বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বাজেটে শিক্ষাকে পণ্য বানানো হয়েছে’

  •    
  • ৪ জুন, ২০২১ ২১:২১

ছাত্র ইউনিয়ন বলছে, শিক্ষাখাতে বরাদ্দের প্রস্তাব হয়েছে মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ, যা মোট জিডিপির ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। অথচ আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২৫% বা মোট জিডিপির ৮% বরাদ্দ দিতে হবে। আমরা আরও লক্ষ্য করেছি প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ১৫% ট্যাক্স আদায়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।

২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

বামপন্থি এই ছাত্র সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ তো বাড়েইনি উল্টো গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ কমেছে।

শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার কারণে গত প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ৷ এই দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মচারীরা বেশ কষ্টে দিনযাপন করছেন। এ ছাড়া শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী। করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত নন এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীদের জন্য নেই কোন আলাদা বরাদ্দ।

‘শিক্ষাখাতে বরাদ্দের প্রস্তাব হয়েছে মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ, যা মোট জিডিপির ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।

অথচ আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২৫% বা মোট জিডিপির ৮% বরাদ্দ দিতে হবে। আমরা আরও লক্ষ্য করেছি প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ১৫% ট্যাক্স আদায়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।

‘এই অলাভজনক কথাটা কেবল কাগজ কলমে। মূলত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিণত হয়েছে একেকটা বড় বড় সুপার মার্কেটে৷ সুনির্দিষ্ট টিউশন ফি নির্ধারণে কোনো নীতিমালা না থাকায় এই প্রস্তাবিত ট্যাক্সের চাপ গিয়ে পড়বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর।’

ছাত্র ইউনিয়নের বলছে, ১৯৭২ সালে গঠিত কুদরতে খুদা শিক্ষা কমিশন ১৯৭৪ সালেই প্রস্তাব করেছিল বাজেটে মোট জিডিপির ৫-৭ ভাগ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের। এমডিজি বা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাজেটে শিক্ষা খাতে এককভাবে ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখার কথা। বাংলাদেশ সরকার বলছে তারা এমডিজি পূরণ করে এসডিজি বা সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলর পথে হাঁটছে অথচ তারা শিক্ষাখাতে কখনই মোট বাজেটের ১২ শতাংশ বা মোট জিডিপির প্রায় ২ শতাংশের ওপরে বরাদ্দ দেয়নি। এর থেকেই প্রমাণিত হয় সরকার শিক্ষার্থীদের সাথে দিনের পর দিন প্রতারণা করে আসছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রস্তাবিত এই বাজেটে উপেক্ষিত হয়েছে সাধারণ মানুষ। কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোতে সবচাইতে খুশি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সাধারণ মানুষ যাদের আয় কমেছে তাদের জন্য নেই কোনো প্রস্তাবনা। এমনকি এই করোনাকালীন যারা নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন তাদের জন্য নেই কোনো আলাদা বক্তব্য।

ছাত্র ইউনিয়নের অভিযোগ, বাজেটে উপেক্ষিত হয়েছে স্বাস্থ্যখাত। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দকৃত বাজেট মোট জিডিপির শূন্য দশমিক ৯৫%। যেখানে করোনাকালীন ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য ব্যবসায়ীদেরকে সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে সেখানে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও গবেষণাখাতে নেই কোনো আলাদা পদক্ষেপ। টিকার জন্য নেই আলাদা কোনো বরাদ্দ। অর্থাৎ সরকার গণ মানুষের চাইতে ব্যবসায়ীদেরকেই অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। সর্বপরি করোনাকালীন সময়ে ভগ্ন স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাকে সংস্কার করার ব্যাপারে ব্যাপারে উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে।

সর্বোপরি এই প্রস্তাবিত বাজেটকে কোনোভাবেই জনবান্ধব বাজেট বলা যায় না উল্লেখ করে তার বলেন, ‘এই বাজেট ধনীকে আরও ধনী; গরীবকে আরও গরীব করার প্রস্তাব৷ এই বাজেটে শিক্ষাকে পণ্য হিসাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত পুরোটাই উপেক্ষিত। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এই বাজেট প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করছে।’

এ বিভাগের আরো খবর