পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে হবে, শুধু এ কথা বললেই হবে না। ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে তাদের প্রয়োজনীয় সুবিধাও দিতে হবে।
এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে করপোরেট কর কমানো। বিশেষ করে তালিকাভুক্ত ও নন তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের পার্থক্য বাড়ানো।
কোম্পানি যদি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হয়েও তালিকাভুক্ত কোম্পানির কাছাকাছি কর দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসতে চাইবে না।
পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানির সুশাসন, আর্থিক প্রতিবেদন, অগ্রগতি, অবনতি সবই বিনিয়োগাকরীদের কাছে প্রকাশ করতে হয়। এগুলো ভালো কোম্পানিগুলোর তৈরি করতে হয়। তারা চায় কর সুবিধা।
আগামী বাজেট যারা তৈরি করবেন তারা যেন অন্তত মনে রাখেন পুঁজিবাজার আছে। তাহলেই পুঁজিবাজারবান্ধব সিদ্ধান্তগুলো পাওয়া যাবে।
কালো টাকা হয়তো এবারও পুঁজিবাজারের সুযোগ দেয়া হবে। এটা দিয়ে খুব বেশি লাভ হয় বলে আমার মনে হয় না। বাজেটের আগে কিছু কালো টাকা পুঁজিবাজারে আসে। তবে সারা বছরের জন্য পুঁজিবাজার ভালো রাখতে হলে পুঁজিবাজারের সঙ্গে সরাসারি সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশি সুবিধা দিতে হবে।
পুঁজিবাজারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না দিয়ে করপোরেট কর কমানো উচিত। তাহলে কোম্পানিগুলো তাদের বিতরণযোগ্য অর্থের উপর কম হারে কর প্রদান করতে হবে।
করপোরেট করের বিষয়টিও আছে।
আগামী বাজেটে দুটি স্তরে করপোরেট কর হার কমার আভাস পাওয়া গেছে। নন-লিস্টটেড কোম্পানির বা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে সাড়ে ৩২ শতাংশ। আসন্ন বাজেটে এই হার কমিয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে।
অপরদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে সাড়ে ২৫ শতাংশ। নতুন বাজেটে তা কমিয়ে করা হচ্ছে সাড়ে ২২ শতাংশ। অর্থাৎ উভয়ক্ষেত্রে করপোরেট কর হার আড়াই শতাংশ কমানো হচ্ছে নতুন বাজেটে।
ফলে কোম্পানিগুলোর ব্যয় কম হবে, শেয়ারধারীদের বেশি হারে লভ্যাংশ দিতে পারবে। আর ভালো লভ্যাংশ পেয়ে বিনিয়োগকারীরাও নতুন বিনিয়োগ আগ্রহ হবে।
আগামী বাজেটের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে যে সুবিধা দেয়া হয় রবি ও গ্রামীণফোন এই সুবিধা পায় না। এটাও বৈষম্য তৈরি করছে।
মোবাইল অপারেটরদের লোকসান হলেও সেবা বিক্রির বিপরীতে মোট টাকার ওপর ২ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। ন্যূনতম করের কারণে রবির কার্যকর করপোরেট করহার দাঁড়ায় ৮৯ শতাংশ।
গ্রামীণফোনের আয় বেশি হওয়ায় এই করের কোনো প্রভাব পড়ে না। কিন্ত রবির ক্ষেত্রে এ জটিলতা থাকায় তাদের লভ্যাংশ প্রদান নিয়ে এত হৈ চৈ হয়েছে।
লভ্যাংশ প্রাপ্তির উপর করমুক্ত সীমা বাড়ানো উচিত। বর্তমানে যা ৫০ হাজার টাকা আছে সেটি বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা কথা বলেন আবু আহমেদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন সুমন।