করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে উৎপাদনশীলতা ধরে রেখে শ্রমিক ছাঁটাই ঠেকাতে একাধিক প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘শিল্প-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণসাধন ও কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সরকারের কর্মসংস্থান পরিকল্পনার অবিচ্ছেদ্য অংশ। করোনা মহামারির সংক্রমণের প্রভাবে সৃষ্ট শ্রম পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং চলমান শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট এলাকার মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধির সমন্বয়ে ২৩টি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায়ই এই কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মহামারির সময় শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের অধিকাংশ কালকারখানা চালু রেখে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সময়মতো পরিশোধ করা হয়েছে এবং শ্রমিক ছাঁটাই ও শ্রমিকের কর্মহীনতা রোধে একাধিক প্রণোদনা প্যাকেজ নেয়া হয়েছে।
‘শ্রমিকের কল্যাণ নিশ্চিতকরণ, রপ্তানিমুখী ও অন্যান্য শিল্প-কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শিশুশ্রম নির্মূলকরণ এবং নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে আমাদের কার্যক্রম আগামীতে আরও জোরদার করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বহুমুখী শ্রমের চাহিদা পূরণ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শ্রমিকের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে সরকার দক্ষতার উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
‘শিল্প খাতের চাহিদাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে সরকার স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছে, যার মাধ্যমে ২০২৪ সালের মধ্যে ৮ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ জনকে ১১টি অগ্রাধিকারভুক্ত শিল্প ও সেবা খাতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এ ছাড়া দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল করতে দেশের ২৮টি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনের জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।’
তিনি জানান, সংস্থাটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা প্রশিক্ষণ মান নির্ধারণ, প্রশিক্ষণার্থী ও অ্যাসেসরদের সনদায়ন, স্ট্যান্ডার্ড ও কারিকুলাম, সক্ষমতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ উপকরণ তৈরি, পূর্বাভিজ্ঞতার স্বীকৃতি প্রদান, পারস্পরিক দক্ষতার স্বীকৃতি ইত্যাদির মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ভূমিকা রাখছে।