বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আসছে আরও ৩৩ বিদ্যুৎকেন্দ্র

  •    
  • ৩ জুন, ২০২১ ১৬:৪৯

বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৭২৬ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ করেছে সরকার। এটি মোট বাজেটের সাড়ে ৪ শতাংশ।

আরও ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র আর একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে এটি ৭২৬ কোটি টাকা বেশি এবং এবারের মোট বাজেটের সাড়ে ৪ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা, যদিও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সেই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, ৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে।

তিনি বলেন, ‘১৫ হাজার ১৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিকল্পনাধীন রয়েছে। সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে বিদ্যুতের সিস্টেম লস ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ হতে কমে ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘সরকারের দূরদর্শী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেশে বিগত ১২ বছরে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ২০০৯ সালের তুলনায় বর্তমানে ৫ গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫ হাজার ২২৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।’

উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার’ কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯৯ ভাগকে বিদ্যুৎ-সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ-চাহিদা মেটাতে ১৪ হাজার ১১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে এবং ২ হাজার ৯৬১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই করা হয়েছে।’

বিদ্যুৎ খাতে নেয়া মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রামপাল কয়লাভিত্তিক মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প, মাতারবাড়ী আল্ট্রাসুপার ক্রিটিকাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বলে জানান তিনি।

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শেষে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ৭২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।’

বাজটে বক্তৃতায় দেখা গেছে, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্বারোপ করছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মোট বিদ্যুৎ-চাহিদার শতকরা ১০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে উৎপাদনের লক্ষ্যে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও বায়ুচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।’

বিদ্যুৎব্যবস্থা আধুনিকায়নে মেট্রোপলিটান এলাকার সব বিতরণ লাইন ও সাবস্টেশন ভূগর্ভস্থ করা হবে বলেও জনান তিনি। বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার কিলোমিটার এবং বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৬ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে বিদ্যুতের সঞ্চালন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও উঠে এসছে বাজেট বক্তৃতায়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জ্বালানির মোট চাহিদার একটি বড় অংশ প্রাকৃতিক গ্যাসের মাধ্যমে পূরণ হয়ে থাকে। দেশে আবিষ্কৃত ২৭টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে বর্তমানে ২০টি উৎপাদনে রয়েছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বর্তমানে বেড়ে প্রায় ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে।’

প্রাকৃতিক গ্যাসের মোট চাহিদার অবশিষ্ট অংশ এলএনজি হিসেবে আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে মোট ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। আমদানি করা এলএনজি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে পুনরায় গ্যাসে রূপান্তর করে দৈনিক গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে।’

এলএনজি সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দৈনিক ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার ল্যান্ড-বেইজড এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়ানো ও সুসংহত করতে সরকার জ্বালানি তেলের মজুত বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে দেশে জ্বালানি তেল সংরক্ষণের সক্ষমতা ছিল ৮ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিক টন, যা বর্তমানে প্রায় ১৩ দশমিক ২০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর