয়ে যায়, লিস্ট আমার কাছে নেই। নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করা আমাদের জন্য সহজ হবে।

‘অর্থপাচার ঠেকাতে সরকার সক্রিয় রয়েছে। এখনও অনেকেই জেলে আছে। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।’

এর আগে আলোচনায় বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বিদেশে ১ লাখ কোটি টাকার উপরে চলে যাচ্ছে। ওভার আর আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে আল্লাহ মাবুদ জানেন কত টাকা বিদেশে গেছে।’

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ পাঠাচ্ছে।

‘দুদকের একটি অফিস কানাডায়, মালয়েশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়ায় করুন। তাহলে দেখা যাবে কে কত টাকা নিয়েছে। পি কে হালদার এত টাকা নিল। নয় মিনিটের জন্য পি কে হালদারকে ধরতে পারেনি। তাহলে নয় ঘণ্টা আগে ধরতে পারলেন না কেন?’

সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই, এগুলো বন্ধ করতে হবে।

‘আগে সিমেন্টের নাম করে বালি আসত। একটার নাম করে আরেকটা আসত। আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং আগের মতো হয় না। একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলব না। পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই না।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। বিরোধী সংসদ সদস্যরা বিদেশে টাকা পাচার, পুঁজিবাজারের অব্যবস্থাপনাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সমালোচনা করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আগামী ছয় থেকে ১২ মসের মধ্যে ১৫টি আইন দেখতে পারবেন এগুলো বন্ধ করার জন্য। আমি নিজে জানি কীভাবে এগুলো হয়। কারা করে জানি না।

‘অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, ইনএফেকটিভ ম্যানেজমেন্টের জন্য এগুলো হয়। আমরা সংস্কারমুখী কাজ করব। নতুন নতুন আইন করব। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেব। কোনো টলারেন্স নেই এখানে। টাকা এখন দেশে আসে।’

সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১২ বছরে ঋণের সুদহার ১২.১ ভাগ থেকে কমে ৭.৩ ভাগ। এখন ব্যাংকের শাখা দ্বিগুণ হয়েছে। চাহিদা বেড়ে গেছে। গ্রামে গ্রামে ব্রাঞ্চ হয়েছে। দেশের মানুষ সেবা পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৩.৬ শতাংশ। এখন আট শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৬ সালে টোটাল লোন আউটস্ট্যাডিং ছিল ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা, যা এখন আট গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১১ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।’

‘পুঁজিবাজার কেমন করে বসে গেল?’

পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পুঁজিবাজার কেমন করে বসে গেল? পুঁজিবাজারে হয়তো লেনদেন নেই। পুঁজিবাজার সম্পর্কে তথ্য রাখেন না; হয়তো সে জন্য বলছেন।’

তিনি বলেন, ‘যদি ডেটা দেখি, যখন ক্ষমতায় আসি তখন পুঁজিবাজারে লেনদেন এক লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ছিল। তা এখন পাঁচ গুণ বেড়েছে। গড় লেনদেন ছিল দৈনিক ২৮ কোটি টাকা, যা এখন ৩০ গুণ বেড়েছে। তাহলে ধসে গেল কেমন করে?’

ছাঁটাই প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্কুলে অঙ্কে ভালো ছাত্র ছিলাম। শিক্ষকরা আদর করত। কিন্তু বাজেটের অঙ্কের হিসাব মেলাতে পারছি না। ঘাটতি কোথায়? কোথা থেকে টাকা আনবে? প্রবৃদ্ধির কথা বলছি।

‘করোনাকালীন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে করোনা নিয়ন্ত্রণে। না হলে প্রবাস আয়, গার্মেন্ট খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রবৃদ্ধির জন্য লাফাচ্ছি। সুচের ফুঁটো দিলে বেলুনের মতো চুপসে যাবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না করলে ভয়ানক ধস নামবে।’

জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আর্থিক খাতে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্ব সঠিক, কর্তৃত্ব দুর্বল। ব্যাংকে কর্তৃত্ব নেই। কর্তৃত্ব না থাকলে অবাধে এসব হবে। এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ পাঠাচ্ছে।’

জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্যাতিত এতিমদের মতো। দেখার কেউ নেই। লুটপাট হচ্ছে; দুর্নীতি হচ্ছে। কিছুই হয় না। শাস্তি হয় না।’

এ বিভাগের আরো খবর