শিক্ষা-স্বাস্থ্যের উন্নয়নে পিছিয়ে। যোগাযোগসহ অবকাঠামো খাতেরও নাজুক অবস্থা। বছরে একবার পাওয়া ধানই খাদ্যের প্রধান উৎস, সেই ধানও আবার মাঝে মাঝে তলিয়ে যায় বন্যায়। ফলন ভালো হলেও মেলে না ন্যায্যমূল্য। মাছ ও জীববৈচিত্রও সঙ্কটে।
সংক্ষেপে এই হলো সিলেট বিভাগের চার জেলা, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জের বিস্তৃর্ণ হাওর অঞ্চলের অবস্থা।
নতুন অর্থবছরের বাজেটের আগে তাই পিছিয়ে পড়া হাওর অঞ্চলের উন্নয়নে আলাদা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছিল উন্নয়ন সংগঠনগুলো ও স্থানীয় নেতারা।
বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা। বরাদ্দ পেলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন অনেকে। কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন ও নির্মাণসহ বেশ কিছু বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
‘হাওর বাঁচাও’ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ‘হাওরের কৃষকসহ কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়নে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে হাওরের জন্য আরও বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন ও তৈরিতে বাজেটে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ছিল। কারণ যান্ত্রিকীরণ সম্ভব হলে কৃষকরা উপকৃত হবেন। সঠিক সময়ে ধান ঘরে তুলতে পারবেন। এ ছাড়া হাওরের জীববৈচিত্র রক্ষায়ও আলাদা বরাদ্দ প্রয়োজন।’
কৃষিখাতে সরকারের ভর্তুকি আরও বাড়ানো প্রয়োজন ছিল জানিয়ে বিজন সেন বলেন, ‘হাওরে প্রচুর ধান হলেও কৃষক লাভবান হতে পারে না। কারণ তার উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। কৃষককে সরকারের পক্ষ থেকে বীজ ও সার দিলে উৎপাদন খরচ অনেকাংশেই কমে যাবে।’
হাওরের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবিত দাবিগুলোর মধ্যে কৃষকদের বীমার কথাটি এবারের বাজেটে উঠে এসেছে, তার জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাই।
‘তবে সেখানে যদি কৃষকের বীমার প্রিমিয়ামের টাকা দিতে হয়, সেটা কৃষকের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। এ বিষয়ে স্বচ্ছতার প্রয়োজন রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রকৃত কৃষকরা যেন উপকৃত হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
তিনি জানান, বাজেটে সরকার আরও প্রায় ছয় লাখ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার আধুনিক খাদ্যগুদাম বা সাইলো নির্মাণে যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেটি প্রয়োজন ছিল। হাওরে প্রচুর ধান হলেও সরকার সব সংগ্রহ করতে পারে না। খাদ্য গুদাম হলে হাওর থেকে আরও ধান সংগ্রহ করা যাবে।