নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের কৃষক ও উদ্যোক্তাদের রক্ষায় আমদানি পণ্যের দাম বাড়ানোয় দেশীয় পণ্যের দামও বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী।
জেলার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের দাবি, বাজেটে যা খুশি করা হোক, কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম যেন ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এ জন্য শুধু আমদানি পণ্যের দাম বাড়ালে কৃষক ও ব্যবসায়ী উপকার পাবেন না বরং বন্ধ করতে হবে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটে আমদানি করা গাজর, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, টমেটো, কমলা, বিদেশি সাবান, বিস্কুট, চকলেটসহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
জেলার বাসিন্দাদের শঙ্কা, এতে দেশীয় বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বেশি দামের কারণে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। এর মধ্যে সবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়লে অনেকের জন্য চলা দুষ্কর হয়ে যাবে।
মহাদেব পট্টি এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ চন্দ্র নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে করোনা বিপর্যয় চলছে। অনেক মানুষ আজ বেকার। অনেকের আয় কমে গেছে। এ ছাড়া করোনায় সিন্ডিকেটের পাল্লায় পরে দ্রব্যাদির দাম বেড়েই চলেছে।
‘বাজেট-টাজেট বুঝি না, সরকারের কাছে আবেদন আমরা যাতে জিনিসপত্র কিনে খাইতে পারি এমন সুযোগ যেন করে দেয়।’
শহরের ঘোড়াপট্টি এলাকার মুদি দোকানদার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাজেট হয়েছে শুনেছি। তবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ালেই তো হইব না। সাধারণ মানুষ যাতে কিনতে পারে এমন ব্যবস্থাও করতে হবে। সিন্ডিকেটের তৎপরতাও নির্মূল করতে হবে।’
ফারুকী বাজারের ব্যবসায়ী মোহন মিয়া বলেন, ‘মুর্খ মানুষ বাজেট-মুজেট বুঝি না। দাম বাড়াইলে কি হইব ভাই, মানুষ যদি কিনতো না পারে। যখনই কাঁচা মালামালের দাম বাড়ে, বেচতে কষ্ট হয়। মালামাল নিয়া বইসা থাকতে হয়।’
আরেক ব্যবসায়ী পার্সিভ বলেন, ‘এমনিতেই পণ্যের দাম বেশি। বাজেটে বিদেশি সাবান, বিস্কুট, চকলেটের দাম না কি বাড়িয়েছে। তাতে তো আমাদের কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু কেন দাম বেশি হয়, কাস্টমারকে সেটা বুঝাইতে পারি না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আবদুন নূর বলেন, ‘সরকারের বাড়ানো দামে ক্রেতারা পণ্য কিনতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে দাম তো আরও বেশি হয়। তাই সরকারের কাছে প্রত্যাশা, সাধারণ জনগণের চিন্তা করে পণ্যসামগ্রীর দাম যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সেটি খেয়াল রাখা হয়।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আজিজুল হকের দাবি অবশ্য এবারের বাজেট জনকল্যাণমূলক। তিনি বলেন, এই বাজেট নিয়ে কাউকেই হিমশিম খেতে হবে না।