বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রংপুর চায় ‘বৈষম্যের’ অবসান

  •    
  • ৩ জুন, ২০২১ ১৩:০০

‘এবারের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রংপুর বিভাগে গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের বিশেষ নজরদারি এবং বিশেষ বরাদ্দ।’

বাজেটে জেলাভিত্তিক বিশেষ বরাদ্দ না থাকায় বরাবরই বৈষম্যের শিকার হয় রংপুর- এমন অভিযোগ সেখানকার ব্যবসায়ীদের। এই অঞ্চল এখনও উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে বলে তারা এবারের বাজেটে বিশেষ নজর চান।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘রংপুর বাংলাদেশের সব থেকে গরিব বিভাগ। সারা দেশে যখন গরিব মানুষ ৭ শতাংশ কমেছে, তখন রংপুর বিভাগে ৭ শতাংশ বেড়েছে। এই অবস্থায় যে বাজেট উপস্থাপিত হচ্ছে, তাতে এই এলাকার জন্য বিশেষ বরাদ্দ না থাকলে বৈষম্য দূর হবে না।’

রংপুর চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুও বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ ছাড়াও এই অঞ্চলের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া প্রয়োজন। ফোর লেনের যে কাজ শুরু হয়েছে তা দ্রুত শেষ করতে হবে। গ্যাসের অভাবে শিল্প-কারখানা হচ্ছে না। এই গ্যাস যত দ্রুত সম্ভব বগুড়া থেকে রংপুরে আনতেই হবে। তাহলে ছোট-বড় অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। দরিদ্র লোকের সংখ্যা কমে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এবারের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রংপুর বিভাগে গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের বিশেষ নজরদারি এবং বিশেষ বরাদ্দ। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্যে বরাদ্দ আরও জোরদার করা প্রয়োজন। অর্থনৈতিক জোন করা প্রয়োজন।’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহনগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘এই মুহুর্তে যেটা জরুরি, শিক্ষা, যুবসমাজ এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি খাত, ক্ষুদ্র শিল্প, তরুণ এবং নারী উদ্যোক্তাদের দিকে বিশেষ নজর দেয়া। বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে কর্মসংস্থান করতে হবে। কৃষিনির্ভর খাত তৈরি করে সেই অনুযায়ী বরাদ্দ দিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হবে।’

বাজেটে স্থান চাচ্ছেন জেলার তরুণ উদ্যোক্তারা। এমনই একজন রাকিবুল হাসান। শহরের প্রেস ক্লাব মার্কেটে তার ছোট্ট একটি কসমেটিকসের দোকান। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি, তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। বিশেষ করে আমাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। এই ঋণের সুদ হতে হবে এক থেকে দুই শতাংশ। তাহলেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’

কৃষিকে প্রাধান্য দেয়ার কথা বলছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম হাক্কানী বলেন, ‘রংপুর অঞ্চলকে আমরা কৃষির গোডাউন বলে মনে করি। এ জন্য কৃষিকেই প্রাধান্য দিতে হবে। আমে, মাছে, ধানে সব ক্ষেত্রেই সংকটে পড়ছেন এই অঞ্চলের কৃষক। তারা দাদন নিয়ে ১৯ থেকে ৬৩ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছে। ফলে এই কৃষকরা লোকসানে পড়ছেন। কোমর খাড়া করতে পারছেন না। কৃষি ঋণে তৃণমূল কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা ও সরল সুদে ঋণ দিতে হবে।’

তিনি জানান, কৃষকদের জন্য বাজেটে জেলাভিত্তিক আলাদা বাজেট বরাদ্দ দরকার। সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

কৃষি খাতে ভর্তুকির কথা বললেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোরশেদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘সার, বীজ ও সেচের দাম কমানো উচিত। শস্য বিমা চালু করতে হবে, কৃষি ঋণের সুদের হার চার শতাংশ থেকে এক বা দুই শতাংশ করতে হবে। কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য সরকারের অনলাইন বাজার সিস্টেম চালু করা প্রয়োজন।

‘আঞ্চলিক বৈষম্যের কারণে এখানে দারিদ্র্যের হার বেশি। রংপুর অঞ্চল পিছিয়ে আছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোগত দিক থেকে। এ জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন।’

এ বিভাগের আরো খবর