বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যক্তি করে ছাড় নেই, হতাশ মধ্যবিত্ত

  •    
  • ৩ জুন, ২০২১ ১৮:৪৭

বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা বাদ দিয়ে বর্তমানে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বার্ষিক ৩ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে কর হারেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

আশা ছিল, করোনা মহামারির ধাক্কায় নাজেহাল মধ্যবিত্তকে আয়করে কিছুটা অন্তত ছাড় দেবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

কিন্তু বাজেটে সেই পথে হাঁটলেন না তিনি। অপরিবর্তিত রাখা হলো ব্যক্তি-শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা।

বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা বাদ দিয়ে বর্তমানে ব্যক্তি-শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বার্ষিক ৩ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে কর হারেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

করোনাকালে এমনিতেই সাধারণ মানুষের আয় কমে গছে। প্রত্যাশা ছিল, সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে আয়করে ছাড় দেবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর নতুন বাজেট ঘোষণায় হতাশ মধ্যবিত্ত।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল করোনাকালে ব্যক্তি-শ্রেণি করমুক্তসীমা কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হোক। কিন্তু এবারের বাজেটে সে দাবি পূরণ হয়নি।

বর্তমানে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করমুক্তসীমা বার্ষিক ৩ লাখ টাকা। ভারতে মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ মানুষ আয়কর দেন।

গবেষণা সংস্থা পিআরআই-এর নির্ব াহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বেড়েছে, তাতে করমুক্ত আয়ের সীমা আরও বাড়ানো উচিত। তবে এটাও ঠিক, বাংলাদেশে অনেকেরই কর দেয়ার সামর্থ্য আছে । তাদের বেশির ভাগই এখনও করের নেটে নেই। যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনতে হবে।

রাজধানীর কলাবাগানের বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। মাসিক বেতন অনুযায়ী তার করযোগ্য আয় রয়েছে। নিয়মিত সরকারকে কর পরিশোধ করেন তিনি।

দুই ছেলেমেয়েসহ চারজনের সংসার তাদের। চাকরির আয় ছাড়া আর কোনো আয় নেই। আশা ছিল, বাজেটে মধ্যবিত্ত শ্রেণির এই ব্যাংকারের জন্য সুখবর থাকবে। কিছুটা হলেও আয়করে ছাড় পাবেন।

কিন্তু হতাশ আসাদুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বেড়েছে, তাতে নির্ধারিত বেতন দিয়ে ঢাকা শহরে জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আয়করে ছাড় পেলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতাম। কিন্তু সে গুড়ে বালি।’

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, ‘চলতি অর্থবছরে ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের কর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর কারণে প্রস্তাবিত অর্থ বছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির কর দাতার জন্য কর হার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করছি।’

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই ব্যক্তি করমুক্ত সীমা কয়েক বছরের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়, যাতে করদাতা আগাম তার হিসাব সহজেই করতে পারেন।

বাংলাদেশে জোট সরকারের আমলে একবার তিন বছরের জন্য করমুক্ত সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা বাতিল করা হয়।

জনসংখ্যা অনুপাতে বাংলাদেশে ব্যক্তি করদাতার সংখ্যা খুবই কম। অথচ কর দেয়ার সার্মথ্য রয়েছে অনেকেরই।

এখন নিবন্ধিত বা টিআইএনধারীর সংখ্যা ৬১ লাখ হলেও আয়কর রিটার্ন জমা দেন মাত্র ২৫ লাখ। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩ লাখ রিটার্ন আছে যাদের আয় শূন্য। তাদের কাছ থেকে কোনো কর পায় না সরকার। ফলে নিয়মিত রিটার্ন দিচ্ছে মাত্র ২২ লাখ।

আয় অনুযায়ী বাংলাদেশে কতজনের কর দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। এনবিআর এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো জরিপ করেনি।

তবে অর্থনীতিবিদসহ আয়কর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ৩ থেকে ৪ কোটি লোকের কর দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের মোট জনগণের এক শতাংশের কিছু বেশি নিয়মিত কর দিচ্ছে।

আয়কর আইনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার করদাতার রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আয় থাকুক আর না থাকুক, বার্ষিক রিটার্ন জমা দিতেই হবে। না দিলে প্রচলিত আইনে জরিমানার বিধান রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর