জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট (প্রস্তাবিত) উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
বাজেটে আগাম কর থেকে অব্যাহতির তালিকায় আছে স্ক্র্যাপ জাহাজ। এতে খুশি এ খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এবার এই শিল্প চাঙা হবে। দাম কমবে ইস্পাতের। যার সুবিধা পাবেন মাঠপর্যায়ের গ্রাহকরা।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স ও রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সভাপতি আবু তাহের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগাম কর থেকে অব্যাহতি পেলে টনপ্রতি স্ক্র্যাপের দাম কমবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। যার প্রভাব পড়বে ইস্পাতশিল্পের ওপর।’
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে নতুন ৫ শতাংশ করারোপ ও নতুন ভ্যাট আইনের কারণে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল।
বিএসবিআরএর সভাপতি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে নতুন ৫ শতাংশ করারোপ ও নতুন ভ্যাট আইনের কারণে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি কমে গিয়েছিল। এবার আগাম কর থেকে অব্যাহতি পেলে জাহাজভাঙা শিল্পে চাঙা হবে।
জাহাজভাঙা শিল্পের ব্যবসায়ী মোতালেব ট্রেডার্সের মালিক মো. মোতালেব মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১৯ সালে নতুন ভ্যাট আইন চালু হওয়া এবং নতুন করে ৫ শতাংশ কর আরোপ এ শিল্পকে নতুন করে সংকটে ফেলেছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাসের পর অনেকে শুধু ব্যবসা টিকে থাকার জন্য জাহাজ আমদানি করেছেন। তবে এবার অগ্রিম কর থেকে অব্যাহতি পেলে এই ব্যবসায় সুদিন ফিরে আসবে।’
মূলত বাংলাদেশে এ শিল্পের ভিত রচনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে একটি ভয়াবহ সাইক্লোন। ১৯৬০ সালের সেই সাইক্লোনে গ্রিক জাহাজ এমভি আলপিন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমুদ্রতীরে অকার্যকর হয়ে পড়ে। দেশে জাহাজভাঙা শিল্পের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয় অচল হয়ে পড়া এ জাহাজটি। ক্রমেই সীতাকুণ্ড পরিণত হয় একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে। ২০১১ মাসের মার্চে সরকার জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙা ও জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণকে শিল্প ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী দেশে ২০১৫ সালে ২২১টি জাহাজ ভাঙা হয়, ২০১৬ সালে ২৫০টি, ২০১৭ সালে ২১৪টি, ২০১৮ সালে ১৯৬টি এবং ২০১৯ সালে ২৩৬টি জাহাজা ভাঙা হয়।
বিএসবিআরএর তথ্য অনুযায়ী, দেশে ইস্পাতের চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশের জোগান দেয়া হয় জাহাজভাঙা শিল্প থেকে। এই ব্যবসার আকার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।