২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের ভবিষ্যৎ গড়ার বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেট পেশের পর সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
খসরু বলেন, সবচেয়ে বেশি প্রতিফলিত হওয়া উচিত ছিল দেশের দ্ররিদ্র, হতদ্ররিদ্র, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ কুটির শিল্প, ছোট শিল্পসহ অন্যান্য খাতে যারা কাজ করছে।
‘আমাদের সম্প্রসারণশীল একটি অর্থনীতি হওয়া উচিত মানুষকে বাঁচানোর জন্য। বিশ্বের অন্য দেশগুলো, গণতান্ত্রিক দেশগুলো নিম্ন আয়ের মানুষকে পুনরুদ্ধার করার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যয় করছে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম ব্যয় করছে। এই লোকগুলোকে বাইরে রেখে যে অর্থনীতি তারা চালু করেছে এ অর্থনীতিতে বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যৎ নাই। তবে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের ভবিষ্যৎ আছে এখানে। সাধারণ মানুষের কোনো ভবিষ্যৎ নাই।’
খসরু বলেন, একটা সম্প্রসারণশীল অর্থনীতির মাধ্যমে দেশের মানুষের আয় বাড়িয়ে, খরচ বৃদ্ধির অর্থনীতিতে একটা চাহিদা সৃষ্টি করার যে প্রক্রিয়া সেটি এখানে নেই। পাঁচ-ছয় কোটি লোকের জীবনযাপনে কী হবে সেটা প্রতিফলন হওয়ার কথা ছিল। যারা কর্মচ্যুত হয়েছেন, ব্যবসা কর্মচ্যুত হয়েছে, যারা আর্থিকভাবে দরিদ্র হয়ে পড়েছেন। অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে হলে এ লোকগুলোকে আগে বাঁচাতে হবে।
‘এদের বাঁচানোর জন্য জিডিপির অন্তত ৭-৮ শতাংশ বরাদ্দ থাকতে হবে প্রণোদনার জন্য। এ লোকগুলোকে বাঁচাতে হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সেই পুরোনো জিডিপির শতাংশের নিচে রয়ে গেছেন তারা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, শুধু বরাদ্দের জন্য নয়, যেটুকু সামান্য বরাদ্দ দেয় সেটা লুটপাট, দুর্নীতি হয়। যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেটাও আগের মতো বরাদ্দ। যদি এ স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে হয় তাহলে জিডিপির ৫ শতাংশ এখানে বরাদ্দ দেয়ার কথা ছিল।’
তিনি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রেও তাই। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে করলে আমরা যেখানে এসে দাড়িয়েছি, আজকে অর্থনৈতিকভাবে এর থেকে বের হয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই।
সরকারবিরোধী এই নেতা বলেন, আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ কম বয়সের—যেটা আমাদের জন্য বড় সম্পদ। এই সম্পদ যদি আমরা সম্পদ হিসেবে অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে চাই এবং তাদের মাধ্যমে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিতে হবে। তারা এটাকে গতানুগতিক বাজেট যেভাবে দিয়ে আসছে সেভাবেই দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আয়বৈষম্য বলছে, এক শতাংশ লোক সম্পদশালী। বাকি ৯৯ শতাংশ লোক গরিব থেকে গরিব হচ্ছে। ইতিমধ্যে আড়াই কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। আগের থাকা দরিদ্র মানুষকে যদি হিসাবের তালিকায় আনা হয় সার্বিকভাবে ৫ থেকে ৬ কোটি লোক হবে। এদেরকে বরাদ্দ না দিয়ে আমরা দেখছি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে মেগা প্রজেক্টে।