বেসরকারি মাদ্রাসার অর্থায়নে স্বচ্ছতা আনার পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। যদিও এই স্বচ্ছতা বলতে সরকার কী করবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা আসেনি।
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষাকে শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার অংশ হিসেবে বেসরকারিভাবে মাদ্রাসার উন্নয়ন খাতে বিভিন্ন উৎস হতে যে অর্থায়ন পাওয়া যায়, তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
বাংলাদেশে বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলো চলে জনগণের অনুদানের টাকায়। তবে এই টাকা কে, কী পরিমাণ দেয়, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য-পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও অনুদান আর খরচের খাত নিয়েও কিছু জানানো হয় না।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ বাজেট প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই এবং একই সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর দাবি জানাই।’
শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা অবশ্যই দরকার। বেসরকারি মাদ্রাসাগুলোতে টাকাগুলো কীভাবে আসে, কোথা থেকে আসে তা জানা দরকার, তা না হলে এর অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এত দিন পরে সরকারের কেন বোধোদয় হলো? এরপরও এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ইতিবাচক।’
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। একই মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৮ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।
নতুন অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এই ব্যয় বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। আর মূল বাজেটের চেয়ে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি।
বিদায়ী অর্থবছরে মুস্তফা কামালের দেয়া মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।