শুরু হলো একাদশ সংসদের ত্রয়োদ্বশ ও সরকারের চলতি মেয়াদের তৃতীয় বাজেট অধিবেশন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে দেশের ইতিহাসের ও ৫০তম বাজেট অধিবেশন এটি।
বুধবার বিকেল পাঁচটায় স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয় এ বাজেট অধিবেশন। অধিবেশনের দ্বিতীয়
দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটায় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। এটি হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের ২১তম বাজেট।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি হবে আ হ ম মুস্তফা কামালের তৃতীয় বাজেট। তার বাজেট ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সূর্বণজয়ন্তীতে বাজেটে দেশের অর্ধশতক পূর্ণ হবে।
শুরুতেই চলতি অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়ন দেন স্পিকার শিরিন শারমিন। এরপর আনা হয় শোক প্রস্তাব। এ সময় একাদশ সংসদের সদস্য আব্দুল মতিন খশরু ও আসলামুল হকের মৃত্যুতে শোক জানায় সংসদ। পাশাপাশি সাবেক সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরী, মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, গাজী আমজাদ হোসেন মিলন, খন্দকার আব্দুল মালেকসহ ১১ সাবেক সংসদ সদস্যের মৃত্যুতেও শোক জানায় জাতীয় সংসদ।
রেওয়াজ অনুযায়ী শোক প্রস্তাবের পর চলতি সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে তার জীবনের উপর আলোচনা হয় সংসদে। এরই ধারাবাহিকতায় আব্দুল মতিন খশরু ও আসলামুল হকের জীবনের উপরেও অনুষ্ঠিত হয়ে আলোচনা।
প্রতি অর্থবছরের জুন মাসে বাজেট উত্থাপন এবং ৩০ জুনের মধ্যে বাজেট পাস করা হয়। এবারও সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট পাস হবে আগামী ৩০ জুন। আর ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে ২০২১-২০২২ অর্থবছর।
এবার বাজেটের আকার হতে পারে ৬ লাখ কোটি টাকার ওপরে। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার। আর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট অর্থাৎ ১৯৭২-৭৩ সালে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা। দেশের প্রথম বাজেট উত্থাপন করেছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ।
বর্তমান অধিবেশন চলতে পারে আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত। তবে সবকিছু নির্ভর করছে কার্য উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর। এবার সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৩ কার্যদিবস চলতে পারে অধিবেশন।
আগামী বৃহস্পতিবার, ৩ জুন বাজেট উত্থাপনের ৬ জুন সকাল ১১ টায় আবার বসবে অধিবেশন। সেদিন শুরু হবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট উত্থাপন এবং আলোচনা। আলোচনা শেষে ৭ জুন পাস হবে সম্পূরক বাজেট। এরপর বিরতি দিয়ে প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নেবেন সংসদ সদস্যরা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কোভিড নেগেটিভ সনদ নিয়ে সংসদে প্রবেশ করতে হবে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। প্রতি ৭২ ঘণ্টা পর আবার নেগেটিভ সনদ মিললেই কেবল অধিবেশনে যোগদান করতে পারবেন সংসদ সদস্যরা। যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদেরও লাগবে কোভিড নেগেটিভ সনদ।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের ইতিহাসে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে আসছে সবচেয়ে বড় ঘাটতির বাজেট। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় ঘাটতি দাঁড়াচ্ছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মতো। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ছিল ৬ শতাংশ। তবে আগের ১০ বছর ধরে বাজেট ঘাটতি রাখা হচ্ছিল ৫ শতাংশের নিচে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৬ শতাংশ বা ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য হতে পারে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ।’
চলতি অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা হয়েছিল গত বছরের ১১ জুন। এরপর আলোচনা চলছিল মাত্র ৯ দিন। দেশের ইতিহাসে এটিই ছিলো সংক্ষিপ্ততম অধিবেশন।