বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
রোববার সকালে চলতি অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থ বছরের সম্পুরক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য এ অর্থবছরে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তা জনগণের কাজে লেগেছে বা কোভিড নিয়ন্ত্রণে ব্যয় হয়েছে সরকার তা বলতে পারবে না। কত টাকা কোভিড নিয়ন্ত্রণে ব্যয় হয়েছে সরকারকে তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
সম্পুরক বাজেট আলোচনায় করোনা টিকা নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিএনপির এই সাংসদ। বলেন, ‘চীন ও রাশিয়া ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে প্রথমে এসেছিল। তারা ট্রায়াল দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তাদের ট্রায়ালের অনুমতি দেইনি। তাদের প্রস্তাব সেই সময় গ্রহণ করলে এখন আমাদের ভ্যাকসিনের সংকট হতো না।
‘ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির শিকার। যে কারণে ভ্যাকসিন নিয়ে চীনের সঙ্গে কথা হলেও ভ্যাকসিন পাবো কি না তা অনিশ্চিত। আশা করব, এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘উত্থাপিত বাজেটে টিকা দানের কোনো সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দেয়া হয়নি। ভ্যাকসিন আমাদের দিতে হবে। দেড় বছর হলো আমরা করোনা প্রাদুর্ভাবে পড়েছি। দুই শতাংশ মানুষকেও আমরা এ সময়ে ভ্যাকসিন দিতে পারিনি।
‘সরকার করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের ধরন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। গোটা বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সারা দেশকে অস্থির করে তুলেছে। রাজশাহী বিভাগে করোনা মারাত্মক পরিস্থিতি ধারণ করছে। আম চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’
এ সময় স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কারের প্রস্তাবও দেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর। বলেন, ‘পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল আমরা চাই। কিন্তু তার আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে। মানুষ বাঁচলে সবকিছু আসবে। স্বচ্ছ তালিকা করে সামাজিক সুরক্ষা খাতের অর্থ দিতে হবে।’
নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটেরও সমালোচনা করেন হারুনুর রশীদ বলেন, ‘নতুন অর্থবছরের ছয় লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেটে বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণনির্ভর। এই ঋণনির্ভর বাজেট ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এত ব্যাপক ঋণনির্ভর বাজেট অতীতে কোনো সরকারের আমলে হয়নি।
‘করোনাকালীন সরকারে যে বাজেট দেয়া দরকার ছিল, সরকার তা দিতে পারেনি। সরকারের নীতি ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে জনদুর্ভোগ ও মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।’
নিজের বাজেট আলোচনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান হারুনুর রশীদ। বলেন, ‘নতুন বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যালে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এটা কোনো কথা হলো?’
‘আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসন্মত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে সেখানে বেশি শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে। কেন সেখানে করারোপ করা হলো? এই কর প্রত্যাহার হওয়া উচিত।’